ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

ফেব্রুয়ারিতে বেড়েছে লক্ষ্যমাত্রার আড়াই

৮ মাসে রফতানি আয়ের প্রবৃদ্ধি ৯ শতাংশ

প্রকাশিত: ০৩:৪১, ৭ মার্চ ২০১৬

৮ মাসে রফতানি আয়ের প্রবৃদ্ধি ৯ শতাংশ

রহিম শেখ ॥ দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কারণে রফতানি আয়ে সুবাতাস বইছে। অর্থবছরের ৮ মাসে রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৯ শতাংশ। গত ৫ মাস থেকে রফতানি আয়ে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রয়েছে। একক মাস হিসাবে ফেব্রুয়ারিতে রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৩ দশমিক ৬০ শতাংশ। অর্থবছরের ৮ মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) রফতানি আয় হয়েছে ২ হাজার ২১২ কোটি ৩৭ লাখ মার্কিন ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ২ হাজার ৩১ কোটি ১৭ লাখ ডলার। এ হিসাবে রফতানি আয় বেড়েছে ১৮১ কোটি ২ লাখ ডলার। রবিবার রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রকাশিত রফতানি আয়ের হালনাগাদ পরিসংখ্যান থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। জানা গেছে, চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাই রফতানি আয়ের প্রবৃদ্ধি ছিল নেতিবাচক। সে মাসে আয় কমে যায় ১১ দশমিক ৯৬ শতাংশ। তবে আগস্টে অবস্থার উন্নতি হতে শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় গত নবেম্বর শেষে রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি দাঁড়ায় ৬ দশমিক ৭১ শতাংশ। এ ধারা অব্যাহত ফেব্রুয়ারিতেও অব্যাহত ছিল। প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রফতানি আয় হয়েছে ২৮৫ কোটি ৪২ লাখ ডলার। আর রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৭২ কোটি ১০ লাখ ডলার। সে হিসাবে ফেব্রুয়ারি মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪ দশমিক ৯০ শতাংশ বেশি রফতানি আয় দেশে এসেছে। পাশাপাশি গত বছরের ফেব্রুয়ারির চেয়ে ১৩ দশমিক ৬০ শতাংশ রফতানি বেড়েছে। আগের বছর একই সময়ে রফতানি আয় হয়েছিল ২৫১ কোটি ২৪ লাখ টাকা। বেশ কয়টি পণ্যের রফতানি কমলেও ওভেন ও নিট পোশাকে রফতানি বাড়ায় বাংলাদেশে রফতানি আয় বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রয়েছে। এ প্রসঙ্গে ইপিবির একজন উর্দ্ধতন কর্মকর্তা জনকন্ঠকে বলেন, রফতানি আয়ের সর্বশেষ পরিসংখ্যান খুবই সন্তোষজনক চিত্র প্রকাশ করছে। পোশাক খাতসহ গুরুত্বপূর্ণ বেশকিছু খাতে রফতানি প্রবৃদ্ধি ভাল। তবে কৃষিপণ্যের চিত্র ভাল নয়। পণ্যটির মান নিয়ন্ত্রণ, মোড়কীকরণ ও তালিকাভুক্ত রফতানিকারকদের উন্নয়নের মাধ্যমে এ পরিস্থিতি পর্যায়ক্রমে ভাল করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি এ আট মাসে সর্বোচ্চ রফতানি আয় হয়েছে তৈরি পোশাক খাত থেকে। নিট ও ওভেন মিলিয়ে এ সময় ১ হাজার ৮১ কোটি ডলার রফতানি আয় হয়, যা গেল অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৮ শতাংশ বেশি। অর্থবছরের প্রথম আট মাসে তৈরি পোশাকের নিটওয়্যার খাতে আয় হয়েছে ৮৬৪ কোটি ৩৪ লাখ মার্কিন ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ০ দশমিক ৯৮ শতাংশ বেশি। এটি গেল অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ দশমিক ২১ শতাংশ বেশি। এ সময় ওভেন খাতের পণ্য রফতানিতে আয় হয়েছে ৯৪৮ কোটি ৪২ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪ দশমিক ২১ শতাংশ বেশি। এটি গেল অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১২ দশমিক ৭৩ শতাংশ বেশি। গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারির তুলনায় চলতি অর্থবছরের ৮ মাসে হিমায়িত খাদ্য রফতানি আয় ১৩ দশমিক ২৫ শতাংশ কমেছে। এ বিষয়ে হিমায়িত খাদ্যসংশ্লিষ্ট রফতানিকারকদের সংগঠন বিএফএফইএর সভাপতি এসএম আমজাদ হোসেন বলেন, চিংড়ি ও হিমায়িত মাছ রফতানি আয়ে আগামীতে আরও বড় ধস নামার আশঙ্কা রয়েছে, যার প্রধান কারণ ইউরোপে মুদ্রার অবমূল্যায়ন। এ খাতে প্রায় ৮৫ শতাংশ রফতানি আয় আসে ইউরোপ থেকে। আর এ অঞ্চল থেকে প্রায় ৪০ শতাংশ দাম কম পেয়েছি আমরা; যার প্রভাব দেখা যাচ্ছে রফতানি আয়ে। ইপিবির প্রতিবেদনে দেখা যায়, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১ দশমিক ৭৫ শতাংশ, রাবার ও রাবার পণ্য রফতানিতে ৩২ দশমিক ০৮ শতাংশ, ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য রফতানি ২৫ দশমিক ৪২ শতাংশ, কাঠ ও কাঠজাত পণ্য রফতানিতে ৬৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ, অন্যদিকে, কৃষি পণ্যে রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি কমেছে ১২ দশমিক ৯৮ শতাংশ, প্লাস্টিক পণ্য রফতানি ১৩ দশমিক ৬১ শতাংশ, পশম ও পশমি জাতীয় পণ্যে ৯১ . ৯৫ শতাংশ, পাট ও পাটজাত পণ্যে ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ, হোম টেক্সটাইল খাতে ৬ দশমিক ২৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি কমেছে।
×