ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সেই ডালিম হোটেলটি স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে সংরক্ষণ করুন

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ১০ মার্চ ২০১৬

সেই ডালিম হোটেলটি স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে সংরক্ষণ করুন

মোয়াজ্জেমুল হক/হাসান নাসির/আহমেদ হুমায়ুন ॥ চট্টগ্রামের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মালিকানার সেই মহামায়া ভবন। নগরীর পুরাতন টেলিগ্রাফ রোডে হাজারী লেন লাগোয়া এ ভবনটির অবস্থান। মুক্তিযুদ্ধকালীন স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের আলবদর বাহিনী এটিকে দখল করে নিয়ে নামকরণ করে ডালিম হোটেল। এ ভবনটি এখন মহান মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতাকামী বাঙালীর ইতিহাসের অংশ হয়ে মাথা উঁচু করে জানান দিচ্ছে স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার আলবদর আলশামসের গু-ারা এটিকে বাঙালী নিধন বা টর্চার কেন্দ্রে পরিণত করেছিল। ওই সময় যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের নেতৃত্বদানকারীদের অন্যতম ছিল তৎকালীন ইসলামী ছাত্রসংঘের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বর্তমানে জামায়াতের মজলিসে শূরা সদস্য গুপ্তঘাতক, কুখ্যাত জল্লাদ মীর কাশেম আলী। দেশের স্বাধীনতা বিরোধিতাকারী এই আলবদর নেতা অনেকটা অলৌকিকভাবে বিত্তের বিশাল পাহাড় গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে। স্বাধীনতাবিরোধী মৌলবাদী জামায়াত-শিবির চক্রকে অর্থ সহায়তা দানকারী যারা আছে তাদের মধ্যে এই মীর কাশেমকে টাকার কুমির বলা হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে মীর কাশেম আলীকে হত্যাকা-ের দুই অভিযোগে ফাঁসি, ৮ অভিযোগে ৭২ বছরের জেল দেয়া হয়। মঙ্গলবার সুপ্রীমকোর্টের আপীলেট বিভাগ চূড়ান্ত রায়ে নরঘাতক মীর কাশেম আলীকে হত্যাকা-ের একটি অভিযোগে ফাঁসি, নির্যাতনের ৬ ঘটনায় ৫৮ বছরের জেল প্রদান করেছে। এর আগে দীর্ঘ আইনী প্রক্রিয়ায় যুক্তিতর্ক শেষে বিজ্ঞ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আদালতও এ ডালিম হোটেলকে ভয়ঙ্কর এবং নির্যাতন কেন্দ্র বা ডেথ ফ্যাক্টরি বলে আখ্যায়িত করেছে। বাঙালীর স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের অংশ এ মহামায়া ভবন বা ডালিম হোটেলকে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে পরিণত করার দাবি উঠেছে। বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সংগঠনগুলো থেকে এ দাবি উঠেছে বহু আগে থেকেই। এখন এ ভবনটি মুক্তিযুদ্ধে বাঙালী নিধন কেন্দ্র হিসেবে আদালতের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় এ দাবি এখন আরও জোরালো হয়েছে। ভবনটির মূল মালিক ব্যবসায়ী প্রয়াত চন্দ্র মোহন নাথ। তার চার পুত্র বর্তমানে জীবিত রয়েছেন। এরাই ভবনটির মূল ওয়ারিশ। বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে ভবনটিকে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে পরিণত করার যে দাবি উঠেছে, সে বিষয়ে তাদের কোন দ্বিমত নেই। তবে সরকার পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে তাদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের প্রয়োজন মতো পুনর্বাসনের মাধ্যমে এ ব্যাপারে একটি সমাধানে পৌঁছানো যেতে পারে বলে মত ব্যক্ত করেছেন প্রয়াত চন্দ্র মোহন নাথের জ্যেষ্ঠপুত্র বাবুল চন্দ্র নাথ। যিনি