ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সম্পত্তি হাতবদল করে ১৩ কোটি টাকা আত্মসাত

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ১২ মার্চ ২০১৬

সম্পত্তি হাতবদল করে ১৩ কোটি টাকা আত্মসাত

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় যশোরের উপশহর এলাকায় অবস্থিত সারথী টেক্সটাইল মিলের মালিকদের দেউলিয়া ঘোষণা করেছে আদালত। একই সাথে ঋণের বিপরীতে মর্টগেজ দেয়া জমি দেখভাল করার জন্য রিসিভার নিয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু ঋণ প্রদানকারী ব্যাংকের অগোচরে ওই মিলের সম্পত্তি হাতবদল করে ১৩ কোটি টাকা আত্মসাত করার অভিযোগ উঠেছে মিল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। আদালত কর্তৃক নিয়োগকৃত রিসিভার ওই মিল পরিদর্শনে গেলে বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায়। সম্পত্তির দায়িত্বপ্রাপ্ত রিসিভার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যারাই ভোগদখল করুক না কেন, শীঘ্রই তাদের উচ্ছেদ করা হবে। জানা গেছে, যশোর শহরের মিউনিসিপ্যাল রোডের ওয়ালিউল ইসলাম, শামসুল আলম, ওসমান আলী ও ওহিদুল আলম চার ভাই মিলে গড়ে তোলে সারথী টেক্সটাইল মিল। আশির দশকে ৩ দশমিক ২৯ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত মিলটি যশোরে প্রথম টেক্সটাইল মিল। বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক ও আইসিবি ব্যাংকের আর্থিক সহযোগিতায় এই মিলটিতে সেই সময় ৩শ’ শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়। যশোরের এমকে রোডের অগ্রণী ব্যাংক থেকে মিল কর্তৃপক্ষ ঋণ সুবিধা নেয়। শুরু থেকেই মিলটি লোকসান দেখিয়ে মাত্র কয়েক বছরের মাথায় ১৯৯১ সালে বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে মিলটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। অগ্রণী ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ না করায় বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। দীর্ঘ আইনী প্রক্রিয়া শেষে মিল কর্তৃপক্ষ ৩ দফায় ঋণ পরিশোধের সময় পান। কিন্তু তারা তা পারেনি। পরবর্তীতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ২ কোটি ৩ লাখ টাকা টাকা পরিশোধ করে ঋণ সমন্বয়ের ব্যবস্থা করলেও তা গ্রহণ করেনি মিল কর্তৃপক্ষ। অগ্রণী ব্যাংকের টাকা পরিশোধ না হওয়ায় আদালত ২০০৭ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর মিলটিকে দেউলিয়া ঘোষণা করে। ২০০৮ সালের ১৮ মার্চ আদালত অগ্রণী ব্যাংকের অনুকূলে মর্টগেজ দেয়া সম্পত্তির অনুকূলে রিসিভার নিয়োগ দেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি যশোরের অতিরিক্ত জেলা জজ-১ম আদালতের বিচারক সারথী মিলের ৩ দশমিক ২৯ একর জমির রিসিভার হিসেবে নিয়োগ দেন ঢাকার কাকরাইলের মেসার্স এ মতিন এ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যাকাউন্টসকে। প্রতিষ্ঠানটির মালিক একেএম আব্দুল মতিন গত ৫ মার্চ সারথী মিল পরিদর্শনে আসেন। এসে তিনি দেখতে পান মিল কর্তৃপক্ষ ৪ বছর আগেই মিলটি উত্তরা মটরসের কাছে সমুদয় জমি বিক্রি করে দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, দেউলিয়া ঘোষিত জমি বিক্রি অবৈধ। যশোর এমকে রোডের অগ্রণী ব্যাংকের ম্যানেজার মনোয়ার হোসেন বলেন, টাকা আদায় করতে তারা আদালতের দারস্থ হয়েছেন। আদালত মিলটিকে দেউলিয়া ঘোষণা করেছে। সেই জমি কেউ কিনতে পারে না। যারা কিনেছে, এখন দায়-দায়িত্ব তাদের। আমাদের আদালতের ওপর আস্থা আছে।
×