ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের অস্তিত্ব

প্রকাশিত: ০৩:৪২, ১০ মার্চ ২০১৬

বাংলাদেশের অস্তিত্ব

মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির ১৯৭১ সালে আমার বয়স মাত্র এক বছর। তাই মুক্তিযুদ্ধের কথা আমার মনে নেই। আমি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জেনেছি নিজের মা-বাবা, মুরব্বিদের কাছ থেকে, পাঠ্যপুস্তক ও পত্র-পত্রিকা পড়ে। আমি সব সময় মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাসকে মনে-প্রাণে গ্রহণ করেছি। আমার সন্তানদের কাছে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা আমার দায়িত্ব। এই ক্ষেত্রে আমার দায় রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের এই বীরত্ব গাথা পৃথিবীর ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় বীরত্ব গাথা হিসেবে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। আজ নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধকে কতটুকু জানে বা মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস কি তারা জানতে পারছে? ইতিহাস এই প্রশ্ন নিশ্চয়ই আমাদের কাছে দাবি রাখে। ইতিহাসের কাছে আমাদের দায়বদ্ধতা আছে। যারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস লেখেন ইতিহাসের কাছে তাদের কলমের দায়বদ্ধতা আছে। বর্তমানে নতুন প্রজম্মের মুক্তিযুদ্ধের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ আছে। নতুন প্রজন্ম বাব বার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির শিকার হয়েছে। যেদেশের মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক করা হয় মনে রাখতে হলে সেই দেশের নতুন প্রজম্মের ভাবনার মূলে কুঠারাঘাত করা হচ্ছে। আমরা মনে করি শহীদের সংখ্যা নিয়ে এই ধরনের মন্তব্য বিকৃত মানসিকতার পরিচায়ক। আমরা ছোটকাল থেকে জেনে আসছি মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লাখ মানুষ তাদের অমূল্য প্রাণ উৎসর্গ করেছেন। এটাই তো ইতিহাসের দলিল। তবে কেন আমাদের ইতিহাস বিকৃতির এই ধরনের মন্তব্য শুনতে হবে? আমি বিশ্বাস করি নতুন প্রজম্ম ইতিহাস বিকৃতির এই হীন ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে। এই কথা সত্য যে, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে নতুন প্রজম্মের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধে যুদ্ধাপরাধীদের ভূমিকা নিয়ে একটি বিশেষ ধর্মান্ধ গোষ্ঠি আজকের প্রজম্মকে টার্গেট করেছে। তারা বিভিন্নভাবে নতুন প্রজন্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে নানা বিভ্রান্তি ছড়িয়ে দিতে চাচ্ছে। কিন্তু রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব যাদের, ইতিহাস নিয়ে যারা ভাবেন ও লেখেন, সমাজ নিয়ে যারা ভাবেন, সন্তানের অভিভাবকদের দায়িত্ব রয়েছে নতুন প্রজন্ম যাতে ইতিহাস বিকৃতির কবলে না পড়ে সেদিকে কঠোর নজরদারি রাখতে হবে। আমরা মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাসকে গ্রহণ করেছি আর না জানা ইতিহাসের নানা তথ্যকে জানতে চাই। আমরা মুক্তিযুদ্ধকে হৃদয়ে ধারণ করে নিজের সন্তানকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী করে মানুষ করতে চাই। মনে রাখতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ ছাড়া বাংলাদেশের অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না। মহান মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের হৃৎপি-। দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর, চট্টগ্রাম
×