বর্তমানে ওই ভবনের নিচতলায় একটি মুদি দোকান প্রতিষ্ঠা করে তা থেকে জীবিকা নির্বাহ করছেন। মূলত মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে স্বাধীনতাকামীদের ওপর ভয়ঙ্কর নির্যাতনের সাক্ষী চট্টগ্রামের মহামায়া ভবন তথা ‘ডালিম হোটেল’। নগরীর নন্দনকানন এলাকায় টেলিগ্রাফ রোডে এ ভবনের অবস্থান। মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ ও মুক্তিকামী মানুষদের ধরে নিয়ে সেখানে আটকে রেখে চালানো হতো অমানুষিক নির্যাতন। তাদের কান্নার শব্দ শোনা যেত দূর থেকেও। বদর বাহিনীর হাতে আটক এই মানুষগুলোকে ছাড়িয়ে নিতে প্রতিদিনই ভবনের কাছাকাছি এলাকায় এসে অবস্থান করত তাদের স্বজনরা। কিন্তু বাবা-মায়ের চোখের জলে হৃদয় বিগলিত হয়নি পাকিস্তানের দোসর ঘাতকদের। ১৩৭৩ বঙ্গাব্দে নির্মিত ভবনটি এখন জরাজীর্ণ, তবে ধারণ করে আছে অনেক বেদনার স্মৃতি। ‘মহামায়া ডালিম ভবন’ নামের এ ভবনটির মালিক চন্দ্র মোহন নাথ ভবনের একটি ফ্ল্যাটে সপরিবারে থাকতেন। বাকি অংশটুকু ব্যবহৃত হতো বোর্ডিং হিসেবে। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ওই এলাকা ছিল আলবদর বাহিনীর অন্যতম প্রধান টার্গেট। কারণ হাজারী গলিসহ আশপাশের লোকালয় ছিল সংখ্যালঘু অধ্যুষিত। প্রাণভয়ে অন্য অনেকের মতো চন্দ্র মোহন নাথও স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে রামগড় হয়ে সীমান্ত অতিক্রম করেন। পরিবারটি ভারতে চলে যাওয়ার পর বাড়িটি দখলে নেয় তৎকালীন ছাত্রসংঘের অন্যতম শীর্ষনেতা মীর কাশেম আলীর নেতৃত্বাধীন আলবদর বাহিনী। তারা মহামায়া ডালিম ভবনের নাম দেয় ডালিম হোটেল। এ ভবনটিই ছিল ছাত্রসংঘ তথা আলবদর বাহিনীর কার্যালয় ও প্রধান টর্চার সেল। চট্টগ্রাম নগরীতে এরকম টর্চার সেল ছিল দুটি। একটি সাকা চৌধুরীর গুডস্ হিলের বাড়ি। অপরটি মীর কাশেম আলীর দখলে নেয়া এ ডালিম হোটেল। ডালিম হোটেলে আটকে রেখে কতজন মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী মানুষকে নির্যাতন করা হয়েছে তার সঠিক পরিসংখ্যান নেই। সেখানে অনেকেই বদর বাহিনীর নির্যাতনে প্রাণ দিয়েছেন। আবার অনেকেই এখনও ভয়ঙ্কর নির্যাতনের আঘাত ও ক্ষতচিহ্ন বয়ে বেড়াচ্ছেন। নির্যাতিতদের মধ্যে তাদের নামই জানা যায়, যারা ছিলেন রাজনীতিবিদ ও মুক্তিযুদ্ধে সম্মুখসারির যোদ্ধা এবং সংগঠক। ডালিম হোটেলে যারা নির্যাতিত হয়েছিলেন তাদেরই একজন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও বামপন্থী নেতা সাইফুদ্দিন খান। ১৯৭১ সালের ৭ নবেম্বর ভোরে নগরীর পশ্চিম মাদারবাড়ি এলাকার আজিজ কলোনির বাসা থেকে আলবদর বাহিনী ধরে নিয়ে যায় সাইফুদ্দিন খানকে। একই বাসা থেকে মীর কাশেম আলীর বাহিনী ধরে নিয়ে যায় সাইফুদ্দিন খানের ভাই ডাঃ কামাল এ খানের ছেলে ইরশাদ কামাল খান (বর্তমানে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির ভিসি), পটিয়া মহকুমা ন্যাপ সভাপতি এ্যাডভোকেট নুর নবীসহ সাতজনকে। ডালিম ভবনে দিনের পর দিন আটকে রেখে তাদের ওপর চালানো হতো নির্যাতন। ড. ইরশাদ কামাল খান তখন ছিলেন চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্র। নির্যাতনের ভয়াবহতা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, আরও অনেকে আটক ছিলেন এ ভবনে। আমাদের প্রতিদিন যখন তখন লোহার রড, লোহার চেন, লাঠি, হাতুড়ি ও বেল্ট দিয়ে নির্মমভাবে পেটানো হতো। ডালিম ভবনে আরও আটক ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক নাছির উদ্দিন চৌধুরী। তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকদের