ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মেয়র খোকনের নির্দেশ

তিন মাসের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণের সব ভবন রং করতে হবে

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ৯ মার্চ ২০১৬

তিন মাসের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণের সব ভবন রং করতে হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নগরীর সৌন্দর্য বৃদ্ধির মাধ্যমে রাজধানী ঢাকাকে বিশ্বের কাছে পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর নগরী হিসেবে তুলে ধরতে আগামী ৩ মাসের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) সকল সরকারী, বেসরকারী, স্বায়ত্তশাসিত, ব্যক্তি মালিকানাধীন আবাসিক বা বাণিজ্যিক ছোট বড় ও সকল বহুতল ভবন রং করার নির্দেশ দিয়েছেন সংস্থাটির মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। এ নির্দেশ না মানলে অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টায় ডিএসসিসির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ নির্দেশনা দেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আগামী ৩ মাসের মধ্যে নিজ উদ্যোগে ভবন বা প্রতিষ্ঠানের মালিক কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে নিজ উদ্যোগে রং করা বা প্লাস্টারের কাজ করে দেয়া হবে। এ ক্ষেত্রে এই কাজের জন্য ব্যয়িত অর্থ ওই ভবনের ওপর অতিরিক্ত কর বা হোল্ডিং ট্যাক্স হিসেবে যোগ করা হবে। যা প্রদান করতে বাধ্য হবেন ভবন মালিকরা। সংস্থাটির ঘোষিত পরিচ্ছন্ন বছর ২০১৬’র গৃহীত কার্যক্রম পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতেই এ নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশপাশি ডিএসসিসির আওতাধীন যে সব ভবনে প্লাস্টার বা রং বা চুনকাম করা নেই সেগুলোতে মার্জিত রং বা প্লাস্টার করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সম্মেলনে মেয়র বলেন, এ নির্দেশ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ তাদের সকল অফিসে অতিদ্রুত প্রয়োজনীয় রং করা হবে। এছাড়া দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন সকল সরকারী-বেসরকারী ও স্বায়ত্তশাসিত ভবন মালিকদের নিজ উদ্যোগে এই নির্দেশনা পালন করার জন্য অনুরোধ জানানো গেল। মেয়র বলেন, নগরীর যে সব ভবনে রং বা প্লাস্টার করা নেই, সূর্যের তাপে এবং বৃষ্টির পানিতে ওই ভবন অস্বাস্থ্যকর হয়ে যাচ্ছে। এতে ওই ভবনে বসবাসকারীদের স্বাস্থ্যের হানি ঘটছে। তাই নিজ নিজ উদ্যোগে ভবনের রং বা প্লাস্টার করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নগরীতে অনেক ভবন নির্মাণ করার পর তা দীর্ঘদিন প্লাস্টার করা হয় না। কিছু স্থানে প্লাস্টার করা হলেও রং করা হয় না। এতে যেমন ভবনটি অসুন্দর দেখায় আবার অন্যদিকে ভবনে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশও বিরাজ করে। এমন স্যাঁত স্যাঁতে ভবনে বসবাস করলে খুব সহজেই বসবাসকারীরা এজমা, এলার্জিসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি। মেয়র বলেন, মূলত দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আমরা সৌন্দর্য ও পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতেই এ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া সৌন্দর্য বর্ধন শুধু নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনাই নয় নগরবাসীর স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টাও নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি। ডিএসসিসির আওতাধীন সকল ভবনের স্বাভাবিক হোল্ডিং ট্যাক্স তুলতে কর্পোরেশন সক্ষম হচ্ছে না তবে এই কাজের অতিরিক্ত ট্যাক্স কিভাবে তোলা হবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, আমরা শতভাগ হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় করতে না পারলেও বেশিরভাগ ট্যাক্স আদায়ে সক্ষম হয়েছি। এই অতিরিক্ত ট্যাক্স আদায়েও আমরা সক্ষম হব। তিনি এ ধরনের পরিস্থিতিতে স্থানীয় সরকার অধ্যাদেশ-২০০৯-এর ৩য় অনুচ্ছেদের ১ এর ২-ধারা অনুযায়ী সিটি কর্পোরেশন এ ধরনের নির্দেশ দিতে পারবে বলেও উল্লেখ করেন। রাজধানীর ফুটপাথ ও রাস্তায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার পর পুনরায় তা দখল হচ্ছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র সাইদ খোকন বলেন, আমরা নিয়মিত অবৈধ দখল উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করছি। তারপরও অনেক জায়গা আবার দখল হয়ে যাচ্ছে। ডিএসসিসির পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে, তবে এর পাশাপাশি নগরবাসীকেও সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। তবে উচ্ছেদের পর যাতে কেউ পুনরায় দখল করতে না পারে সে বিষয়ে স্থায়ী সমাধান প্রণয়নের জন্য আমরা কাজ করছি বলেও উল্লেখ করেন সাইদ খোকন। সংবাদ সম্মেলনে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বেলাল আহমেদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোঃ গোলাম মোস্তফা, গণসংযোগ কর্মকর্তা উত্তম কুমার প্রমুখ। এছাড়াও কর্পোরেশনের উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
×