ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

স্বাগতিক ভারত যে কারণে এগিয়ে

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ৮ মার্চ ২০১৬

স্বাগতিক ভারত যে কারণে এগিয়ে

শাকিল আহমেদ মিরাজ ॥ আজ থেকে শুরু হচ্ছে টি২০ বিশ্বকাপের ষষ্ঠ আসর। যেখানে মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বাধীন স্বাগতিক ভারতই হট ফেবারিট। এমনিতে ভারতের সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন ছিল না। কারণ সম্প্রতি তার অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অস্ট্রেলিয়াকে টি২০তে ‘হোয়াইটওয়াশ’ করে, এরপর ঘরের মাটিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ জয়। তাতে বাড়তি মাত্রা যোগ করে সদ্য এশিয়া কাপ জয়। প্রথমবারের মতো টি২০ ফরেমেটে অনুষ্ঠিত এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে মুকুট পুনরুদ্ধার করে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করছে ধোনিবাহিনী। পরশু এশিয়া কাপের ফাইনালে বাংলাদেশকে হারায় র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দল ভারত। দলটিতে রয়েছে এক ঝাঁক তারকা ক্রিকেটার। যাদের সামর্থ্য রয়েছে ছোট্ট ভার্সনে শিরোপা জয়ের। যদিও হংকং-জিম্বাবুইয়ে ও আফগানিস্তান-স্কটল্যান্ড ম্যাচ দিয়ে আজ থেকে শুরু হচ্ছে বাছাই পর্বের লড়াই। ১৫ তারিখ নিজেদের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক ভারতের প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড। স্বাগতিক ব্যাটিং-বোলিংয়ে রয়েছে দারুণ ভারসাম্য। ব্যাট হাতে দৃশ্যপট বদলে দেয়ার সামর্থ্য রাখেন বিরাট কোহলি, শিখর ধাওয়ান, রোহিত শর্মা, সুরেশ রায়না, যুবরাজ সিং, ধোনি। আইপিএলে আলো ছড়িয়ে দীর্ঘদিন পর ফেরা আশিষ নেহরা দুরন্ত বল করছেন। পেস আক্রমণে তার সঙ্গে আলো ছড়াচ্ছেন দুই নবীন জাসপ্রিত বুমরা ও হারদিক পান্ডিয়া। রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ জাদেজাকে নিয়ে স্পিন আক্রমণও বিশ্বসেরা। জাদেজা, পান্ডিয়া, যুবরাজ, অশ্বিন অলরাউন্ডার স্বত্বা নিয়ে প্রশ্ন নেই। সঙ্গে ‘ক্যাপ্টেন কুল’ ধোনির নেতৃত্ব। বিশ্লেষকদের মতে, ঘরের মাটিতে এবার ‘হট ফেবারিট’ ভারত। এশিয়া কাপে কার্যত ভারতের ধারে কাছেও ছিল না কোন দল। এক তরফা দাপট দেখিয়ে শিরোপা পুনরুদ্ধার করে ধোনিবাহিনী। বাংলাদেশকে ৪৫ রানে হারিয়ে মিশন শুরু করে ভারত। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে উড়িয়ে দেয় তারা। উপমহাদেশের আরেক প্রতিষ্ঠিত শক্তি শ্রীলঙ্কাও পাত্তা পায়নি, এবারও ধোনিদের জয় ৫ উইকেটে। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে দুর্বল আরব আমিরাতের বিপক্ষে ৯ উইকেটের বিশাল জয় তুলে নেয় ভারত। ১৫ ওভারে নেমে আসা বৃষ্টিবিঘিœত ফাইনালে বাংলাদেশকে সহজেই ৮ উইকেট হারিয়ে শিরোপা জয় করে ধোনির দল। বাংলাদেশ ছাড়ার আগেই ভারত অধিনায়ক বলেন, টি২০ বিশ্বকাপে এ নৈপূণ্য তাদের আত্মবিশ্বাস আরও বাড়িয়ে দেবে। ‘আমাদের লক্ষ্য একন টি২০ বিশ্বকাপ পুনরুদ্ধার করা’Ñ আত্মবিশ্বাসী ক্যাপ্টেন কুল। তিনি আরও যোগ করেন, ‘টি২০ এমন ধরনের ক্রিকেট যেখানে প্রকৃত ফেবারিট বলে কিছু নেই। তবে সম্প্রতি আমরা ভাল খেলছি। অভিজ্ঞ ও তারুণ্য মিলিয়ে দলে চমৎকার ভারসাম্য ফিরে এসেছে। যা আমাকে আশাবাদী করছে। শিরোপা জয়ের সামর্থ্য এই দলের রয়েছে।’ কেবল ধোনি নয়, ভারতের সম্ভাবনা দেখছেন বিশ্বের সব মহারথী ক্রিকেটারও। সেই তালিকায় ব্রায়ান লারার মতো সাবেক গ্রেট যেমন আছেন, তেমনি আছেন বর্তমান তারকা শেন ওয়াটসনও। ক্যারিবিয়ান লিজেন্ড লারা বলেন, ‘আমার মনে হয় এবারের শিরোপা ভারতের ঘরেই উঠবে। কারণ তারা নিজেদের মাটিতে খেলছে। তার ওপর ধোনির নেতৃত্বে দলটি দারুণ গুছিয়ে উঠেছে। এশিয়া কাপই জ্বলন্ত উদাহরণ। ধোনির হাতে এ ঝাঁক ম্যাচউইনার ক্রিকেটার রয়েছে।’ ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলি ও স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন বলেও মনে করেন তিনি। এছাড়া অভিজ্ঞ ধোনির নেতৃত্বও পার্থক্য গড়ে দিতে পারে। ক’দিন আগে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে অস্ট্রেলিয়াকেই পাত্তা দেয়নি ভারত। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই অসি অলরাউন্ডার ওয়াটসন বলেন, ‘ধোনির নেতৃত্বে ভারতের এই দলটা আসলেই দারুণ। প্রতি বিভাগে প্রতিপক্ষকে নাস্তানাবুদ করার সামর্থ্য রয়েছে। নিজেদের কন্ডিশনটাও তাদের ভাল জানা।’ বিষয়টি অস্বীকার করেননি খোদ ভারত অধিনায়ক। ধোনি বলেন, ‘সংক্ষিপ্ত ভার্সনে আমরা সব সময়ই ফেবারিট। এবার বিশ্বকাপও নিজেদের মাটিতে। দলে টপ-ক্লাস স্পিনাররা খেলবে, যা আমাদের জন্য সহায়ক হবে, এখানে আইপিএল খেলাটাও কাজে আসবে। আইপিএলের আট আসরের সাতটিই এখানে হয়েছে এবং তার সব কিছুই হিসেবে আসবে। ছেলেরা দীর্ঘ অভিজ্ঞতাটা কাজে লাগাতে পারবে।’ ২০০৭-এ সেই প্রথম টি২০ বিশ্বকাপের শিরোপাজয়ী পাকিস্তান পরের আসরগুলোতে সুবিধা করতে পারেনি। ধোনির সামনে এবার সেটি পুষিয়ে নেয়ার সুযোগ। হয়ত এটিই ক্যাপ্টেন কুলের শেষ টি২০ বিশ্বকাপ। স্বাগতিক ভারতের প্রথম ম্যাচ ১৫ মার্চ, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। ২৭ দিনব্যাপী এ বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে ভারতের ৮ ভেন্যুতে, শেষ হবে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে ৩ এপ্রিল ফাইনালের মধ্য দিয়ে।
×