ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ক্যারিয়ার ॥ ড্রপ-আউট! তবে...

প্রকাশিত: ০৩:১২, ৭ মার্চ ২০১৬

ক্যারিয়ার ॥ ড্রপ-আউট! তবে...

ঢাকায় আমরা একটি ছোট সফটওয়্যার কোম্পানি তৈরির কাজে হাত দিয়েছি। টার্গেট হলো, ভাল মানের সফটওয়্যার বানানো যা মানুষের কাজে লাগবে। সেই কারণে ভাল সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার খুঁজে বের করা একটি বড় কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায় প্রতি সপ্তাহেই ইন্টারভিউ করা হচ্ছে এবং কাউকে পছন্দ হলে তাকে দলে নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার খুঁজতে গিয়ে যে বিষয়টি নজরে পড়ল, ঢাকায় অনেক ছাত্রছাত্রী আছে যারা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ড্রপ-আউট। গেল সপ্তাহেই একটি ছেলেকে আমাদের টিমের সবাই খুব পছন্দ করেছে। কিন্তু শেষ পর্যায়ে গিয়ে দেখা গেল, ছেলেটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ড্রপ-আউট। লেখাপড়া এখনও শেষ করেনি। তবে ৩-৪ বছর ধরে কাজ করছে। আমরা তাকে নিতে পারিনি। এমন যে একটি ঘটনা তা নয়। এই বিগত কয়েক মাসেই বেশকিছু ছাত্রকে পেলাম যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেখাপড়া শেষ করে ডিগ্রী নেয়নি। এর কারণটি কি জানার চেষ্টা করলাম। অনেকেই অনেক কারণে লেখাপড়া শেষ করছে না। একটি বড় অংশ হলো, ছাত্রাবস্থায়ই উপার্জন করার সুযোগ তৈরি হয়ে গেছে। বিশেষ করে আউটসোর্সিং করে তারা অনেক টাকা উপার্জন করতে পারে। ফলে অনেকেরই টাকা উপার্জনের দিকে মন চলে যায়। লেখাপড়া কম গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। ড্রপ-আউট হয়ে যায়। এবং তার যে কোর্সওয়ার্ক করার কথা, যেই বিষয়গুলো শেখার কথা, সেটা আর হয়ে ওঠে না। যারা কম্পিউটার বিজ্ঞানে লেখাপড়া করে, তাদের জন্য আউটসোর্সিং করা খুব সহজ। তারা দেশের বাইরে (ইন্টারনেটের মাধ্যমে) যেমন কাজ খুঁজে পেতে পারে, আবার দেশের ভেতরও অন্যদের সঙ্গে কাজ করে (যারা বাইরের কাজটি দেশে বসে করার ব্যবসা নিয়েছে) বেশ ভাল উপার্জন করতে পারে। ফলে হাতে কাঁচা পয়সা চলে আসে। ওই বয়সে মনে হতে পারে, জীবনের উদ্দেশ্য তো টাকা উপার্জন করাই। তো সেটা বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকে শুরু হলেই বা ক্ষতি কি? পাশাপাশি কেউ কেউ নিজে নিজে প্রতিষ্ঠান দিতে শুরু করে। তারা সেই কাজে অনেকটা সময় কাটিয়ে দেয়। মনে মনে স্বপ্ন দেখে বিল গেটস হয়ে যাবে। নয় তো মার্ক জাকারবার্গ। তাই তাদের মতো বিশ্ববিদ্যালয় ড্রপ-আউট হলে সমস্যা তো নেই। সেটা বরং ফ্যাশন; খ্যাতির বিষয়। তারা আর লেখাপড়াটা শেষ করতে পারে