ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সিংহভাগ অর্থপাচার হয় বাণিজ্যভিত্তিক

প্রকাশিত: ০৩:৪২, ৭ মার্চ ২০১৬

সিংহভাগ অর্থপাচার হয় বাণিজ্যভিত্তিক

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বিদেশে যে অর্থপাচার করা হয় তার সিংহভাগ বাণিজ্যভিত্তিক বলে মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গবর্নর ড. আতিউর রহমান। বর্তমান সময়ে বিভিন্ন সমীক্ষায় টাকা পাচারের যে তথ্য প্রকাশিত হচ্ছে তার উল্লেখ করে তিনি এ মন্তব্য করেন। রবিবার হবিগঞ্জের দ্য প্যালেস লাক্সারি রিসোর্টে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট) আয়োজিত প্রধান মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ পরিপালন কর্মকর্তা সম্মেলন ২০১৬ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। আতিউর রহমান বলেন, বিভিন্ন সমীক্ষায় উঠে এসেছে, বিদেশে পাচারকৃত অর্থের সিংহভাগ হচ্ছে বাণিজ্যভিত্তিক মানিলন্ডারিংয়ের মাধ্যমে। আমি জানতে পেরেছি এ সম্মেলনে আপনাদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংশ্লিষ্ট নীতি নির্ধারণী ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, শিক্ষাবিদ, ব্যবসায়িক প্রতিনিধিগণের সঙ্গে এ বিষয়ে মতবিনিময়ের সুযোগ ছিল। এর ফলে আপনারা আসন্ন ঝুঁকি সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। একইসঙ্গে এসব ঝুঁকি মোকাবেলায় জাতীয় কৌশল নির্ধারণ ও প্রতিরোধে সমন্বিত প্রচেষ্টা গ্রহণ সহজতর হবে বলে আমি মনে করি। মানিলন্ডারিং কিংবা বৈধ পথ ব্যবহার করে দেশ থেকে অর্থপাচার আর্থিক খাতের সবচেয়ে বড় অপরাধ উল্লেখ করে গবর্নর বলেন, এটি দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করে। এর ফলে মানুষ তার সম্পদের অধিকার হতে বঞ্চিত হয়। দেশের সামগ্রিক উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় বিনিয়োগের অভাবে অর্থনৈতিক উন্নতি ব্যাহত হয়। তাই দেশের অর্থ বিদেশে পাচারের গতিরোধ করা একান্ত আবশ্যক। সম্প্রতি সারাবিশ্বেই ডিজিটাল লেনদেনের পরিমাণ বাড়ছে। প্রযুক্তির ফাঁকফোকড় দিয়েও সাইবার অপরাধী চক্র টাকা পাচারে সক্রিয় রয়েছে। বাংলাদেশও এই সাইবার আক্রমণের বাইরে নেই। তাই পুরো আর্থিক খাতকে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় আরও সক্রিয় ও সক্ষম হতে হবে। আরও সুদৃঢ় প্রযুক্তিনির্ভর নিরাপত্তা দেয়াল গড়ে তুলতে হবে। অর্থপাচার রোধে ব্যাংকগুলোর রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। বৈশ্বিক অর্থনীতি যে গতিতে প্রসারিত হচ্ছে, তার চেয়ে বেশি গতিতে বৃদ্ধি সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের আর্থিক অপরাধ বাড়ছে বলেও জানান আতিউর রহমান। তিনি বলেন, অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের মাত্রা বাড়ছে। আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় স্বল্পোন্নত দেশসমূহের কৌশলগত দুর্বলতা এবং উদার অর্থনীতির সুযোগ নিয়ে লন্ডারিংকৃত অর্থ সহজেই বিদেশী বিনিয়োগ হিসেবে ঢুকে পড়ে। আবার খুব সহজেই এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে এসব অর্থ বিদেশে পাচার হয়ে যায়। এসব অবৈধ অর্থ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কোনরূপ ইতিবাচক অবদান রাখতে পারে না। বিএফআইইউ কর্তৃক আয়োজিত বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহের প্রধান মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ পরিপালন কর্মকর্তা সম্মেলন ২০১৬ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গবর্নর ও বিএফআইইউ প্রধান আবু হেনা মোহা: রাজী হাসান, অনুষ্ঠানের সভাপতি বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও বিএফআইইউর উপ-প্রধান মোহাম্মদ নওশাদ আলী চৌধুরীসহ বিভিন্ন ব্যাংকের মান্ডিলন্ডারিং ইউনিটের কর্মকর্তারা।
×