ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

সাত লেখককে সিটি-আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কার প্রদান

প্রকাশিত: ০৬:০১, ৬ মার্চ ২০১৬

সাত লেখককে সিটি-আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কার প্রদান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রতিবছর অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত হয় কয়েক হাজার বই। সেই হিসাবে এ বছরও বাংলা একাডেমির তথ্য অনুযায়ী বেরিয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার গ্রন্থ। তবে এত রাশি রাশি বইয়ের মাঝে ভাল বইয়ের সংখ্যা থাকে খুবই স্বল্প। এই গড্ডালিকা প্রবাহের মাঝেও প্রতি গ্রন্থমেলাতেই প্রকাশিত হয় পাঠক সমাদৃত কিছু মানসম্পন্ন বই। তেমন সাতটি সমৃদ্ধ বইয়ের জন্য নবীন-প্রবীণ সাত লেখককে প্রদান করা হলো সিটি-আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কার ২০১৬। শনিবার চ্যানেল আই ভবনে উৎসবমুখর পরিবেশে অষ্টমবারের মতো লেখকদের হাতে এ পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। সদ্য সমাপ্ত অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত সেরা বইয়ের জন্য দেয়া হয় এ পুরস্কার। ‘ক’ শাখায় পুরস্কার দেয়া হয়েছে ছয় জ্যেষ্ঠ লেখককে এবং ‘খ’ শাখায় জীবনের প্রথম বইয়ের জন্য পুরস্কার পেয়েছেন এক নবীন লেখক। এবার ‘ক’ শাখায় প্রবন্ধ, আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা বিভাগে পুরস্কার পেয়েছেন দুই লেখক আবুল মাল আবদুল মুহিত ও মুনতাসীর মামুন। চন্দ্রাবতী একাডেমি থেকে প্রকাশিত হয়েছে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের ‘সোনালি দিনগুলি’ এবং জার্নিম্যান থেকে বেরিয়েছে মুনতাসীর মামুনের ‘ঢাকার খাল পোল ও নদীর চিত্রকর’। একই শাখায় কথাসাহিত্যের পুরস্কার পেয়েছে কথাপ্রকাশ থেকে প্রকাশিত সেলিনা হোসেনের উপন্যাস ‘নিঃসঙ্গতার মুখর সময়’। শিশুসাহিত্যে অন্যপ্রকাশ থেকে প্রকাশিত ‘নির্বাচিত ১০০ ছড়া’ গ্রন্থের পুরস্কার পেয়েছেন আসলাম সানী। কবিতায় যৌথভাবে দুই কবিকে দেয়া হয়েছে পুরস্কার। সময় ও চৈতন্য থেকে প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ দুটি হলো পিয়াস মজিদের ‘কবিকে নিয়ে কবিতা’ ও মুজিব ইরমের ‘শ্রীহট্টকীর্তন’। জীবনের প্রথম বইয়ের জন্য ‘খ’ শাখায় পুরস্কার পেয়েছেন তরুণ লেখক এহ্সান হাফিজ। জনান্তিক থেকে প্রকাশিত তাঁর গ্রন্থটির শিরোনাম ‘এ ও সে ও’। তেজগাঁওয়ের চ্যানেল আই ভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে লেখকদের হাতে পুরস্কারের অর্থমূল্য ও স্মারক তুলে দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ও পুরস্কার প্রদান কমিটির বিচারক শামসুজ্জামান খান, চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর এবং সিটি ব্যাংক এনএর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এইচ আসলাম হাবীব। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আনন্দ আলো সম্পাদক রেজানুর রহমান। পুরস্কারপ্রাপ্তির অনুভূতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন সাত লেখক। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ছড়াকার লুৎফর রহমান রিটন। শামসুজ্জামান খান বলেন, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের এ বয়সে ১০ খ-ের একটি বই লেখা আমাকে অবাক করেছে। অন্যদিকে সেলিনা হোসেন ও মুনতাসীর মামুন হচ্ছেন পাঠক সমাদৃত লেখক। তিনি আরও বলেন, এই পুরস্কারটি লেখকের মানোন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। আমার প্রত্যাশা, অসংখ্য বই লেখার চেষ্টা না করে লেখকরা যেন একটি হলেও ভাল লেখার চেষ্টা করেন। পুরস্কারপ্রাপ্তির অনুভূতি প্রকাশ করে আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, স্ত্রীর কাছ থেকে এই পুরস্কারপ্রাপ্তির খবরটি প্রথম জানতে পারি। আমার জন্য এটা অত্যন্ত আকর্ষণীয় একটি স্বীকৃতি। এই পুরস্কারটি আমাকে অভিভূত করেছে। দ্বিতীয়বারের মতো প্রবন্ধ বিভাগে এই পুরস্কারপ্রাপ্তির অনুভূতি প্রকাশ করে মুনতাসীর মামুন বলেন, যে কোন পুরস্কারই আনন্দিত করে লেখককে। কারণ এই