ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ফাইনালের টিকেট নিয়ে তুলকালাম

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ৬ মার্চ ২০১৬

ফাইনালের টিকেট নিয়ে তুলকালাম

মোঃ মামুন রশীদ ॥ ঐতিহাসিক এক অর্জনের সামনে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট। টি২০ ফরমেটের যেকোন টুর্নামেন্টে প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ দল। আজ ফাইনালে ভারতীয় দলকে হারাতে পারলেই দেশের জন্য দারুন এক গৌরব বয়ে আনবে টাইগাররা। বাংলাদেশের মানুষ এমনিতেই ক্রিকেট পাগল এবং অন্যরকম এক আবেগের স্থান নিয়ে নিয়েছে ষোলো কোটি মানুষের হৃদয়ে। আর সেজন্যই ফাইনালে মাঠে থেকে ঐতিহাসিক ম্যাচে দলকে সমর্থন দিতে চান ১৬ কোটি মানুষই! অথচ মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতা সবমিলিয়ে ২৫ হাজার! আর টিকেট যেভাবে সোনার হরিণ হয়ে গেছে, এমন একটি ফাইনালের জন্য ২৫ লাখ টিকেট থাকলেও চাহিদাটা শেষ হবে না। এমনটাই দেখা গেছে শনিবার ফাইনালের টিকেট ছাড়ার পর। টিকেট বিক্রির দায়িত্বে থাকা ইউসিবি ব্যাংক অবশ্য শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্তই তালাবদ্ধ থাকে। অথচ শুক্রবার সকাল থেকেই মিরপুর ১০ নম্বর শাখার সামনে বিশাল লাইন হয়ে যায় টিকেটপ্রত্যাশীদের। ব্যাংক নির্দিষ্ট সময়ে খোলা না হওয়াতে সবারই মনে শঙ্কা দেখা দেয় টিকেট না পাওয়ার। শেষ পর্যন্ত হয়ত আবার কালোবাজারীদের শরণাপন্ন হতে হবে! টিকেট বিক্রি শুরু না হওয়াতে সেই শঙ্কাটা দর্শকদের মনে আসন গেড়ে যায়। আর তাতেই বেঁধে যায় সংঘর্ষ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে টিকেটপ্রত্যাশীদের। শেষ পর্যন্ত বিকেলে টিকেট বিক্রি শুরু হলেও একঘণ্টায় শেষ হয়ে যায় টিকেট! ব্যাংক কর্মকর্তারা জানিয়ে দেন, বিক্রির জন্য মাত্র ৩ হাজার টিকেট দেয়া হয়েছিল! তাহলে বাকি টিকেট গেল কোথায়? নিশ্চয় আগের ম্যাচগুলোর মতো কালোবাজারীদের দেখা যাবে সোনার দামে স্বল্পমূল্যেরও টিকেট বিক্রি করতে আর সাধারণ দর্শকরা চাতকের মতো অপেক্ষা করবেন স্টেডিয়াম এলাকায় জনসমুদ্র গড়ে দাঁড়িয়ে থেকে। ব্যাংক খোলার একদিন আগেই মিরপুর ১০ নম্বরে অবস্থিত ইউসিবি ব্যাংকের শাখায় ভিড় জমাতে থাকেন সাধারণ দর্শকরা। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে কয়েক হাজার তরুণ-যুবা হাজির হন। বিশাল লাইন হয়ে গেছে শুক্রবার সকাল থেকেই। অথচ শনিবার সকালে ব্যাংক খোলার কোন নামগন্ধ নেই। খেলা চলাকালীন সাধারণ ছুটির দিনেও টিকেট বিক্রির জন্য ব্যাংক খোলা রাখা হয়। কিন্তু এদিন না খোলার কারণটা পরে ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান। দুপুরে জানানো হয় টিকেট বিক্রি হবে না! এর আগেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে উত্তেজিত টিকেটপ্রত্যাশী ক্রিকেটপ্রেমীদের সংঘর্ষ বেঁধে যায়। লাঠিচার্জের পর আবার টিকিট-প্রত্যাশীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ এ সময় কাঁদানে গ্যাসের শেলও ছোড়ে এমনকি টহল পুলিশের জলকামানও আনা হয়। সংঘর্ষে পুলিশ সদস্যসহ এ সময় ১৫জনের মতো আহত হন। পরে ইউসিবি ব্যাংকের প্রধান শাখায় আলোচনা করে জানানো হয়, ৩ হাজার টিকেট বিক্রি হবে। কিন্তু বিকেলে তা শুরুর ১ ঘণ্টার মধ্যেই শেষ হয়ে যায়। পুলিশ প্রহরায় ১০ জন করে টিকেটপ্রত্যাশীকে ব্যাংক অভ্যন্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রথম ম্যাচে ভারতের কাছে হারলেও টানা তিন ম্যাচে আরব আমিরাত, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জিতে ফাইনালে ওঠে বাংলাদেশ। পাকদের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচেই টিকেট ছিল সোনার হরিণের মতো। হাজারো টিকেটপ্রত্যাশী সাধারণ দর্শক বঞ্চিত হয়েছেন টিকেট পেতে। তবে কালোবাজারীদের হাতে বুধবার ম্যাচের দিন টিকেট দেখা গেছে স্টেডিয়াম এলাকায়। তা বিক্রি হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নাকের ডগায় ১০/১২ গুণ বেশি মূল্যে। তবে সেটা নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) থেকেছে নির্লিপ্ত।
×