না। কেউ কেউ সার্টিফিকেট সংগ্রহের জন্য প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে থাকে। সেমিস্টার গুনে ফি দেয়। সার্টিফিকেটটা নিয়ে টেবিলের তলায় রেখে দেয় যে, তার একটা ডিগ্রী আছে। লেখাপড়ায় তার বিন্দুমাত্র আগ্রহ তো নেই-ই, বরং চরম অভক্তি। তারা বিশ্বাস করে, সার্টিফিকেটটা নিয়ে রাখি। যদি কখনও কাজে লেগে যায়। আমি কয়েকজন সহকর্মীকে জিজ্ঞেস করি, বাংলাদেশে এই ড্রপ-আউটের সংখ্যা কেমন? সহকর্মীরা বলে, খারাপ না। আশপাশে অনেক পাওয়া যাবে। অনেকেই আবার মা-বাবার কষ্টার্জিত টাকায় সেমিস্টারের পর সেমিস্টার টাকা খরচ করে যাচ্ছে, কিন্তু ভালভাবে লেখাপড়া শেষ করছে না। তারা নিজেদের উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরি করার চেষ্টা করছে। দেশে এখন ঘরে ঘরে উদ্যোক্তা তৈরির হিড়িক। সেই মিছিলে যোগ দিতে চাইবে না কে! রাতারাতি যদি মার্ক জাকারবার্গ হওয়া যায়, সেই সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইবে কে? এমন ড্রপ-আউট ছেলেমেয়ে দেখলে আমার বেশ মন খারাপ হয়। আমার সঙ্গে কাজ করে শামসিল আরেফিন। বুয়েটে আমার বিভাগেরই ছাত্র। অসম্ভব মেধাবী এবং কমিটেড ছেলে। মানুষ হিসেবেও চমৎকার। এই দেশে যদি ভাল মানুষের একটা তালিকা করা হয় তাহলে আরেফিনের নাম সেখানে ওপরের দিকে থাকবে। একদিন আরেফিনকে বললাম, ড্রপ-আউটদের কি আমরা নিব? আরেফিন হাসতে হাসতে উত্তর দেয়। বলে, ভাইয়া এই ব্যাপারে আমার একটা থিওরি আছে। আমি উৎসাহ নিয়ে জিজ্ঞেস করি, বলো তো থিওরিটা। আরেফিন বলে, শুধু ড্রপ-আউট হলেই হবে না; দেখতে হবে কোথা থেকে ড্রপ-আউট। আমাদের দেশের ছেলেরা ড্রপ-আউট বললে মনে করে স্মার্ট। কিন্তু তারা বুঝতে পারে না, এটা হার্ভার্ড থেকে ড্রপ-আউট, নাকি ঢাকার কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ড্রপ-আউট। আরেফিনের কথায় আমার চোখ খুলে যায়। ॥ দুই ॥ বাংলাদেশের ছেলেমেয়েরা বুঝতে পারে না, বিল গেটস কিংবা মার্ক জাকারবার্গ হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ড্রপ-আউট ছিলেন। এই গ্রহের কিছু কিছু কম্পিউটার জিনিয়াস বিশ্ববিদ্যালয়ের লেখাপড়া শেষ করেননি বটে, তবে তারা সত্যিকার অর্থেই জিনিয়াস এবং স্মার্ট। তবে সকল জিনিয়াসরা যেমন ড্রপ-আউট নন, আবার ড্রপ-আউট হলেই তিনি জিনিয়াস নন। এটা একান্তই ব্যক্তি বিশেষের ওপর নির্ভর করছে। বাংলাদেশের ছেলেমেয়েরা যদি সেটা না বুঝেই মনে করেন তারাও বিল গেটসের মতো ড্রপ-আউট হয়ে পৃথিবীকে পাল্টে দেবেন, তাহলে বিশাল ভুল করা হবে। বিল গেটসের উদাহরণ যেহেতু এলোই, তাহলে দেখে নেয়া যাক কেমন স্মার্ট বিল গেটস। এখনও তিনি বিশ্বের সবচেয়ে ধনী মানুষ, যার সম্পদের