পুরস্কারপ্রাপ্তি হচ্ছে লেখকের জন্য এক ধরনের স্বীকৃতি। আর আমি হচ্ছি সেই লেখক যে কিনা একই পুরস্কার দ্বিতীয়বারের মতো গ্রহণ করছি। পুরস্কারটির সঙ্গে অর্থমূল্য যুক্ত থাকায় আমিও অভিভূত হয়েছি। পুরস্কারটি উৎসর্গ করলাম আমার সহধর্মিণীকে। অনুভূতি প্রকাশ করে সেলিনা হোসেন বলেন, একজন লেখকের জন্য পুরস্কার হচ্ছে অনুপ্রেরণার উৎস। এছাড়া পুরস্কারপ্রাপ্তির মর্যাদার বিষয়টিও আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আরও বলেন, প্রবীণ লেখকদের পাশাপাশি নবীন লেখকদের এই পুরস্কার প্রদান মূলত এগিয়ে নেবে সাহিত্যের স্রোতকে। পুরস্কারপ্রাপ্ত নবীন লেখক এহসান হাফিজ তাঁর পুরস্কারটি উৎসর্গ করেন প্রয়াত বরেণ্য ইতিহাসবিদ অধ্যাপক সালাহউদ্দিন আহমেদকে। ‘ক’ শাখায় প্রতিটি পুরস্কারের জন্য ৩০ হাজার টাকা ও একটি স্মারক এবং ‘খ’ শাখায় পুরস্কারের মূল্যমান ১০ হাজার টাকার সঙ্গে একটি স্মারক প্রদান করা হয় লেখকদের। শহীদ মিনারে পথনাটক উৎসব ॥ মুক্তিযুদ্ধের তথ্য বিকৃতিকারীদের ক্ষমা নাই/ষড়যন্ত্রকারীদের বিচার চাই সেøাগানে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চলছে বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদ আয়োজিত পথনাটক। উৎসবের ষষ্ঠ দিন আজ রবিবার পরিবেশিত হবে ছয়টি পথনাটক। কাল সোমবার সমাপনী আয়োজনে নাট্য প্রদর্শনী ছাড়াও থাকছে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ স্মরণে বিশেষ আলোচনা সভা। প্রদর্শনীর সময়সূচী বিকেল ৫টা। ভঙ্গা-গড়া নাট্যোৎসবে সরগরম মহিলা সমিতি মঞ্চ ॥ এমনিতেই জমজমাট থাকে নাটক সরণি নামে পরিচিত বেইলি রোড। মহিলা সমিতি মঞ্চের নবযাত্রায় যেন পুনরায় সরগরম হয়ে উঠেছে এলাকাটি। এখানে চলছে গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন আয়োজিত মাসব্যাপী ভাঙ্গা-গড়া নাট্যোৎসব। ‘মঞ্চে নাটক দেখুন, ঐতিহাসিক মহিলা সমিতি মঞ্চে আসুন’ সেøাগানে চলমান উৎসবের সপ্তম দিন ছিল শনিবার। এদিন নাগরিক নাট্যাঙ্গন বাংলাদেশ পরিবেশন করে দলের ২০তম প্রযোজনা ‘গহর বাদশাহ ও বানেছা পরী’। গিলামাইট বনে বিশ্বিং বাদশার শিকার করতে যাওয়া দিয়ে গল্পের শুরু। শিকারের একপর্যায়ে হরিণশাবকের দিকে তীর ছোড়েন বাদশা। মানবসন্তানের কান্নায় তিনি বুঝতে পারেন, চরম ভুল হয়ে গেছে। অভিশাপ নিয়ে রাজ্যে ফেরেন তিনি। এর মধ্যে পুত্র সন্তান ঘরে আসে তার। রাজ্যজুড়ে যখন আনন্দের বন্যা, বাদশার মনে সন্তান হারানোর ভয়। মঞ্চ থেকে শোনা যায় গান ‘দিন যায় যায় যায় যায় দিন যায়/বছর ঘুরে গাছের পাতা রং যে বদলায়/রানী কাঁদে রাজা কাঁদে কাঁদে সারা বন/অন্ধকূপে বন্দী হলো গহর সনাতন।’ পুত্রকে প্রাসাদের বাইরে যেতে দেন না রাজা। কিন্তু শত আয়োজনেও বাদশাহ কি আটকে রাখতে পারে তার নিয়তি! নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে শেষ পরিণতির দিকে এগিয়ে যায় দক্ষিণাঞ্চলের লোকগাথা অবলম্বনে পালাটি। নাট্যরূপ ও নির্দেশনা ছিলেন হৃদি হক। সেই সঙ্গে বানেছা পরী চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। দালিলিক নিদর্শন মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড রেজিস্ট্রারে অন্তর্ভুক্তিবিষয়ক বৈঠক ॥ বাংলাদেশের দালিলিক নিদর্শন ইউনেস্কোর মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড রেজিস্ট্রারে অন্তর্ভুক্তি বিষয়ে শনিবার জাতীয় জাদুঘরের বোর্ড অব ট্রাস্টিজ সভাকক্ষে গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আবদুল মমিন চৌধুরী, প্রতœতত্ত্ব অধিদফতরের মহাপরিচালক মোঃ আলতাফ হোসেন, জাতীয় আর্কাইভস ও গ্রন্থাগারের পরিচালক ড. অদুদুল বারী চৌধুরী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান, ড. লুভা নাহিদ চৌধুরী, ইউনেস্কো বাংলাদেশ জাতীয় কমিটির সচিব মনজুরুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব ড. মোহাম্মদ আলী খান এনডিসি, অধ্যাপক ড. ফকরুল আলম ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক, রাজশাহী বরেন্দ্র রিচার্স মিউজিয়ামের উপপ্রধান সংরক্ষণ কর্মকর্তা আব্দুল কুদ্দুছ। সভাপতিত্ব করেন জাদুঘর বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি এম. আজিজুর রহমান।
×