ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বংশাল থানার আটক এএসআই শামীম রেজা সাসপেন্ড

নন্দীপাড়ায় বিল আদায় নিয়ে কেবল অপারেটর গুলিবিদ্ধ

প্রকাশিত: ০৬:৪৫, ১২ মার্চ ২০১৬

নন্দীপাড়ায় বিল আদায় নিয়ে কেবল অপারেটর গুলিবিদ্ধ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর খিলগাঁওয়ে কেবল অপারেটরকে গুলির অভিযোগে বংশাল থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) শামীম রেজাকে এবার সাময়িক বরখাস্ত করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এর আগে শুক্রবার সকালে খিলগাঁওয়ের নন্দীপাড়া এলাকায় বকেয়া বিল পরিশোধ কেন্দ্র করে এক কেবল অপারেটরকে গুলি করার অভিযোগে তাকে আটক করা হয়। ডিএমপির লালবাগ বিভাগের যুগ্ম-কমিশনার মফিজউদ্দিন আহমেদ বলেন, খিলগাঁওয়ের ঘটনায় এএসআই শামীম রেজাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার সকালে এএসআই শামীম রেজা কেবল অপারেটর আল আমিনকে (১৮) লক্ষ্য করে গুলি চালায়। পরে গুলিবিদ্ধ আল আমিনকে প্রথমে রাজারবাগ পুলিশ লাইনস হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ঢামেক হাসপাতালে জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ মোঃ নাসির জানান, পিঠের বাঁপাশে গুলি ঢুকে মাংসের ভেতর দিয়ে বেরিয়ে গেছে। তার জখম ততটা গুরুতর নয়। আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দিয়েছি। খিলগাঁও থনার ওসি মাইনুল হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, এ ঘটনায় বংশাল থানার এএসআই শামীম রেজাকে আটক করা হয়েছে। শামীমের কাছ থেকে পিস্তলটি জব্দ করা হয়েছে। সরকারী অস্ত্র এএসআই বাসায় নিতে পারেন কিনা- জানতে চাইলে ওসি মাইনুল হোসেন জানান, এ বিষয়ে আমি এখন কোন কথা বলব না। স্থানীয় সূত্র জানায়, নন্দীপাড়ার ৫ নম্বর সড়কের ৯ নম্বর এ্যাপার্টমেন্ট ভবনের চতুর্থ তলায় পরিবার নিয়ে থাকেন এএসআই শামীম। ওই ভবনের কেয়ারটেকার গিয়াস উদ্দিন জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হই হই শব্দ শুনে তিনি বাসা থেকে বেরিয়ে আসেন। এ সময় কেবল অপারেটর আল আমিন ছুটে এসে বলে এএসআই শামীম আড়াই শ’ টাকা বিল দিতে চায়। কিন্তু আমাদের রেট ৩০০ টাকা। তিন মাস ধরে বিল দেয় না। আমরা তার ডিশের লাইন কেটে দেব। তখন এএসআই শামীম রাগান্বিত হয়ে আল আমিনকে চড় দেয়। আল আমিনও তাকে পাল্টা ধাক্কা দেয়। এরপর ধস্তাধস্তি। একপর্যায়ে এএসআই শামীম অস্ত্র বের করে আল আমিনকে লক্ষ্য করে গুলি করে। গুলিটি আল আমিনের পিঠে লাগে। ওই ভবনের আরেক বাসিন্দা পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) এসআই নাহিদুর রহমানও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। তিনি জানান, ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে আল আমিনকে গুলি করে দেয় এএসআই শামীম। পরে ভবনের তৃতীয় তলার বাসিন্দা গোয়েন্দা পুলিশের কনস্টেবল আনোয়ার হোসেন আল আমিনকে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে বিকেল ৪টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহত আল আমিনের বাবার নাম ফুল মিয়া। গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা জেলার হোমনা থানার চন্দিপুর গ্রামে। তিনি খিলগাঁওয়ের নন্দীপাড়ার ৬ নম্বর রোডের একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন। দক্ষিণ মাদারটেকের ৭১ নম্বর ভবনের ঢাকা ইস্ট কেবল ভিশনের মালিক লুৎফর রহমানের অপারেটর হিসেবে কাজ করেন তিনি। হাসপাতালে আহত আল আমিন জানান, এএসআই শামীম কয়েক মাসের বিল দেয়নি। সকালে বকেয়া চাইতে তার বাসায় যাওয়া হয়। এ সময় এএসআই শামীম বলে, এত টাকা কেন? একপর্যায়ে লাইন কেটে দিতে বলে। নিচে এসে লাইন কেটে দেয়া হয়। এ সময় ওই পুলিশ সদস্য শামীম এসে বলে, লাইন কেটে দিয়েছিস কেন? জবাবে বলি আপনিই তো কেটে দিতে বলেছেন। তখন আমার গালে চড় দেয়।
×