ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কলাপাড়ায় কৃষকের মাথায় হাত

আগাছা নাশক দিয়ে ৪ হাজার তরমুজ গাছ নিধন

প্রকাশিত: ০৩:৫৫, ৯ মার্চ ২০১৬

আগাছা নাশক দিয়ে ৪ হাজার তরমুজ গাছ নিধন

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ৮ মার্চ ॥ তরমুজ চাষী মতলেব মুন্সী এখন বার বার অচেতন হয়ে পড়ছেন। যে ক্ষেত থেকে আর পনেরো-কুড়ি দিন পর অন্তত তিন লাখ টাকা ঘরে তোলার কথা। এমন স্বপ্নে বিভোর ছিল এ চাষী। এখন তিনি নিঃস্ব। উল্টো ধার-দেনা কিভাবে পরিশোধ করবেন তা ভেবে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন। প্রতিদিনের মতো সোমবার সকালে তরমুজ ক্ষেতে গিয়ে অচেতন হয়ে পড়েন। পাঁচ বিঘার তরমুজ ক্ষেতের সব গাছ নেতিয়ে পড়েছে। কে বা কারা রাতের আঁধারে আগাছা নিধনের ওষুধ প্রয়োগ করে অন্তত চার হাজার তরমুজ গাছ মেরে ফেলেছে। একদিন আগের গাঢ় সবুজের সতেজ গাছগুলো নেতিয়ে কুকড়ে মরে শুকিয়ে যাচ্ছে। প্রায় এক-দেড় কেজি ওজনের হাজার হাজার তরমুজ ক্ষেতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মতলেব মুন্সীর এমন সর্বনাশ দেখতে এখন নেতিয়ে পড়া তরমুজ ক্ষেতে পড়শিসহ শত শত চাষীর ভিড় লেগেছে। যেখানে ১৫-২০ দিন পর তরমুজ কেনার বেপারীর ভিড় থাকার কথা ছিল। গোটা কৃষ্ণপুর গ্রামসহ চম্পাপুর ইউনিয়নের সকল চাষী যেন শোকের কাতারে শামিল হয়েছেন মতলেবের এমন সর্বনাশে। সকলের প্রশ্ন, মানুষরূপী এমন পশু এ কাজটি কেন করল। কিভাবে কেনইবা করল- এমন প্রশ্ন সকলের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে। পাশাপাশি অন্যান্য চাষী পড়েছেন মহাশঙ্কায়। তাদের কি-না আবার এমন সর্বনাশ করে দেয়। মতলেবের দাবি, পুরনো শত্রুতার জের ধরে তার দায়ের করা মামলার আসামিরা এমন সর্বনাশ করেছে। কৃষাণি জায়েদা বেগমের ভাষ্য, ‘জনগণ এইয়া দেয় নাই। এই রহম বিনাশ কারও করতে নাই।’ উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, আগাছা নিধনের ওষুধ প্রয়োগ করে কৃষক মতলেব মুন্সীর এমন ক্ষতি করা হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান রিন্টু তালুকদার জানান, এমন শত্রুতা তিনি আগে কখনও দেখেননি। ধরা পড়লে কঠোর বিচারের কথা জানালেন তিনি। সরেজমিন দেখা গেছে, হাজার হাজার ফলন ধরা তরমুজ গাছ নেতিয়ে পড়েছে। ফলসহ গাছগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। ক্ষেতটিতে চোখ বোলানো যায় না। মতলেব মুন্সীর মুখের দিকে তাকানো যায় না। মানুষটি যেন নিঃস্ব হয়ে গেল। মতলেব মুন্সী এ ঘটনায় উপজেলা পরিষদে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
×