ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রোনাল্ডোর নৈপুণ্যে শেষ আটে রিয়াল

প্রকাশিত: ০৬:০২, ১০ মার্চ ২০১৬

রোনাল্ডোর নৈপুণ্যে শেষ আটে রিয়াল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ পর্তুগীজ সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর উদ্ভাসিত নৈপুণ্যে ভর করে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে রিয়াল মাদ্রিদ। মঙ্গলবার রাতে আসরের শেষ ষোলোর দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে গ্যালাক্টিকোরা ২-০ গোলে পরাজিত করে অতিথি ইতলিয়ান ক্লাব এএস রোমাকে। ঘরের মাঠ সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে রিয়ালের হয়ে গোল করেন রোনাল্ডো ও জেমস রড্রিগুয়েজে। এর আগে রোমে প্রথম লেগের ম্যাচেও রিয়াল জিতেছিল ২-০ গোলে। ফলে দুই লেগ মিলিয়ে ৪-০ গোলের জয় নিয়ে শেষ আট নিশ্চিত করেছে আসরের সর্বোচ্চ দশবারের চ্যাম্পিয়নরা। সেরা আটের ছাড়পত্র পেয়েছে জার্মান ক্লাব উলফসবার্গও। ফিরতি লেগে নিজেদের মাঠে তারা ১-০ গোলে হারায় বেলজিয়ামের জেন্টকে। এর আগে বেলজিক ক্লাবটির মাঠ থেকে উলফসবার্গ জিতে এসেছিল ৩-২ গোলে। ফলে দুই লেগ মিলিয়ে তাদের জয় ৪-২ গোলে। অনেকটা অসাধ্য সাধন করার লক্ষ্যেই স্পেনে এসেছিল রোমা। প্রথম লেগে হারলেও রিয়ালের মাঠে তাদের পক্ষে ছিল অতীত সাফল্য। কিন্তু মাঠের লড়াইয়ে খুব একটা তেজি ভাব দেখা যায়নি সফরকারীদের। পুরো ম্যাচেই দাপটের সঙ্গে খেলে যোগ্যতর দল হিসেবেই জয় পেয়েছে স্বাগতিক রিয়াল। তবে সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে ভাগ্যের শিকে ছিঁড়তে পারত রোমারও। ম্যাচের ১৪ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সহজ সুযোগ পেয়েছিল তারা। কিন্তু বক্সের মধ্যে ফাঁকায় বল পেয়েও লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন এডিন জেকো। ২৮ মিনিটে ফের সহজ সুযোগ হাতছাড়া হয়। জেকোর বাড়ানো বল বক্সের মধ্যে ফাঁকায় পান মোহাম্মদ সালাহ। তবে মিসরের এই মিডফিল্ডারের জোরালো শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে বেঁচে যায় রিয়াল। এরপর আক্রমণে ফেরে রিয়াল। রোনাল্ডো ও টনি ক্রুসের দুটি প্রচেষ্টা অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। বিরতির পর শুরুতেই রোনাল্ডোর জোরালো শট রুখে দেন রোমা গোলরক্ষক। ৫৬ মিনিটে আলেসান্ড্রো ফ্লোরেন্সির শট কেইলর নাভাস প্রতিহত করলে আরেকবার রক্ষা পায় স্বাগতিকরা। অবশেষে ৬৪ মিনিটে রোনাল্ডোর নৈপুণ্যে এগিয়ে যায় রিয়াল। তিন মিনিট আগেই গ্যারেথ বেলের বদলি হিসেবে নামা লুকাস ভাসকেসের দারুণ পাসে বক্সের সামনে থেকে সহজেই বল জালে জড়ান পর্তুগীজ তারকা। এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লীগে সি আর সেভেনের এটি ১৩ নম্বর এবং টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সর্বাধিক ৯০তম গোল। চার মিনিট আরও এক গোল করে রিয়ালের জয় নিশ্চিত করেন রড্রিগুয়েজ। কোনাকুনি শটে পোলিশ গোলরক্ষক ভয়চেখের দুপায়ের ফাঁক দিয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ব্রাজিল বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ এই গোলদাতা। ম্যাচ শেষে শিষ্যদের পারফর্মেন্সে সন্তোষ প্রকাশ করেন রিয়াল কোচ জিনেদিন জিদান। ফরাসী এই কিংবদন্তি বলেন, ম্যাচটি কঠিন ছিল। কিন্তু শেষে আমরা আমাদের পরের রাউন্ডে যাওয়ার লক্ষ্য অর্জন করেছি। আর আমরা কোন গোল খাইনি। তিনি আরও বলেন, ৯০ মিনিটে অনেক কিছুই ঘটতে পারত। কারণ আমরা ভাল আর গতিময় ফুটবলারদের নিয়ে গড়া একটি দলের বিপক্ষে এগিয়ে ছিলাম। জয়ের জন্য পুরো দলকেই কৃতিত্ব দিলেও কয়েক জনের নাম আলাদা করে বলেন ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপজয়ী তারকা। বলেন, ২৬ জনের দল আমাদের। ক্যাসেমিরো দারুণ খেলেছে, যেমনটা সবাই খেলেছে। কিন্তু সে বিশেষ করে রক্ষণে ভাল করেছে। লুকাস ভাসকেসও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। যখনই খেলে সে সবকিছু উজাড় করে দেয়। দুই গোলদাতার প্রশংসায় পঞ্চমুখ রিয়াল কোচ বলেন, রড্রিগুয়েজের গোলটিতে আমি খুশি। কারণ ও ভাল করে অনুশীলন করছিল। তার মতো একজন খেলোয়াড়ের গোল পাওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। আর রোনাল্ডো যতবার মাঠে নামে, ততবারই তার সেরাটা দেখাতে এবং গোল করতে চায়। সে এটাই করেছে। এবারের ২০১৫-১৬ মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে এ নিয়ে ১৩ গোল হলো রোনাল্ডোর। এক মৌসুমে সর্বোচ্চ গোলের নিজের রেকর্ডের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন পর্তুগালের এই তারকা ফরোয়ার্ড। ২০১৩-১৪ মৌসুমে রিয়ালকে টুর্নামেন্টের দশম শিরোপা জেতানোর পথে ১৭ গোল করে রেকর্ড গড়েন তিনবারের ফিফা সেরা তারকা।
×