ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

যুদ্ধাপরাধী বিচার

শরীয়তপুরের সোলায়মান ও ইদ্রিসের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি ৩ এপ্রিল

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ১১ মার্চ ২০১৬

শরীয়তপুরের সোলায়মান ও ইদ্রিসের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি ৩ এপ্রিল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের চার অভিযোগে শরীয়তপুরের দুই রাজাকার সোলায়মান মোল্লা (৮৪) ও ইদ্রিস আলী সরদার ওরফে গাজী ইদ্রিস (৬৭)-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানির জন্য ৩ এপ্রিল দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। বিচারপতি মোঃ শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে দুই সদস্য বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আদেশ প্রদান করেছেন। এ সময় ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউটর হৃষিকেশ সাহা উপস্থিত ছিলেন। শরীয়তপুরের দুই রাজাকারের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করার পর তা প্রসিকিউশনের কাছে দাখিল করা হয়েছে। শরীয়তপুরের দুই রাজাকার হলেন জেলার পালং উপজেলার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাশিপুর মুসলিমপাড়ার মৃত চান মোল্লার ছেলে সোলায়মান মোল্লা (৮৪) ও একই থানার মাহমুদপুরের মৃত হাকিম আলী সরদারের ছেলে ইদ্রিস আলী সরদার ওরফে গাজী ইদ্রিস (৬৭)। গত ১৫ জুন সোলায়মান মোল্লাকে আটক করে ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। ইদ্রিস আলী এখনও পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেফতারের জন্য দুটি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হওয়ায় মামলায় ২৮ জনকে সাক্ষী ও সিজার লিস্টে আরও ৩ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। এতে সাত খ-ে ৮৫২ পাতার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনে দাখিল করা হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ৪টি অভিযোগ আনা হয়েছে। সেগুলো হলো- প্রথম নম্বর অভিযোগ : ১৯৭১ সালের ২২ মে, আসামিরা পাকিস্তান দখলদার সেনাবাহিনীর ১০০ থেকে দেড় শ’ জন সদস্যসহ শরীয়তপুর জেলার পালং থানা এলাকায় কয়েকটি গ্রামে হামলা চালিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের কৃষক আব্দুস সামাদসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রায় ২০০ মানুষকে গুলি করে হত্যা ও বাড়ির মালামাল লুট করে। দ্বিতীয় অভিযোগ : ২৬ মে, ১৯৭১ সালে জেলার পালং থানার মালোপাড়া ও রুদ্রকর গ্রামে হামলা চালিয়ে মঠের পুরোহিতকে গুলি করে হত্যা করে ও গ্রামগুলো থেকে মালামাল লুট এবং আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। মালোপাড়া থেকে ৩০/৪৫ জন মহিলা ও পুরুষকে ধরে মাদারীপুর পাকিস্তান আর্মি ক্যাম্পে নিয়ে ৩ দিন আটকে রেখে মহিলাদের ধর্ষণ করে ছেড়ে দেয়। কিন্তু পুরুষদের গুলি করে হত্যা করে। তৃতীয় অভিযোগ : জুন মাসে একই থানার শৈণেন্দ্র কৃষ্ণ পালের বাড়িতে হামলা চালিয়ে দুজনকে হত্যা করে ও হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের নির্যাতন করে বেওনেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে। চতুর্থ অভিযোগ : ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত আসামিরা দখলদার বাহিনীর সহায়তায় এলাকায় হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতনসহ বিভিন্ন অপরাধ করে। এ সময় মানবতাবিরোধী অপরাধ করার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ভয়ভীতি ও আতঙ্কের সৃষ্টি করে পালং থানার এক থেকে দেড় হাজার মানুষকে দেশত্যাগ করে ভারতের শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় গ্রহণে বাধ্য করে।
×