ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দাবি ভারতের নারী অধিকারকর্মী রেখা শর্মার

ধর্ষক স্বামী হলেও একই শাস্তির বিধান থাকা উচিত

প্রকাশিত: ০৩:৪৮, ১৩ মার্চ ২০১৬

ধর্ষক স্বামী হলেও একই শাস্তির বিধান থাকা উচিত

ভারতের ন্যাশনাল কমিশন ফর উইমেনের সদস্য রেখা শর্মা বৈবাহিক সম্পর্ক ধর্ষণের মতো ঘটনা জায়েজ করে না বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, আমরা ধর্মের নামে স্বামীর হাতে মেয়েদের নির্মম নির্যাতনের মুখে ঠেলে দিতে পারি না। ধর্ষণ ধর্ষণই, তা স্বামী দ্বারা হোক কিংবা অন্য কারও দ্বারাই হোক। সবক্ষেত্রে শাস্তিও এক হওয়া উচিত। স্বামী কর্তৃক ধর্ষণকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা ভারতের সংস্কৃতির সঙ্গে ‘সাযুজ্যপূর্ণ নয়’ বলে রাজ্যসভায় ভারতের নারী ও শিশু উন্নয়নমন্ত্রী মানেকা গান্ধীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রেখা শর্মা শুক্রবার টুইটারে এ মন্তব্য করেন। অনিচ্ছুক নারীকে স্বামী যৌনসম্পর্কে বাধ্য করলে তার প্রতিকারের আইন বিশ্বের অনেক দেশেই রয়েছে। এটা স্বীকার করেই মানেকা গান্ধী বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় বলেছিলেন, ‘সংস্কৃতি, ধর্মীয় বিশ্বাস, শিক্ষার অনগ্রসরতা’ ইত্যাদি কারণে ভারতের সঙ্গে এটা খাপ খায় না। এরই প্রতিক্রিয়ায় রেখা শর্মা বলেন, কোন সমস্যা ঠেকাতে আইন একটি কার্যকর পন্থা। অপরিচ্ছন্নতা নিয়ে ভারতের নাগরিকদের অনেকেই উদাসীন। কিন্তু তারাই বিদেশে কিন্তু এই ক্ষেত্রে আইন মেনে চলেন। স্বামী কর্তৃক ধর্ষণ যখন বিশ্বের অন্য দেশে অপরাধ হিসেবে স্বীকৃত তখন ভারতে তা হবে না কেন? এজন্য সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব রাখবেন বলে জানান রেখা শর্মা। তিনি আরও বলেন, আমি চাই বিষয়টি নিয়ে সবার মধ্যে আলোচনা হোক, একটা ফল বেরিয়ে আসুক। বৈবাহিক ধর্ষণকে আইনের অধীনে অপরাধ হিসেবে গণ্য করার দাবি বহুদিনের। যদিও গত বছরই সুপ্রীমকোর্ট একটি মামলার শুনানির সময় এই দাবিকে খারিজ করে দিয়েছে। শীর্ষ আদালতের মতে, পরিবারকেন্দ্রিক ভারতীয় সমাজ ব্যবস্থায় এই ধারণার সঙ্গে ভাবনা খাপ খায় না। সেই একই সুর শোনা গেল কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষেও। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হলো- বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করার কোন ইচ্ছাই তাদের আপাতত নেই। ভারতের পার্লামেন্টে একটি লিখিত আবেদনের জবাব দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী মানেকা গান্ধী বলেন, ভারতে এই ভাবনা কার্যকর করা প্রায় অসম্ভব। পৃথিবীর বহু দেশ এই সমস্যা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নিয়েছে। কিন্তু ভারতের প্রেক্ষাপটের সঙ্গে এই ভাবনা যথোপযুক্ত নয়। বিভিন্ন পর্যায়ে এ দেশে শিক্ষা, নিরক্ষরতা, দারিদ্র্য, অগণিত সামাজিক রীতিনীতি ও মূল্যবোধ, ধর্মীয় ভাবনা, মানসিকতা বিয়েকে পবিত্র একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এই প্রাতিষ্ঠানিক ভাবনার সঙ্গে ধর্মীয় সংস্কার এতটাই ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে যে, বৈবাহিক ধর্ষণের ধারণাটাই এ দেশে অলীক কল্পনা। -ওয়েবসাইট
×