বিষয়ে তথ্য বের করতেই এ নির্যাতন। একদিন কথা বের করতে ব্যর্থ হয়ে একটি গ্রুপ চলে যাওয়ার পর মীর কাশেম আলীর নেতৃত্বে ইসলামী ছাত্রসংঘ ও বদর বাহিনীর কয়েক সদস্য আসে। তখন মীর কাশেম আলী নির্দেশ দেন- একে আরও পেটাও। চট্টগ্রামের এই টর্চার সেল নির্যাতনে প্রাণ হারিয়েছেন হাজারী গলি এলাকার রঞ্জিত দাশ, টুনটু, সন্দ্বীপের মুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিনসহ সাতজন। এদের লাশ ফেলে দেয়া হয় কর্ণফুলী নদীতে। প্রতিদিন অন্তত অর্ধশত মুক্তিকামী মানুষকে ধরে এনে আটক ও নির্যাতন করা হতো ডালিম হোটেলে। সেখানে আটক থেকে আরও যারা নির্যাতিত হয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন ইস্টার্ন ব্যাংকিং কর্পোরেশনের দুই কর্মকর্তা অরুণ কুমার চৌধুরী ও শফিউল আলম চৌধুরী, ন্যাপ নেতা এ্যাডভোকেট শফিউল আলম (বেবি শফি), মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর চৌধুরী, চীনপন্থী ন্যাপ নেতা মোহাম্মদ সেলিম ও মেজবাহ খান। তারা ছাড়া পান ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হওয়ার পর। নির্যাতিত মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, ১৯৭১ সালের ২২ অথবা ২৩ নবেম্বর চট্টগ্রাম নগরীর মাদারবাড়ি এলাকায় অনেকটা কার্ফু ঘোষণা করে বাসায় বাসায় রেড দিয়েছিল আলবদর বাহিনী। বাড়ি থেকেই ধরে নিয়ে যায় তাকে এবং তার ছোট ভাই প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা দস্তগীর চৌধুরীসহ (পরে বিএনপি নেতা) আরও বেশ কয়েকজনকে। ডালিম হোটেলে অকথ্য নির্যাতনের মুখেও জোরগলায় বলেছিলাম ‘জয়বাংলা’। দেশ স্বাধীন হওয়ার সন্ধিক্ষণে মুক্তিযোদ্ধারা গুলি ছুড়তে ছুড়তে ডালিম হোটেলের দিকে এগিয়ে যান। তারাই আমাকেসহ অনেককে মুক্ত করে আনেন। ন্যায্য বিচার হওয়ায় তিনি সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। নির্যাতিত ন্যাপ নেতা সাইফুদ্দিন খানের স্ত্রী নারীনেত্রী নুরজাহান খান বলেন, ফাঁসির দ- বহাল থাকায় যারা স্বজন হারিয়েছেন এবং যাদের স্বজনরা নির্যাতিত হয়েছেন তাদের দীর্ঘদিনের মনোকষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হবে। তবে তার স্বামীসহ অনেকেই এ বিচার দেখে যেতে পারেননি বলে তিনি আক্ষেপও করেন। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম জেলা ইউনিট কমান্ডার মোঃ সাহাব উদ্দিনও মহামায়া ডালিম ভবনকে স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে সংরক্ষণের উদ্যোগ নিতে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের প্রতি দাবি জানান। তিনি বলেন, প্রয়োজনে ক্ষতিগ্রস্ত ওই পরিবারকে রাষ্ট্রীয়ভাবে যথাযথভাবে পুনর্বাসন করে হলেও এ কাজটি করা প্রয়োজন। ডালিম হোটেল এখন ॥ নগরীর নন্দনকানন টেলিগ্রাফ সড়কের ডালিম ভবনে এখন বসবাস করেন চন্দ্র মোহন নাথের চার পুত্র। ৬ শতক জায়গার ওপর নির্মিত তিনতলা এ ভবনের কয়েকটি ফ্ল্যাট ভাড়াও দেয়া হয়েছে। বুধবার মহামায়া ডালিম ভবনে গিয়ে সেখানে বসবাসকারীদের সঙ্গে আলাপের চেষ্টা করলে বেশিরভাগ বসবাসকারীই কথা বলতে রাজি হচ্ছিলেন না। কেউবা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেনÑ মালিক পক্ষের কেউ এখানে থাকেন না এমন অজুহাতে। শেষ পর্যন্ত ওই ভবনের নিচতলায় পাওয়া যায় মূল মালিক চন্দ্র মোহন নাথের বড় ছেলে বাবুল চন্দ্র নাথকে। পরিচয় দিয়ে আলাপের সূত্রপাত করলে তিনি জানাতে শুরু করেন তার পরিবার ও একাত্তরে বাড়িটি বেদখল হয়ে যাওয়ার