ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

চাঁপাইয়ের মহারাজপুরে সাড়ে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে আমবাজার

প্রকাশিত: ০৬:২৯, ১১ মার্চ ২০১৬

চাঁপাইয়ের মহারাজপুরে সাড়ে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে আমবাজার

ডি. এম. তালেবুন নবী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ॥ শেষ পর্যন্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জে একটি অত্যাধুনিক ডিজিটাল ‘আমবাজার’ নির্মাণের প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। তবে এ আমবাজার জেলা শহরের মধ্যে নির্মাণ না হয়ে শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর বীরশ্রেষ্ঠ সেতুর বারোঘরিয়া অংশের কাছাকাছি চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ সড়কের মহারাজপুর এলাকায় নির্মাণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই সাড়ে তিন কোটি টাকার বরাদ্দ মঞ্জুর করা হয়েছে। এটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত একটি প্রকল্প, যা জেলা শহরের তিন কিলোমিটারের মধ্যে বিশাল আমবাগানের মধ্যে বাজার নির্মাণ করা হবে। সদর আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য জনকণ্ঠকে জানান, তারা আধুনিক আমবাজারটি প্রথমদিকে জেলা শহরের মধ্যে নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু নানান কৃত্রিম সঙ্কট ও ব্যক্তি বিশেষের অসহযোগিতার কারণে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে স্থান নির্বাচন করা হয়েছে মহারাজপুর এলাকায়। দীর্ঘদিনের এ দাবিকে সম্মান দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রীর একান্ত আগ্রহে ‘আমবাজারটি’ নির্মাণ করা হবে, যা দেশের সর্ববৃহত, সর্বাধুনিক ডিজিটাল আদলে নির্মাণ করা হবে। এ আমবাজারে আম ব্যবসায়ীদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকাসহ থাকবে বড় ধরনের নিরাপত্তা। কারণ বাহিরের ব্যবসায়ী, পাইকার, আড়তদারদের কোটি কোটি টাকা প্রতিদিন লেনদেন হবে। বর্তমান সরকারের আমলে বিদেশে আম রফতানি শুরু হয়েছে। তা ধরে রাখা ও সম্প্রসারণে এ বাজার হতে তা নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এমনকি আমের শ্রেণীভেদ পৃথকীকরণে থাকবে আধুনিক ব্যবস্থা। এছাড়াও পরবর্তীতে আম সংরক্ষণের সর্ববৃহত ও আধুনিক প্রকৌশলগত সুবিধা সৃষ্টি করা হবে এখান থেকে বলে জানা গেছে। এমনকি এই বাজর সংশ্লিষ্ট সংলগ্ন এলাকা থেকে সারাবছর আম সরবরাহ করা যায়Ñ এমন অবস্থার ব্যবস্থাও থাকবে। আম সংশ্লিষ্ট সব ধরনের প্রক্রিয়াজাত কারখানার ব্যবস্থাও পরবর্তীতে ফেজ ধরে প্রতিষ্ঠা করা হবে। এমনকি বিদেশী ও দেশী শিল্প উদ্যোক্তাদের শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার আহ্বানসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টিতেও সহযোগিতা দেবে এ আমবাজার। খ-কালীন হলেও এখানে ভবিষ্যতে আমের উন্নয়নে আম কর্তৃপক্ষ গঠন করাও হতে পারে বলে আভাস পাওয়া গেছে। মূলত চাঁপাইনবাবগঞ্জ সংলগ্ন বারোঘরিয়া ও মহরাজপুর এলাকার পুরোটা বিভিন্ন উন্নতজাতের আমবাগানের নিচে অবস্থিত। বিধায় আম সম্পৃক্ত যে কোন ধরনের সহযোগিতা দিতে পারবে এই দুটি ইউনিয়ন। তাই এসব কিছু বিবেচনার মধ্যে এনেই মহারাজপুর এলাকায় আমবাজার নির্মাণের প্রকল্প সরকার হাতে নিয়েছে। খুব শীঘ্রই নানান ধরনের অবকাঠামো নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করা হবে বলে জানা গেছে। সব মিলিয়ে এ ধরনের একটি আমবাজার নির্মাণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বেশি আগ্রহী হওয়ার কারণেই প্রাথমিকভাবে সাড়ে তিন কোটি টাকার প্রাথমিক বরাদ্দ দিয়েছে। সামনের যে কোন একনেক বৈঠকে সাড়ে তিন কোটি টাকার বাইরে বড় অংকের বরাদ্দ মঞ্জুর করতে পারেন বলে স্থানীয় এমপি নিশ্চিত করেছেন। সামনের আম মৌসুমে মহারাজপুর আমবাজারের প্রাথমিক যাত্রা শুরু ও আম কেনা-বেচা শুরু হবে। কানসাট, রাজশাহীর পুঠিয়াসহ উত্তরাঞ্চলের প্রায় অর্ধ শতাধিক বড় বড় আমবাজার মহরাজপুর সরকারী আমবাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে ব্যবসা করতে পারবে। পরবর্তীতে রংপুর, দিনাজপুর ও বৃহত্তম কৃষ্টিয়ার আমবাজারগুলোতে মহারাজপুর সরকারী আমবাজারের সঙ্গে যোগাযোগ ও আম বাজারজাত ও রফতানিতে সহযোগিতা দেবে এমনটাই জানা গেছে।
×