ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সুন্দরবনে বন্দুকযুদ্ধে চার দস্যু নিহত, অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ১১ মার্চ ২০১৬

সুন্দরবনে বন্দুকযুদ্ধে চার দস্যু নিহত, অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বাগেরহাটের শরণখোলা রেঞ্জে র‌্যাব ও কোস্টগার্ডের যৌথবাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে চার বনদস্যু নিহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে কচিখালী অভয়ারণ্যের শুকপাড়া চান্দেশ্বর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ঘটনাস্থল ও আশপাশে তল্লাশি চালিয়ে দস্যুদের ব্যবহৃত দেশী-বিদেশী ১৮টি আগ্নেয়াস্ত্র ও সাড়ে ৪শ’ রাউন্ড তাজা গুলি, ৭টি ধারালো অস্ত্র, দস্যুদের ব্যবহৃত বিভিন্ন মালামাল ও রসদ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত দস্যুরা হলো, নয়ন বাহিনীর প্রধান মনিরুল ইসলাম ওরফে নয়ন (৩৫) এবং তার বাহিনীর সদস্য এনামুল (৩২), গিয়াস (২৫) ও হাসান (২০)। বাহিনীপ্রধান নয়নের বাড়ি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলায় এবং বাকি তিন জনের বাড়ি চট্টগ্রাম। র‌্যাব, কোস্টগার্ড ও পুলিশ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এদিকে, কুখ্যাত ৪ বনদস্যু নিহত ও বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় জেলে-বাওয়ালীরা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তারা সশস্ত্র দস্যুদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাদের আটকের দাবি জানিয়েছেন। বরিশাল র‌্যাব-৮ এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফরিদুল আলম জানান, বনদস্যু নয়ন বাহিনী ১০-১২ দিন আগে ১৯ জেলেকে মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণ করে। ওই ১৯ জনের মধ্য থেকে এক জেলে মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়ে অপহরণের বিষয়টি র‌্যাবকে জানান। ওই জেলের মাধ্যমে জিম্মি জেলে ও দস্যুদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে গত ৮ মার্চ র‌্যাব এবং কোস্টগার্ড যৌথ অভিযান শুরু করে। র‌্যাব-৮ এর উপ-অধিনায়ক মেজর আদনান কবির ও ভোলা কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের ক্যাপ্টেন আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা সকাল সাড়ে ৬টার দিকে কচিখালী অভয়ারণ্য কেন্দ্র ও চান্দেশ্বরের মাঝামাঝি শুকপাড়া এলাকা পৌঁছায়। দস্যুরা যৌথ বাহিনীর সদস্যদের দেখতে পেয়ে বনের ভেতর থেকে আকস্মিকভাবে গুলিবর্ষণ করতে থাকে। এ সময় যৌথ বাহিনীও পাল্টা গুলি চালায়। সকাল সোয়া ৭টা পর্যন্ত প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা ধরে চলে এ বন্দুকযুদ্ধ। একপর্যায়ে যৌথবাহিনীর গুলির মুখে টিকতে না পেয়ে পিছু হটে দস্যুরা বনে পালিয়ে যায়। যুদ্ধবিরতির পর ঘটনাস্থল তল্লাশি চালিয়ে চার দস্যুর গুলিবিদ্ধ লাশ, ৪টি একনলা বন্দুক, ৪টি দোনলা বন্দুক, ৪টি কাটা রাইফেল, ২টি টুটুবোর, ৬টি ওয়ান শুটার, ৭টি ধারালো অস্ত্র, এবং সাড়ে ৪শ’ রাউন্ড গুলি ও ৩টি মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়। র‌্যাব জানায়, দস্যুদের লাশ ও অস্ত্রশস্ত্র শরণখোলা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। অপহৃত জেলেদের উদ্ধার ও দস্যু দমনে যৌথ বাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে। শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শাহ আলম মিয়া জানান, দস্যুদের লাশ ও অস্ত্রশস্ত্র থানায় হস্তান্তর করেছে। এ ঘটনায় র‌্যাবের পক্ষ থেকে ডিএডি আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে দুটি মামলা দায়ের করেছেন। এর আগে গত ৩১ জানুয়ারি পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের চরাপুটির খাল এলাকায় র‌্যাব-৮ এর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে জলদস্যু মশিউর রহমান (৩৫) নিহত হয়েছিল। সে সময় জলস্যুদের ব্যবহৃত ১১টি দেশী-বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র ও ৪৫০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া গত ২৮ ডিসেম্বর সকালে সুন্দরবনের তাম্বলবুনিয়া এলাকায় র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে জলদস্যু কাশেম বাহিনীর প্রধান কাশেম ওরফে আকাশ ও তার সেকেন্ড ইন কমান্ড ফরিদ ম্যাইজা নিহত হয়। ওই সময় র‌্যাব বনদস্যুদের ব্যবহৃত ১৭টি আগ্নেয়ান্ত্র ও ৪৫০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছিল।
×