তথ্য। বাবুল নাথ জানান, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর আলবদর বাহিনীর তৎপরতা বেড়ে যাওয়ায় তাদের পরিবার আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। মাসখানেকের মধ্যেই বাবা চন্দ্র মোহন নাথ পরিবারের সকল সদস্য নিয়ে রামগড় সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে চলে যান। তখন বাবুল নাথের বয়স ছিল ১৩-১৪ বছর। ভারতে থাকাকালে তারা জানতে পারেন, তাদের বাড়িটি দখলে নিয়েছে আলবদর বাহিনী। সেখানে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামীদের ধরে এনে নির্যাতন চালানো হয়েছিল। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ভারত থেকে ফিরে তারা বাড়িটি খালি অবস্থায় পান। তবে আসবাবপত্র ও গৃহস্থালির সামগ্রীগুলো পান তছনছ অবস্থায়। মূল্যবান অনেক জিনিসই লুটপাট হয়ে যায়। সেই থেকে তারা সকল ভাই এ বাড়িতেই বসবাস করছেন। বাবুল নাথ জানান, তার বাবা চন্দ্র মোহন নাথ ২০০২ সালে মারা গেছেন। বাড়িটি বাবার নামেই রয়েছে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ভূমি বিভাগে যোগাযোগ করে জানা যায়, মহামায়া ডালিম ভবনের জায়গাটি চন্দ্র মোহন নাথের নামেই রয়েছে। তার নামে বিএস জরিপও হয়েছে। নামজারির জন্য আবেদন করেছেন তার চার পুত্র বাবুল কান্তি নাথ, সুভাষ চন্দ্র নাথ, সুকুরঞ্জন নাথ ও অরুণ চন্দ্র নাথ। ভাইদের পক্ষে ২০১৫ সালের ২৭ জানুয়ারি এ আবেদন করেন অরুণ চন্দ্র নাথ। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও রেভিনিউ কালেক্টর মোঃ রুহুল আমিন জানান, নামজারির জন্য পরিবারটির পক্ষ থেকে আবেদন রয়েছে। তবে এটি স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে সংরক্ষণ করা হবে কিনাÑ সে ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। যেহেতু দাবি উঠেছে, সেহেতু বিষয়টি মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়কে লিখিত আকারে অবহিত করা হবে। কোন সিদ্ধান্ত এলে সে অনুযায়ী জেলা প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। জাদুঘর হিসেবে সংরক্ষণের দাবি ॥ চট্টগ্রামের মহামায়া ডালিম হোটেলকে মুক্তিযুদ্ধকালীন নির্যাতনের সাক্ষী হিসেবে সংরক্ষণের দাবি উঠেছে। নিহত মুক্তিযোদ্ধা ও নির্যাতিতদের স্বজনদের বক্তব্য হলোÑ এ ভবনটি সংরক্ষণে রাখা হলে এর মাধ্যমে সমৃদ্ধ হবে তরুণ প্রজন্ম। পৃথিবীর দেশে দেশে এ ধরনের স্থাপনাগুলো রাষ্ট্রীয়ভাবে সংরক্ষণ করা হয়ে থাকে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. গাজী সালেহ উদ্দিন বলেন, শুধু ডালিম ভবনই নয়, সাকা চৌধুরী পরিবারের টর্চার সেল গুডস্ হিলের বাড়ি, পাহাড়তলী বধ্যভূমিসহ এমন আরও বেশ কয়েকটি স্থাপনা রয়েছে যেগুলো সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। সরকারী উদ্যোগ না থাকায় অনেক বধ্যভূমি ও নির্যাতন কেন্দ্রে গড়ে উঠছে বাড়িঘর ও স্থাপনা। এদিকে ডালিম ভবনকে জাদুঘর হিসেবে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হলে পরিবারটির সম্মতি রয়েছে কিনাÑ এ বিষয়ে জানতে চাইলে মালিক প্রয়াত চন্দ্র মোহন নাথের বড় ছেলে বাবুল চন্দ্র নাথ বলেন, বাড়িটি সরকার নিয়ে নিলে আমরা কোথায় থাকব? সরকার যদি আপনাদের অন্য কোথাও জমি দিয়ে পুনর্বাসন করেন, তাহলে রাজি আছেন কিনাÑ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকার যদি চায় তখন দেখা যাবে। তবে সরকার নিশ্চয়ই এমন উদ্যোগ গ্রহণ করলে আমাদের সঙ্গে বোঝাপড়া করেই করবে বলে বিশ্বাস করি।
×