ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পরিবেশ ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য ক্ষতিকর কোন বিদ্যুত কেন্দ্র হবে না ॥ নসরুল

শিল্প-কারখানা অর্থনৈতিক অঞ্চলে সরিয়ে নিলে ২৪ ঘণ্টায় বিদ্যুত

প্রকাশিত: ০৫:০৪, ১২ মার্চ ২০১৬

শিল্প-কারখানা অর্থনৈতিক অঞ্চলে সরিয়ে নিলে ২৪ ঘণ্টায় বিদ্যুত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্তভাবে গড়ে ওঠা শিল্প-কারখানা সদ্য উদ্বোধন করা অর্থনৈতিক অঞ্চলে স্থানান্তরিত করলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিদ্যুত সুবিধা দেয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়ে বিদ্যুত ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেছেন, উন্নয়নের জন্য প্রচুর বিদ্যুত প্রয়োজন। আর বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের ক্ষেত্রেও আমরা পরিবেশের বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করি। বিদ্যুত শুধু উৎপাদন করলেই চলবে না, সঙ্গে সঙ্গে এর পরিবেশন ও বিপণন নিয়েও চিন্তা করতে হবে। বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের সময় পরিবেশবাদী ও পরিবেশবিদরা যা বলেন, আমরা তা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করি। বাংলাদেশ জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর অন্যতম। এ বিষয়গুলো মাথায় রেখেই আমরা বিদ্যুত উৎপাদনে যাচ্ছি। এমন কোন পাওয়ার প্ল্যান্ট তৈরি করা হবে না, যা পরিবেশ ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য ক্ষতিকর। তবে উন্নয়নের জন্য পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন করতেই হবে। শুক্রবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী ‘৭ম আন্তর্জাতিক বাংলাদেশ ইনোভেশন এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এক্সপো ও গ্রীন সামিট-২০১৬’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। নবায়নযোগ্য প্রাকৃতিক শক্তি, কার্বন নিরপেক্ষ পরিবেশ, দিনের আলোর সঠিক ব্যবহার, বায়ু চলাচল নিয়ন্ত্রণ, বৃষ্টির পানি পুনর্ব্যবহার বা দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যশৈলীর পরিকল্পিত শিল্পায়ন ও নগরায়ন উন্নয়নের লক্ষ্যে এক্সপোনেন্ট এক্সিবিশনের উদ্যোগে ইউরো-বাংলা গ্লাসের সহায়তায় এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। ১৩ মার্চ পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রদর্শনী সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এ সময় প্রতিমন্ত্রী বলেন, গাজীপুরে গেলেই দেখা যায় এখানে সেখানে অপরিকল্পিতভাবে ফ্যাক্টরি গড়ে উঠছে। এসব ফ্যাক্টরির অধিকাংশই চলে গ্যাসভিক্তিক বিদ্যুতের মাধ্যমে, ফলে উৎপাদন ব্যাহত হয়। সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে উদ্বোধন করা অর্থনৈতিক শিল্পাঞ্চলে এসব ফ্যাক্টরি স্থানান্তর করা হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হবে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সবুজের সঙ্গেই ছিল। কিন্তু হারিয়ে যাওয়া সবুজ পুনরুদ্ধারে নতুন করে কাজ শুরু করতে হয়েছে। নতুন করে নগর ও আবাসনের পরিকল্পনা করতে হচ্ছে। সব কিছুই সবুজ উদ্ধারে। বিশ্ববাসী এখন গ্রীন গ্রিড এলায়েন্স নিয়ে ভাবছে। সাহারা মরুভূমি থেকেও বিদ্যুত উৎপাদনের চিন্তা রয়েছে। প্রতি সেকেন্ডে প্রযুক্তি পরিবর্তন হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, টেকনোলজি দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। হয়ত দেখা যাবে আগামী ১৫ বছরে সাহারা মরুভূমি থেকেও বিদ্যুত উৎপাদন হবে। আয়োজক প্রতিষ্ঠান এক্সিবিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশেদুল হক বলেন, বর্তমান সময়ে উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক, সবুজ ও রূপান্তরিত শিল্প প্রযুক্তির সঙ্গে বাংলাদেশ ও বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ীদের পরিচিত হওয়া সময়ের দাবি। পরিবেশবান্ধব সবুজ শিল্পায়নের মাধ্যমে শুধু পরিবেশে বিপর্যয় রোধই নয় বরং আমরা দীর্ঘস্থায়ী ও লাভজনক বিনিয়োগের সুযোগ পেতে পারি। এবারের প্রদর্শনীতে যুক্তরাষ্ট্র, কোরিয়া, চীন, সিঙ্গাপুর, ভারত, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশসহ ১৩টি দেশের ১৩০টি প্রতিষ্ঠান ২২০টি স্টলে বিদ্যুত সাশ্রয়ী ইন্ডাস্ট্র্রিয়াল বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশ, এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেম, পরিবেশবান্ধব বিল্ডিং নির্মাণ যন্ত্রাংশ, অফিস ইন্টেরিয়র, হিট কন্ট্রোল প্রযুক্তি ও কম্পিউটার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত স্বয়ংক্রিয় অগ্নিনির্বাপণ ও বিল্ডিং অটোমেশনসহ বিভিন্ন শিল্পের উদ্ভাবিত আধুনিক মেশিনারিজ ও সেবা প্রদর্শন করছে। আয়োজক সংগঠনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশেদুল হক ও অনন্ত আহমেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (স্রেডা) চেয়ারম্যান মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম সিকদার, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ নওশাদ আলী চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন-বাংলাদেশের সভাপতি প্রকৌশলী মোঃ কবির আহমেদ ভুঁইয়া ও ইউরো-বাংলা গ্লাস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মতিউর রহমান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে প্রতিমন্ত্রী ও আগত অতিথিরা বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখার পর সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য প্রদর্শনী উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।
×