ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

হারলেও ভারতে ভাল খেলার অনুপ্রেরণা পেয়ে গেছে প্রোটিয়ারা

সিরিজ জিতে আত্মবিশ্বাসী অস্ট্রেলিয়া

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ১১ মার্চ ২০১৬

সিরিজ জিতে আত্মবিশ্বাসী অস্ট্রেলিয়া

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দারুণ একটি সিরিজ গেল। টি২০ বিশ্বকাপ অভিযানে যাওয়ার আগে দু’দলের জন্যই বেশ ভাল অনুশীলন হয়েছে ক্ষুদ্র ফরমেটের ক্রিকেটে। অবশ্য মঙ্গলবার থেকে প্রাথমিক রাউন্ডের খেলা শুরু হয়ে গেছে। তবে দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ার জন্য সময় আছে আরও। সরাসরি সুপার টেনে খেলবে দু’দল। সুপার টেন পর্ব শুরু ১৫ মার্চ। অস্ট্রেলিয়ার শুরু ১৮ মার্চ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে। আর দক্ষিণ আফ্রিকার অভিযান শুরু একই দিনে ইংল্যান্ডের সঙ্গে। উভয়দলই সময়টা কাজে লাগিয়ে নিজেদের মধ্যে খেলেছে তিন ম্যাচের টি২০ সিরিজ। স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা অবশ্য ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হেরে গেছে। বুধবার রাতে কেপটাউনে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি২০ ম্যাচেও হয়েছে ব্যাটসম্যানদের লড়াই। সেই লড়াইয়ে ৬ উইকেটে জিতে গেছে সফরকারী অসিরা। তবে সিরিজ হারলেও ভাল খেলেছে দল, এ কারণেই প্রোটিয়া অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিস মনে করছেন ভারতের মাটিতে টি২০ বিশ্বকাপে ভাল করবে তার দল। আর সিরিজ জয়ে দারুণ উচ্ছ্বসিত অসি অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ বিশ্বকাপে দারুণ কিছু করতে আত্মবিশ্বাসী। টি২০ সিরিজের প্রথম দুটিতে ছিল রানের বন্যা। ব্যাটসম্যানরা দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন। দু’দলের মধ্যে লড়াইটা হয়েছে মূলত ব্যাটিংয়ের। তৃতীয় ম্যাচেও সেটা থাকল। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে টস জিতে প্রথম ব্যাট হাতে নেয় স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা। উদ্বোধনী জুটি উড়ন্ত সূচনা দেয়। ৪ ওভারেই উঠে আসে ৪৭ রান। সে সময়েই কুইন্টন ডি কক ১৩ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ২১ রানে বিদায় নেন। তবে দারুণ খেলছিলেন হাশিম আমলা। অধিনায়ক প্লেসিস এসে তেমন স্ট্রাইকই পাচ্ছিলেন না আমলার দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের কারণে। দ্বিতীয় উইকেটে আরও ২৭ রান আসে যার মধ্যে প্লেসিসের অবদান মাত্র ৪! আমলাকে থামানো যায়নি। ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি হাঁকিয়ে প্রথম শতকের দিকেও এগিয়ে যান তিনি। তবে তার সঙ্গে বেশিক্ষণ কেউ থাকতে পারেননি। আর অসি বোলাররাও কিছুটা নিয়ন্ত্রিত বোলিং করে। শেষদিকে ডেভিড মিলার এসে ১৬ বলে ২ চার ও ২ ছক্কায় ৩০ রান করে রান কিছুটা বাড়িয়ে নেন। আমলা শতক বঞ্চিত হন ৩ রানের জন্য। তিনি ৬২ বলে ৮ চার ও ৪ ছক্কায় ক্যারিয়ারসেরা ৯৭ রান করে অপরাজিত থাকেন। ৪ উইকেটে ১৭৮ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ পায় প্রোটিয়ারা। দুটি উইকেট নেন নাথান কুল্টার নিল। জবাব দিতে নেমে শুরুতেই ম্যাচের ভাগ্য নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয় অসিরা। উসমান খাজা ও শেন ওয়াটসন ৮ ওভারেই ৭৬ রানের জুটি গড়েন। নবম ওভারে ওয়াটসন ২৭ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৪২ রানে এবং খাজা ২৫ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৩৮ রান করে সাজঘরে ফেরেন। স্পিনার ইমরান তাহিরের জোড়া আঘাতে নিজেদের ফিরে পায় প্রোটিয়ারা। কিন্তু অধিনায়ক স্মিথ এসে ঝড় তোলেন। তাকে দারুণ সঙ্গ দেন ডেভিড ওয়ার্নার। তৃতীয় উইকেটে আসে আরও ৭৯ রান। আর এতেই জয়ের একেবারে কাছে চলে যায় অসিরা। ওয়ার্নার ২৭ বলে ৩ চারে ৩৩ রান করে সাজঘরে ফেরেন। আর স্মিথ যখন আউট হন তখন মাত্র ১০ রান দূরে অসিরা বিজয় থেকে। স্মিথ ২৬ বলে ২ চার ও ২ ছক্কায় ৪৪ রান করেন। ১৯.২ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৮১ রান তুলে জয় ছিনিয়ে নেয় অস্ট্রেলিয়া। টি২০ বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে এমন একটি সিরিজ জয় দলকে বেশ উজ্জীবিত রাখবে এবং অনুপ্রাণিত করবে। আর শক্ত প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে জয়টা আসার কারণে আরও আত্মবিশ্বাসের যোগান হবে সেটা। এ বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক স্মিথ বলেন, ‘এ জয়টা আমাদের জন্য অনেক কার্যকর ভূমিকা রাখবে বিশ্বকাপে। কারণ সবাই খুব ভাল করেছে। এটা আত্মবিশ্বাস যোগাবে।’ অবশ্য সংবাদ সম্মেলনে স্মিথ আসেননি। খাজা এসেছিলেন। তিনি দল নিয়ে বলেন, ‘প্রথম ম্যাচ হেরে টানা দুই ম্যাচ জিতে যাওয়া খুবই চমৎকার বিষয়। যেহেতু বিশ্বকাপ আসছে এটা অনেক ভাল হয়েছে দলের জন্য। আমরা সবার ওপর আস্থা রাখতে পারি না। টপঅর্ডারে থাকা খেলোয়াড়দের কাছ থেকে বেশির ভাগ রান আসুক এটাই চাই আমরা। সেটা যদি না ঘটে সেক্ষেত্রে আমাদের বুঝতে হবে আরও ভাল কেউ আছে জায়গাটা নেয়ার জন্য। আমাদের অভিজ্ঞ কিছু খেলোয়াড় আছেন দলে। আশা করছি তারা এখানকার মতোই বিশ্বকাপেও দারুণ কিছু করতে পারবেন।’ ঘরের মাটিতে সিরিজ হারের পর দারুণ হতাশ প্রোটিয়া অধিনায়ক প্লেসিস। তবে দল ভাল খেলেছে সেজন্য বিশ্বাস রাখছেন বিশ্বকাপে ভাল কিছুই হবে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের হাতে আরও কিছু সময় আছে। এর মধ্যে আমাদের নজর দিতে হবে ঠিক কোন জায়গাগুলোতে ভুল করেছি। অস্ট্রেলিয়াকে কৃতিত্ব দিতেই হয়। আমরা যেটাকে অনেক ভাল স্কোর মনে করেছিলাম সেটিকে তাড়া করে পেরিয়ে গেছে তারা। এ ধরনের ম্যাচে শুধু তখনই জেতা সম্ভব যখন প্রতিপক্ষের উইকেট নিতে পারবেন এবং রান তোলাকে কমিয়ে দিতে পারবেন। কিন্তু সেটা আমরা পারিনি। তবে আমাদের দলটি উপমহাদেশে খুব ভাল ফলাফল করেছে অতীতে। আর এখনও ক্রিকেটাররা খুব ভাল একটা সিরিজ খেলেছে। তাই আমি বিশ্বকাপে ভাল করতে আত্মবিশ্বাসী। কিন্তু প্রথম খেলার আগে আমাদের প্রচুর কাজ করতে হবে। সঙ্কটময় মুহূর্তে আমাদের মৌলিক বিষয়গুলো সবসময়ই সমস্যায় ফেলে। সেসব নিয়ে কাজ করতে হবে।’
×