পরিমাণ ৮৭ বিলিয়ন ডলার। কেউ কেউ মনে করতে পারেন, বিল গেটসের ভাগ্য সুপ্রসন্ন; তাই সবকিছু তার কপালে চলে এসেছে। কিন্তু বিষয়টি মোটেও তা নয়। মাইক্রোসফটকে এই পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্য তাকে প্রচুর শত্রুও তৈরি করতে হয়েছে। সেই গল্প হয়তো আমরা অনেকেই জানি না। ১৯৫৫ সালের ২৮ অক্টোবরে জন্ম নেয়া বিল গেটসের বাবা ছিলেন আইনজীবী, আর মা ছিলেন বিখ্যাত ব্যাংকার এবং তার মা সেই সময়ে আইবিএমের সিইও জন ওপেলের সঙ্গে একটি বোর্ডে একসঙ্গে কাজ করতেন। পারিবারিক এই অবস্থান তাকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সহজে প্রবেশাধিকার দিয়েছিল, যা একটি সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব ছিল না। তার অর্থ কিন্তু এই নয় যে, বিল গেটস মা-বাবার সহযোগিতায় বড় হয়েছেন। মূল বিষয়টি হলো, তিনি পরিবার থেকেই অনেক কিছু অন্য অনেকের চেয়ে আগেই শিখে ফেলেছিলেন। তার মা-বাবা তাকে আইনজীবী বানানোর জন্য চেষ্টা করছিলেন এবং ছোটবেলায় তাকে সিয়াটলের একটি প্রাইভেট স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন, যেখানে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয় মাইক্রোসফটের আরেক প্রতিষ্ঠাতা পল এলেনের সঙ্গে। বাংলাদেশে প্রাইভেট স্কুলে লেখাপড়া যেমন ব্যয়সাপেক্ষ বিষয়, আমেরিকার প্রাইভেট স্কুলে লেখাপড়ার খরচ তুলনামূলকভাবে আরও অনেক বেশি। বিল গেটসের মা-বাবা সেই পরিমাণ টাকা খরচ করছিলেন। এবং বিল গেটসের পরবর্তী পার্টনার পল এলেনও ধনী পরিবারের সন্তান। সেই স্কুলে ওই সময়ই ছাত্রছাত্রীদের জন্য কম্পিউটার ছিল যা জেনারেল ইলেক্ট্রিকের মেইনফ্রেমের সঙ্গে যুক্ত ছিল। ওই সময়েই বিল গেটস কম্পিউটারের প্রেমে পড়েন। পল এলেন এবং বিল গেটস তখনই স্কুলের কম্পিউটার সিস্টেমের খুত বের করে বাড়তি সময়ে কম্পিউটার ব্যবহার করতেন। সেটা ধরা পরে গেলে তাদের স্কুলের কম্পিউটার ল্যাব ব্যবহার থেকে ব্যান করা হয়। সেই স্কুলের ক্লাস রুটিন করা হতো কম্পিউটারে। বিল গেটস তখন হ্যাক করে ক্লাসের রুটিন এমনভাবে পরিবর্তন করে দিতেন যেন সবচেয়ে সুন্দরী মেয়েরা তার ক্লাসে পড়ে। স্কুল ছাড়ার আগেই পল এলেন এবং বিল গেটসের প্রথম কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যার নাম ছিল ট্রাফট-ও-ডাটা। যদিও ওই প্রতিষ্ঠানটি খুব একটা ভাল করেনি, তবে ওটার শিক্ষাই পরবর্তীতে মাইক্রোসফট তৈরিতে কাজে লেগেছিল। ১৯৭৩ সালে এসএটি (ঝঅঞ) পরীক্ষায় ১৬০০ নম্বরের ভেতর ১৫৯০ নম্বর পেয়ে বিল গেটস হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। যদিও তিনি কোন বিষয়ে লেখাপড়া করবেন সেটা ঠিক করে উঠতে পারেননি, তবে