ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

একনেক অনুমোদনের পর কেনা হচ্ছে ৯০ কোটি টাকার সরঞ্জাম

আন্তর্জাতিক তিন বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বাড়ছে

প্রকাশিত: ০৪:৩৪, ৮ মার্চ ২০১৬

আন্তর্জাতিক তিন বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বাড়ছে

হামিদ-উজ-জামান মামুন ॥ নিরাপত্তা বাড়ছে দেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোর। এজন্য কেনা হচ্ছে নিরাপত্তা সরঞ্জাম। বিশ্ব চাহিদার আলোকে হযরত শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দর, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিমানবন্দরে বেআইনী বা নাশকতামূলক কার্যক্রম প্রতিরোধে বিমানবন্দরের যাত্রী, ব্যাগেজ ও কার্গো স্ক্রিনিং বা চেকিংয়ের সক্ষমতা বাড়ানো জরুরী হয়ে পড়েছে। যাতে অস্ত্র, বিস্ফোরক বা যেকোন বিপজ্জনক ডিভাইজ, দ্রব্য বা বস্তু প্রবেশ রোধ করা যায়। এ পরিপ্রেক্ষিতে হাতে নেয়া হচ্ছে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা সংক্রান্ত এ প্রকল্পটি। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৯ কোটি ৫৫ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী বৈঠকে প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করার প্রস্তুতি চূড়ান্ত করেছে পরিকল্পনা কমিশন। অনুমোদন পেলে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়ন কাজ শেষ করবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য এসএম গোলাম ফারুক পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে জানান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর গত ১৬ ফেব্রুয়ারি পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসমূহের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য অত্যাবশ্যক যন্ত্রপাতি সংস্থাপন ও প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। এসব বিবেচনায় প্রকল্পটি অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়েছে। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে বিমানের যাত্রী ও মালামাল পরিবহন একটি নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে, যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারণে বিমান পরিবহন ব্যবস্থা নিরাপত্তা রক্ষা করা আকাশ পরিবহন ব্যবস্থায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যাত্রী, মালামাল ক্রু ও সংশ্লিষ্ট লোকদের যথাযথ চেকিং নিশ্চিত করা আকাশ পরিবহনে একটি আবশ্যকীয় উপাদান হিসেবে ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এ্যাভিয়েশন অর্গানাইজেশন (আইসিএও) স্বীকৃত। যুক্তরাজ্য পরিবহন বিভাগের বিশেষজ্ঞ দল সম্প্রতি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা সুবিধাদি পরিদর্শন করে বিমানবন্দরের তল্লাশি ব্যবস্থা উন্নয়নে জোরাল সুপারিশ প্রদান করে। দেশের বিমানবন্দরগুলোর সার্বিক নিরাপত্তা বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গত ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত এক জরুরী সভায় বিমানবন্দরের নিরাপত্তা জোরদারের জন্য একটি প্রকল্প গ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ওই সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য দেশের আধুনিক স্ক্রিনিং টেকনোলজির প্রয়োজনীয়তা পূরণ করা এবং বাংলাদেশের সঙ্গে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জিং রুটসমূহে ফ্লাইট অপারেশন চালু রাখা সম্ভব হবে। এছাড়া বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রী ও কার্গো সুবিধার উন্নয়ন এবং স্ক্রিনিং বা চেকিং কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করা হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট। পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, চলমান সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় বাংলাদেশের বিমানবন্দরসমূহের সেফটি ও সিকিউরিটি সিস্টেম উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণের সংস্থান রয়েছে। তাই এ প্রকল্পটি পরিকল্পনার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বছরভিত্তিক অর্থের চাহিদা দেয়া হয়েছে- চলতি অর্থবছরে ৭০ কোটি ৩৪ লাখ ২১ হাজার টাকা এবং আগামী ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১৯ কোটি ২১ লাখ ৬৩ হাজার টাকা।
×