ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ইউপি নির্বাচন নিরপেক্ষ করতে ইসির একগুচ্ছ নির্দেশ

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ৬ মার্চ ২০১৬

ইউপি নির্বাচন নিরপেক্ষ করতে ইসির একগুচ্ছ নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আসন্ন ইউপি নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে নির্বাচনী দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষতা বজায় রাখা, প্রার্থীদের আচরণবিধি মেনে চলতে বাধ্য করা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাসহ মাঠ পর্যায়ে একগুচ্ছ নির্দেশনা পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও মনিটরিংয়ের জন্য বিভিন্ন পর্যায়ে কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়াও ভোটের দিন ভোটাররা যাতে নির্ভয়ে ও স্বচ্ছন্দে ভোটকেন্দ্রে আসতে পারেন তার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিবিড় টহলদানের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের উপসচিব মোঃ শামসুল আলম স্বাক্ষরিত নির্দেশনা মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের কাছে সম্প্রতি পাঠানো হয়েছে। কমিশনের পাঠানো ওই নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে, নির্বাচনী দায়িত্ব পালনকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা কোনভাবেই পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করতে পারবেন না। নির্বাচনে কোন বিশেষ মহল যাতে প্রভাব ও হস্তক্ষেপ করে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করতে না পারে সে বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। এসব কাজে আইন ও বিধি যথার্থ প্রয়োগের মাধ্যমে রিটার্নিং কর্মকর্তা তার কাজের নিরপেক্ষতার প্রমাণ দেবেন। একই সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারে সব প্রার্থীই যাতে সমান সুযোগ পান তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষতা জনগণের কাছে দৃশ্যমান করতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে বিভিন্ন বিভাগের সমন্বয়ে ভিজিল্যান্স ও অবজারভেশন টিম গঠনের কথাও বলা হয়েছে ওই নির্দেশনায়। এসব টিমে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটদের সম্পৃক্ত করার কথা বলা হয়েছে। উপজেলা নির্বাচন অফিসার এসব টিমে সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়াও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষায় জেলা প্রশাসক বা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা সমন্বয় সেল গঠন করার কথা বলা হয়েছে। এই সেল সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় নির্বাচনপূর্ব আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবলোকন করে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। এছাড়া এই সেল নির্বাচন উপলক্ষে ভোটকেন্দ্রে এবং নির্বাচনী এলাকায় ফোর্স মোতায়েনের পরিকল্পনা গ্রহণ ও সুপারিশ গ্রহণ করবেন। এতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে ভোটাররা যাতে অবাধ ও নির্ভয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন তার নিশ্চয়তা বিধানে প্রয়োজনে স্থানীয় রাজনৈতিক দলের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও স্থানীয় আস্থাভাজন ব্যক্তিদের সঙ্গে একাধিক বৈঠকের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিতে হবে। এক্ষেত্রে কারও কোন অভিযোগ থাকলেও তা অবিলম্বে তদন্ত করে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মহিলা ভোটারদের নির্বিঘেœ ভোটদানে উদ্বুদ্ধ করতে বিশেষ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে সংখ্যালঘু ভোটার ও মহিলা ভোটারদের অবস্থা পূর্ব হতে নিশ্চিত হয়ে বিশেষ নিরাপত্তা বিধান করে ভোটদানে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। এছাড়াও ভোটকেন্দ্রে এবং ভোট কক্ষের বাইরে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থাসহ বেআইনী অস্ত্র উদ্ধার জোরদার করতে হবে। চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের তালিকা প্রণয়ন ও চাঁদাবাজ, মস্তান ও সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এছাড়া নির্বাচনে যাতে কেউ পেশীশক্তি, অর্থ ও ক্ষমতা দিয়ে প্রভাবিত করতে না পারে এ লক্ষ্যে আইনগত ব্যবস্থা নিতেও বলা হয়েছে। এছাড়াও নির্বাচনে সামগ্রিক নিরাপত্তা বিধানে সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োগের দায়িত্বে থাকবেন জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার। তবে নির্বাচনী এলাকায় মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োগে সংশ্লিষ্ট জেলা পুলিশ সুপার, জেলা প্রশাসক ও সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে পরামর্শক্রমে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করবেন।
×