বেশিরভাগ সময়ই তিনি কম্পিউটার নিয়ে নানান রকমের কা-কারখানা করতেন। একবার ভেবে দেখুন তো, ১৫৯০ মার্ক পাওয়া কতটা কঠিন। (তবে ২০১৩ সালে ভারতীয় বংশোদ্ভূত ক্যালিফোর্নিয়ার ১৪ বছরের বালক ‘বরুন জেইন’ পুরো পারফ্যাক্ট স্কোর পেয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে।) ওই রকম স্কোরের কাছে আমাদের অবস্থানটা কোথায়? ১৯৭৪ সালেই পল এলেন এবং বিল গেটস মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ‘বেসিক’ প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ লিখে সেটা বিক্রি করেন। এটাই তার জীবনকে পাল্টে দেয়। হার্ভার্ড ছেড়ে তারা চলে যান আল বুকারকি নামের একটি শহরে। লেখাপড়া ওখানেই সমাপ্তি। হয়ে যান হার্ভার্ড ড্রপ-আউট। আমাদের দেশে যারা লেখাপড়া ছেড়ে দিচ্ছেন, তাদের কতজনের এমন প্রতিভা এবং ক্ষমতা রয়েছে? ॥ তিন ॥ শুধু ভাল ছাত্র হিসেবেই নয়, ভাল বিজনেস এক্সিকিউটিভ হিসেবেও বিল গেটসের খ্যাতি রয়েছে। ১৯৮০ সালে আইবিএম যখন তাদের পারসোনাল কম্পিউটার সিস্টেম বাজারে ছাড়ার প্রস্তুত নেয় তখন তাদের একটি অপারেটিং সিস্টেমের প্রয়োজন হয়। মাইক্রোসফট সেটা ৫০ হাজার ডলারের বিনিময়ে তৈরি করে দেয়। তবে আইবিএম সেটার কপিরাইট দাবি করার কথা ভাবেনি; আর মাইক্রোসফটও সেটা অফার করেনি। পরবর্তীতে সেই ডিস্ক অপারেটিং সিস্টমই (ডস) মাইক্রোসফট সবার জন্য বিক্রি করতে শুরু“করে। ১৯৮৩ সালে মাইক্রোসফটের আয় ছিল ৫৫ মিলিয়ন ডলার। তখনই তা সবচেয়ে বড় কম্পিউটার কোম্পানিতে রূপ নিয়ে ফেলে। ১৯৮৬ সালে মাইক্রোসফট পাবলিকে যায় (প্রতি শেয়ার মূল্য ২১ ডলার)। দিনের শেষে তা উঠে যায় ২৮ ডলারে। ১৯৮৭ সালেই বিল গেটস মাত্র ৩১ বছর বয়সে বিলিয়নিয়ার হয়ে যান। আর ১৯৯৫ সালে তিনি হয়ে যান বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি। ২০০৭ সাল পর্যন্ত এক টানা সেটা ধরে রাখেন। ২০০৯ এবং ২০১৪ সালে আবার সেটা ফিরে পান। এখনও তাই আছে। আমরা টিভি কিংবা মিডিয়াতে যেই বিল গেটসকে দেখি, মাইক্রোসফটের কর্মীরা সেই বিল গেটসকে দেখতে পান না। তাদের কাছে তিনি এক ভিন্ন বিল গেটস। তার এনার্জি, বুদ্ধিমত্তা, প্যাশন এবং জটিল বিষয়কে খুব সহজভাবে সমাধান করার যে ক্ষমতা রয়েছে, তা বিরল। তবে তার কাছের মানুষরা বিভিন্ন সময়ে বলেছেন, বিল গেটস খুবই কঠিন মানুষ। তিনি সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পছন্দ করেন এবং প্রথম দিকে অন্য কর্মীদের লেখা কোড লাইনের পর লাইন নিজে পড়ে দেখতেন। তিনি তার সহকর্মীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতেন এবং প্রয়োজনে খুব খারাপ গালি কিংবা শব্দও ব্যবহার করতেন। প্রায়ই কোন মিটিংয়ে গিয়ে সরাসরি বলতেন, ‘এমন স্টুপিড বিষয় আমি সারাজীবনে শুনিনি।’ একইভাবে তিনি কঠিন নেগশিয়েটর হিসেবে বিখ্যাত। তার বন্ধু পল এলেনকে নিয়ে যখন ব্যবসা শুরু করেন, তখন তিনি এমনভাবে নেগশিয়েট করেছিলেন যে, পলকে খুব সামান্য শেয়ার দিয়েছিলেন। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে নেগোশিয়েশনের কাজটি বেশিরভাগ সময় বিল গেটস নিজে করতেন। কঠিন পরিশ্রমী মানুষ তিনি। সারারাত জেগে কাজ করার অনেক উদাহরণ রয়েছে। একবার একজন সেক্রেটারি সকালে নতুন চাকরিতে যোগ দিয়ে দেখেন যে বিল গেটস মাটিতে ঘুমিয়ে আছেন। তিনি ভেবেছিলেন বিল গেটস হয় অচেতন হয়ে পড়ে আছেন। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যেই মেঝে থেকে উঠে তিনি জানালেন যে, গত দুদিন উইকএ্যান্ডে দিন-রাত একটানা কাজ করেছেন, এখন একটু বিশ্রাম নিয়ে নিলেন। উল্টা-পাল্টা গাড়ি চালানোর অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। একবার পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল। মাইক্রোসফট তৈরির প্রথম দিকে তিনি এতবেশি জরিমানা খেয়েছিলেন যে, তার কোর্ট-কাচারি করতে বিশেষ আইনজীবী নিয়োগ দিতে হয়েছিল। এতকিছুর পরেও, এত সম্পদের অধিকারী বিল এবং তার স্ত্রী মিলেন্ডা গেটস মানুষের সেবায় নেমেছেন। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফাউন্ডেশনটি পরিচালনা করেন তারা। সঙ্গে নিয়েছেন আরেক ধনকুবের ওয়ারেন্ট বাফেটকে। তারা দরিদ্র দেশগুলোতে পানির সমস্যা, স্বাস্থ্যের সমস্যা, ক্ষুধার সমস্যা এবং জ্বালানির সমস্যা সমাধানে কাজ করে যাচ্ছেন। তোমরা যারা লেখাপড়া বাদ দিয়ে বিল গেটসের মতো হতে চাও, তাদের যেন বাকিটুকুও দেখার মতো চোখ থাকে। এই দেশে অনেক ব্রিলিয়ান্ট মানুষ লেখাপড়ার গ-ি পার হতে না পেরে সবশেষে কিছুই দিতে পারেনি এই দেশকে, এই সমাজকে। যাদের মাথায় ড্রপ-আউটের চিন্তা আছে, তাদের জীবনটা যেন তেমনটা হয়ে না যায়। অনেকেই হয়ত বলবে, তাহলে কি আমরা কেরানির চাকরি করব? উদ্যোক্তা হব না? অবশ্যই হবে। তবে প্রথমেই বুঝতে হবে, সব চাকরি কেরানির চাকরি নয়। প্রফেশনালভাবে ভাল সেবা দিতেও প্রচ- যোগ্যতার প্রয়োজন হয়। পাশাপাশি উদ্যোক্তা হিসেবে নতুন কিছু তৈরি করতেও যথেষ্ট ইনোভেটিভ এবং এক্সিকিউটিভ যোগ্যতার প্রয়োজন হয়। সেগুলো না থাকলে হুজুগে মাতাল হয়ে লেখাপড়া ছেড়ে দিলে একটা সময়ে গিয়ে আটকে যেতে হতে পারে। জীবনে যেটা করতে চেয়েছিলে সেটা আর করা হয়ে উঠল না। তখন আবার আরেক ধরনের হতাশা কাজ করবে। সেটা যেন না হয়। গুড লাক। লেখক : তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ এবং সম্পাদক, প্রিয়.কম ুং@ঢ়ৎরুড়.পড়স
×