ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ওয়াকারের কণ্ঠে ক্রিকেটের ডাক

প্রকাশিত: ০৬:০২, ১৩ মার্চ ২০১৬

ওয়াকারের কণ্ঠে ক্রিকেটের ডাক

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অনিশ্চয়তার অবসান হয়েছে। ইন্ডিয়ান বোর্ড (বিসিসিআই), ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের তরফ থেকে লিখিত নিরাপত্তার নিশ্চয়তা পাওয়ার পর টি২০ বিশ্বকাপে অংশ নিতে পাকিস্তান ক্রিকেট দলকে ভারতে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে সে দেশের সরকার। বহুল আলোচিত ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের ভেন্যু ধর্মশালা থেকে সরিয়ে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে নিয়ে আসা হয়েছে। বিশ্বকাপের প্রাথমিক পর্ব শুরু হয়ে গেলেও গত কয়েকদিন আলোচনার বিষয় ছিল এটিই। জট খোলায় এবার শিষ্যদের মাঠের ক্রিকেটে মন দেয়ার তাগিদ দিয়েছেন ওয়াকার ইউনুস। পাকিস্তান কোচ বলেছেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বিদায়ের দোরগোড়ায় দাঁড়ানো অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদির জন্য এটাই হতে পারে শেষ সুযোগ। ‘মাঠ ও মাঠের বাইরে ভারতের মাটিতে পাকিস্তানকে প্রতিকূল পরিবেশের মুখোমুখি হতে হবে, এটা অস্বাভাবিক কোন বিষয় নয়, যুগের পর যুগ এমনটাই হয়ে আসছে। এবারের চেয়ে অনেক বাজে পরিস্থিতির মধ্যেও আমরা ভারতে গিয়ে সফল হয়েছি। ১৯৯৯ সালের কথাই ধরা যাক, সেবার পাকিস্তান ক্রিকেট দলের বিরুদ্ধে উগ্র সংগঠনের হুমকি ছিল। সেই হুমকি মাথায় নিয়ে আমরা তিন টেস্টের দুটিতে জিতেছিলাম। আমাদের উদার ও ইতিবাচক ক্রিকেটীয় মানসিকতা নিয়ে ভারতের মাটিতে পা রাখতে হবে।’ মাঠ ও মাঠের বাইরে ভারতে পাকিস্তানীদের জন্য যে ফুলশয্যা বিছানো থাকবে না, নিজের খেলোয়াড়ী জীবনের অভিজ্ঞতা থেকেই সেটা ভাল করে জানেন ওয়াকার। শত্রুদেশে গিয়ে বৈরী পরিস্থিতির মুখোমুখি হতেই হবে। সফল হতে সেই বৈরী পরিবেশটাকেও জয় করতে হবে বলে মনে করেন পাকিস্তান কোচ। নিরাপত্তা-শঙ্কা দূর হওয়ায় দুবাই হয়ে শনিবার সন্ধ্যায় কলকাতায় পা রাখার কথা শহীদ আফ্রিদির নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান ক্রিকেট দলের। বুধবার প্রথম পর্ব (মূলত বাছাই) পেরিয়ে আসা দলের বিপক্ষে (সম্ভাব্য বাংলাদেশ) ম্যাচ দিয়ে টি২০ বিশ্বকাপ মিশন শুরু করবে পাকিস্তান। সম্প্রতি এশিয়া কাপে এই বাংলাদেশের কাছে হেরেই বিদায় নিতে হয় আফ্রিদিদের। ওয়াকার বলেন, ‘প্রথমে আমাদের হয়তো বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলতে হবে। আমরা এই ম্যাচটা উতরে যেতে চাই। কিন্তু কাজটা কঠিন। কারণ ক্রিকেটে বাংলাদেশ এখন শক্তিশালী এক দল।’ তিনদিন পর ১৯ মার্চ ইডেনেই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিপক্ষে বহুল আলোচিত ম্যাচটা খেলবে পাকিস্তান। ‘আমি জানি সাম্প্রতিককালে আমরা খুব ভাল খেলছি না। টি২০ বিশ্বকাপের চ্যালেঞ্জটা অনেক বেশি কঠিন। দুটি গ্রুপই সমান শক্তিশালী। এখানে ভাল করতে হলে আমাদের সেরা খেলাটাই খেলতে হবে। সব ভুলে মাঠে ছেলেদের সামর্থ্যরে সেরাটা দিতে হবে।’ অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদিকে নিয়েও কথা বলেছেন ওয়াকার। ক্যারিয়ার সায়াহ্নে দাঁড়ানো আফ্রিদির এটিকে শেষ সুযোগ হিসেবেই দেখছেন তিনি। সন্দেহাতীতভাবে পাকিস্তান ক্রিকেটের শেষ স্বীকৃত তারকা আফ্রিদি। নিউজিল্যান্ড সফরে ব্যর্থতা এবং এশিয়া কাপে ভরাডুবির পর তার নেতৃত্ব, এমন কি দলে জায়গা পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সংবাদ মাধ্যমে কোচ-অধিনায়কের দ্বন্দ্বের গুঞ্জন ওঠে। যদিও বিশ্বকাপের মঞ্চে ইতিবাচক থাকতে চান ওয়াকার, ‘শহীদ এখন ক্যারিয়ারের দ্বারপ্রান্তে। আমি মনে করি বড় কিছু অর্জনে টি২০ বিশ্বকাপটাই হয়তো ওর শেষ সুযোগ।’ পাক কোচের দাবি টি২০ অধিনায়ক আফ্রিদির সঙ্গে তার কোন দূরত্ব নেই, ‘দিনের শেষে সকলেই পাকিস্তানের ভাল চায়। সমর্থকরা চায় বিশ্বকাপে আমরা ভাল খেলি।’ বেশ কয়েকটি ইস্যুতে বোর্ড কর্মকর্তারা হতাশ হওয়ায় গণমাধ্যমের সঙ্গে আফ্রিদির কথা বলায় নিষেধাজ্ঞা ছিল। হয়তো এটাই আফ্রিদির ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপ! অনেকে তার উনিশ বছরের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের শেষ দেখছেন। আফ্রিদি নিজে অবশ্য দ্বিধান্বিত। বিশ্বকাপ শেষেও চালিয়ে যেতে পারেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন! আফ্রিদিকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দিতে কোচ কাজ করছেন, সংবাদ মাধ্যমের এমন খবরেরও সমালোচনা করেছেন ওয়াকার।
×