ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অনিশ্চয়তার অবসান, ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ ইডেনে

প্রকাশিত: ০৬:০২, ১০ মার্চ ২০১৬

অনিশ্চয়তার অবসান, ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ ইডেনে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিশ্ব ক্রিকেটের জন্যই দারুণ এক খবর। টি২০ বিশ্বকাপে বহুল আলোচিত ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের আকাশ থেকে উড়ে গেল শঙ্কার কালো মেঘ। নিরাপত্তা প্রশ্নে পাকিস্তানের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯ মার্চের ম্যাচটি ধর্মশালা থেকে কলকাতার ইডেন গার্ডেনে সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি। ‘ইন্ডিয়ান ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই), সংশ্লিষ্ট স্টেট (রাজ্য) এ্যাসোসিয়েশন এবং আইসিসির মধ্যে আলাপ-আলোচনার পর ভেন্যু পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পাকিস্তান ধর্মশালায় খেলতে আগ্রহী নয়। যৌক্তিকতা এবং নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এই ম্যাচের ভেন্যু হিসেবে কলকাতাই উপযুক্ত।’ বুধবার সন্ধ্যায় সংবাদ মাধ্যমকে বলেন আইসিসি প্রধান ডেভ রিচার্ডসন। অথচ দুপুরে ক্রিকেট দলের ভারত সফর স্থগিত করেছিল পাকিস্তান সরকার! ভেন্যু পরিবর্তনে সব শঙ্কা দূর হলো। পূর্ব নির্ধারীত সূচী অনুযায়ী ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ম্যাচ ঘিরে জঙ্গী হামলার গুঞ্জন ওঠে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী বীরভদ্র সিং পাকিস্তান ক্রিকেট দলকে নিরাপত্তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তাই নিরাপত্তা প্রশ্ন দেখিয়ে ভেন্যু পরিবর্তনের জন্য আইসিসির কাছে আবেদন জানায় পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। মঙ্গলবার আইসিসি প্রধান নির্বাহী ডেভ রিচার্ডসনকে চিঠি দেয় পিসিবি। তাদের অনুরোধ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থাটি। একদিন পরই সুুখবরটি আসে। টি২০ বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তান হাইভোল্টেজ ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত ধর্মশালা থেকে কলকাতার ইডেন গার্ডেনে সরিয়ে নেয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয় আইসিসি। বিসিসিআইও সেটি নিশ্চিত করে। রিচার্ডসন আরও বলেন, ‘বিশ্বকাপে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আইসিসির দায়িত্ব। ভারত সরকার, আমাদের নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের সঙ্গে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কারণ দলগুলোর নিরাপত্তা সবার আগে।’ তবে ভেন্যু স্থানান্তরের আগে নাটক কম হয়নি। ভেন্যু পরিবর্তন না হলে এমন কি পাকিস্তান টি২০ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করবে কি না, সেটি নিয়েই শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। ২০০৮ সালে মুম্বাইয়ের তাজ হোটেলে সন্ত্রাসী হামালর জন্য ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করে আসছে। বন্ধ দু-দেশের পূর্ণাঙ্গ দ্বিপক্ষীয় সিরিজ। হিমাচল রাজ্য সরকার পাকিস্তানকে নিরাপত্তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে নতুন করে জট তৈরি হয়। বিসিসিআই ও ভারত কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে পূর্ণ নিরাপত্তার আশ্বাস দিলেও পাকিস্তান তাতে রাজি হয়নি। পাকিস্তান সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চৌধুরী নেছার আলি খান যেমন বলেছিলেন, ‘আমরা কোনভাবেই নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে দল পাঠাতে পারি না। ক্রিকেটারদের জীবন নিয়ে কোনরকম ঝুঁকি নেয়ার সুযোগ নেই।’ ধর্মশালার পার্শ্ববর্তী ক্যাংরা ভ্যালিতে ভারতের একটি বৃহত্তর একটি সেনা ক্যাম্প রয়েছে, সেখানে অনেকে বিখ্যাত কারগিল যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। ম্যাচটি সেখানে হলে ওই যোদ্ধাদের ভাবানুভূতিতে আঘাত লাগবে বলে মনে মন্তব্য করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী বীরভদ্র। শেষ পর্যন্ত সমস্যার সমাধান হলো, এটাই বড় বিষয়। কারণ, বলা বাহুল্য পাকিস্তান না থাকলে গ্ল্যামার হারাত টি২০ বিশ্বকাপ।
×