ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি এড়াবেন কিভাবে

সম্প্রতি দেশে ডেবিট কার্ড স্কিমিং জালিয়াতির বড় ঘটনা ঘটেছে। এক বিদেশী বাটপার ধরা পড়লেও, এভাবে সহজে টাকা কামানো যায়, এ বিষয়টি আরও অনেক চোর-বাটপারের নজরে এসে গেছে, কাজেই এ ঘটনা ঘটবেই। এ কারণে ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড প্রযুক্তি সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড স্কিমিং কী ॥ ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডের পেছনে একটা ম্যাগনেটিক স্ট্রিপ থাকে কালো বা খয়েরি রঙের। সেখানে কার্ডের নম্বর থেকে শুরু করে অন্য তথ্য ভরা থাকে। আপনি যখন এটিএম-এ কার্ড ঢোকান কিংবা দোকানে সোয়াইপ করেন, তখন কার্ড রিডার সেই স্ট্রিপ থেকে কার্ডের তথ্য পায়। এই তথ্যটুকু যদি কারও হাতে চলে যায়, তিনি কিন্তু চাইলেই আপনার কার্ডের একটি ক্লোন বা কপি বানিয়ে ফেলতে পারবেন, এরপর সেটি দিয়ে আপনার ব্যাংক এ্যাকাউন্ট বা ক্রেডিট কার্ডে চার্জ করতে পারবেন। অপরাধীরা এই সুযোগটাই নেন। এটিএমর কার্ড ঢোকানোর জায়গাটায় তারা অতিরিক্ত একটি যন্ত্রাংশ লাগিয়ে দেন। সেটার কাজ হলো, মেশিনে ঢোকার আগে কার্ডের ম্যাগনেটিক স্ট্রিপটা পড়ে নেয়া, আর সেই তথ্য অপরাধীর কাছে পাঠানো। এই যন্ত্রটিকে বলা হয় স্কিমার। আবার অনেক সময় পোর্টেবল স্কিমার পাওয়া যায়। রেস্টুরেন্টে খেয়ে ওয়েটারের হাতে কার্ড দিলে আড়ালে গিয়ে এক সেকেণ্ডের মধ্যেই কিন্তু আপনার কার্ড স্কিমার দিয়ে কপি করে নেয়া যায়। এরপর কার্ডের তথ্যগুলো ব্ল্যাংক একটি কার্ডে ঢোকানো হয়, ফলে সেটি কার্যত আপনার কার্ডের কপি হয়ে যায়। ডেবিট কার্ডের ক্ষেত্রে পিন সংখ্যাটি পেতে হলে আরেক ধাপ বেশি করতে হয়, অনেক সময় এটিএমের কি-বোর্ডের উপরে আলগা নকল কি-বোর্ড লাগানো হয়। অথবা কি-বোর্ডের জায়গাটি দেখা যায়, এমন একটি জায়গায় গোপন ক্যামেরা বসিয়ে যান অপরাধীরা। এভাবেই আপনার পিন সংখ্যাটি পড়ে ফেলতে পারে। স্কিমিংয়ের বাটপারিটা পশ্চিমা দুনিয়াতে বহুদিন ধরেই হয়ে আসছে। একটু সাবধান হলেই এটি এড়ানো যায়। কিভাবে জালিয়াতি এড়াবেন ॥ এটিএম বুথে কার্ড ঢোকাবার আগে দেখে নিন, কার্ড ঢোকানোর জায়গাটি কী আলগা বা আলাদা লাগছে কিনা। সেটি কী অস্বাভাবিক বা বেঢপ ধরনের, মনে হচ্ছে কী এটি পরে লাগানো হয়েছে? দরকার হলে হালকা টান দিয়ে দেখুন সেটি আলগা নাকি। পিন এন্টার করার সময় কি- বোর্ডটি আলগা নাকি দেখে নিন। পিন এন্টার করার সময় কোন কি চাপছেন সেটি অন্য হাত দিয়ে ঢেকে রাখুন। রেস্টুরেন্ট বা অন্যত্র ওয়েটারের হাতে নিশ্চিন্তে কার্ড দিয়ে দেবেন না। সম্ভব হলে কাউন্টারে গিয়ে নিজের চোখের সামনে থাকা অবস্থায় বিল দিন। রেস্টুরেন্ট যত নামী-দামীই হোক না কেন, বিশ্বাস করবেন না। স্কিমিং এখন বেশ লো-টেক সাইবার ক্রাইম। তবে বাংলাদেশে এটি সম্পর্কে অনেকেরই ধারণা নেই বলে পিটার নামে ওই বিদেশি প্রতারক এর সুযোগ নিয়েছেন। এবার মাঠে নামবেন দেশী প্রতারকরাও। কাজেই সময় থাকতে সাবধান হওয়া প্রয়োজন। -ড. রাগিব হাসান, বাংলা নিউজের সৌজন্যে।