ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

পায়রায় বিদ্যুতকেন্দ্র

প্রকাশিত: ০৪:০০, ১১ মার্চ ২০১৬

পায়রায় বিদ্যুতকেন্দ্র

পটুয়াখালীর পায়রা বন্দরে সরকার ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাবিশিষ্ট আরও একটি বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মাণ করতে যাচ্ছে। বিদ্যুতকেন্দ্রটি নির্মাণ করবে রুরাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (আরপিসিএল) এবং নরিনকো ইন্টারন্যাশনাল চায়না। আরপিসিএলের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনসহ প্রকল্পের জন্য ৯১৮ একর জমি অধিগ্রহণের জন্য বলা হয়েছে জেলা প্রশাসনকে। নির্মাণ ব্যয়ের ৩০ শতাংশ করে অর্থ দেবে বাংলাদেশ ও চায়না এবং বাকি অর্থ পাওয়া যাবে বৈদেশিক সহায়তা থেকে। মালিকানার শর্ত ৫০:৫০। কেন্দ্রটি নির্মাণে অনুসরণ করা হবে রামপালের প্রক্রিয়া। নরিনকোর কয়লাচালিত বিদ্যুতকেন্দ্র পরিচালনায় অভিজ্ঞতা রয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ১৫ মার্চ এ বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা । এখানে উল্লেখ করা আবশ্যক যে, পটুয়াখালীতে নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি একটি কয়লাচালিত এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মাণ করছে। বিদ্যুত বিভাগ দেশের প্রতিটি সরকারী কোম্পানিকে কয়লাচালিত বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মাণের লক্ষ্য নির্ধারণ করে দিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে পটুয়াখালীতে নর্থওয়েস্টের সঙ্গে আরপিসিএল এবং আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশনকে তিনটি ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মাণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। দায়িত্ব গ্রহণের পর বর্তমান সরকারের অগ্রাধিকারের তালিকায় ছিল দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নসহ ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটানোর জন্য বিদ্যুত সমস্যার সমাধান। এই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সরকার ২০১৬ সাল নাগাদ ১৬ হাজার মেগাওয়াট, ২০২৪ সাল নাগাদ ২৪ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৩০ সাল নাগাদ ৪০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। সরকার তার উদ্দেশ্য পূরণে অনেকটাই সফল হয়েছে। বর্তমানে দেশে প্রায় ১২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে এবং এর সুফল পাচ্ছে ৭০ শতাংশ মানুষ। আগামী ২০২১ সালের মধ্যে সরকার ঘরে ঘরে বিদ্যুত পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর। পাশাপাশি সরকার দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করে শিল্পোৎপাদনেও নতুন বিদ্যুত সংযোগ দিতে সমধিক আগ্রহী। এর জন্য নতুন ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা হবে। বিনিয়োগ ও শিল্পে উৎপাদন বাড়ানোর অন্যতম উদ্দেশ্য হলো বিপুল কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ দেশকে নিম্ন মধ্য আয়ের দেশ থেকে মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত করে তোলা। সরকার, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিদ্যুত বিভাগ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে যেভাবে অগ্রসর হচ্ছে তাতে অনেকটাই সফল হবে বলে আশা করা যায়। সঙ্গত কারণেই সরকার যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মাণের ওপর সবিশেষ জোর দিয়েছে, এটিও প্রশংসার যোগ্য। বর্তমান বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেশ কমলেও আমদানি করতে হয় বিধায় এটি নিঃসন্দেহে ব্যয়বহুল। সে তুলনায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্র ব্যয়সাশ্রয়ী, সহজলভ্য ও সুলভ। আপাতত আমদানিকৃত কয়লা দিয়ে চাহিদা মেটানো হলেও বড়পুকুরিয়া ও ফুলবাড়ির কয়লা উত্তোলন করে ব্যবহার করা হলে উৎপাদন খরচ আরও কমে আসবে। পরিবেশের ওপর কিছু বিরূপ প্রভাব পড়লেও আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে কার্বন নিঃসরণও অনেকটা কমিয়ে আনা সম্ভব।
×