ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রাজধানীর চার প্রবেশপথের বিড়ম্বনা

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ৫ মার্চ ২০১৬

রাজধানীর চার প্রবেশপথের বিড়ম্বনা

মশিউর রহমান খান ॥ রাজধানী ঢাকায় প্রতিদিন প্রায় ৫ লাখ লোক প্রবেশ ও প্রস্থান করে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ও রাজধানীর আশপাশের জেলাগুলো থেকে নৌপথ, ট্রেন, বাস এবং বিমানপথে এসব লোকজন আসা-যাওয়া করেন। বিশ্বের অন্যতম মেগা সিটি এ ঢাকায় নিয়মিতই লাখ লাখ লোক আসা-যাওয়া করলেও তাদের যাতায়াতের উন্নত সুবিধার কথা বিবেচনা করে তথা যাত্রীকল্যাণে স্বাধীনতার ৪৫ বছরেও এসব প্রবেশমুখের জন্য কোন সরকারই উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয়নি বা বড় কোন বিনিয়োগ করেনি। যোগাযোগ ব্যবস্থায় রেলপথ, নৌপথ, বাসস্ট্যান্ড ও বিমানবন্দরের মধ্যে কোন সমন্বয় নেই। এ পথগুলোর পরিকল্পিত ও বহুমাত্রিক ব্যবহার না থাকায় নিয়মিতই যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়ছেন। ফলে আজ পর্যন্ত রাজধানীতে প্রবেশের জন্য বর্তমান প্রবেশপথের বাইরে আশপাশে বিকল্প কোন বাইপাস সড়ক তৈরি করা হয়নি। প্রবেশপথ থেকে গন্তব্যে যেতে যাত্রী পরিবহনের জন্য কোন আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলেনি। এসব প্রবেশমুখে যাত্রীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকা, অপর্যাপ্ত ওয়েটিং রুম, বাসস্ট্যান্ডে কোন যাত্রী ছাউনি গড়ে না তোলা, পর্যাপ্ত টয়লেট ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা না থাকা, খাবারের জন্য সুব্যবস্থা না থাকা, তথ্য জানার জন্য তথ্যকেন্দ্র না থাকা, যাত্রীর পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না থাকাসহ নানা অসঙ্গতি চোখে পড়ে। রাজধানীতে প্রবেশ ও প্রস্থানের ক্ষেত্রে যাত্রীর ন্যূনতম সুবিধা বিবেচনা না করার অর্থাৎ যাত্রীর কল্যাণে এমন বেহাল অবস্থা পৃথিবীর আর কোন দেশে দেখা যায় না। সম্প্রতি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) করা ২০ বছর মেয়াদি ‘ঢাকা স্ট্রাকচার প্ল্যান ২০১৬-৩৫’-এর প্রকাশিত খসড়ায় এ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। রাজধানীর চারটি বড় বাসস্ট্যান্ড ও লঞ্চ টার্মিনালে যাত্রীকল্যাণে আজ পর্যন্ত কোন সেবামূলক প্রকল্প গ্রহণ করেনি সরকার। বর্তমান সরকার প্রায় সবক্ষেত্রেই ডিজিটালের ছোঁয়া পৌঁছালেও বাসস্ট্যান্ড ও লঞ্চ টার্মিনালে ডিজিটাল প্রযুক্তির বিশেষ সেবার কোন ছোঁয়াই পৌঁছাতে পারেনি। রেলস্টেশন বা এয়াপোর্টে কিছুটা ডিজিটাল প্রযুক্তির সেবা প্রদান করলেও যাত্রীর প্রয়োজনের তুলনায় তা অতি নগণ্য। রেলস্টেশনে কোন্ ট্রেন কখন ছাড়বে কিংবা কোন্ ট্রেন সর্বশেষ কোথায় অবস্থান করছে তা জানার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু প্রচার না থাকায় যাত্রীরা এর সুফল ভোগ করতে পারছেন না। যোগাযোগ ব্যবস্থার এমন বেহাল অবস্থায় কোন আগন্তুক জরুরী প্রয়োজন মেটাতে গ্রাম থেকে এসে ঢাকা শহরে প্রবেশ করেই বাধ্যতামূলকভাবে বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে। রাজধানীতে প্রবেশের পর টার্মিনাল বা বাসস্ট্যান্ড থেকে যাত্রীর গন্তব্যস্থলে যেতে আজ পর্যন্ত কোন প্রকার পরিকল্পিত পরিবহন ব্যবস্থাই গড়ে তোলেনি সরকার। ফলে রাজধানীতে প্রবেশের মূল চারটি প্রবেশপথ আজও চরমভাবে অবহেলিতই রয়ে গেছে। মূলত যাত্রী আনা- নেয়া করলেও যাত্রীর কল্যাণে আজও মনোযোগ দেয়নি কোন কোন সরকারই। ফলে নৌপথ, স্থলপথ বা আকাশপথে যাতায়াতকারী যাত্রীদের প্রতিনিয়তই নানা ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে, যা দেখার যেন কেউ নেই। রাজউকের খসড়া প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয় টার্মিনাল বা স্টেশনের করুণ অবস্থার চিত্র। ঢাকার জনবহুল বাসস্ট্যান্ড ও লঞ্চ ও বিমানের টার্মিনাল দিয়ে চলাচলকারী দৈনিক যাত্রী সংখ্যা তুলে ধরা হয়েছে। খসড়াতে টার্মিনাল বা স্টেশনের করুণ অবস্থার চিত্রও উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকায় প্রতিদিন সবচেয়ে বেশি যাত্রী যাতায়াত করেন নৌপথে। আর একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে সদরঘাট টার্মিনাল। ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ৪৫টি রুটে দৈনিক ৪০৪টি বিভিন্ন ধরনের নৌযান চলাচল করে এ টার্মিনাল দিয়ে। এসব নৌযান দিয়ে টার্মিনাল হয়ে দৈনিক প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার যাত্রী ঢাকায় প্রবেশ বা প্রস্থান করেন। সদরঘাটের পর রাজধানীতে যাত্রী আসা-যাওয়া করেন রেলপথে। রাজধানীর কমলাপুর ও টঙ্গী স্টেশন থেকে ৩৯টি রুটে ১০১টি ট্রেন পরিচালনা করে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এসব ট্রেনে প্রতিদিন প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার যাত্রী যাতায়াত করেন। প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়, রাজধানীর চারটি আন্তঃজেলা বা দূরপাল্লার বাস টার্মিনালের মধ্যে গাবতলী দিয়ে সবচেয়ে বেশি যাত্রী যাতায়াত করেন। এ টার্মিনাল দিয়ে ৩০টি রুটে দৈনিক ৯৬০টি বাসে প্রতিদিন প্রায় ৫০ হাজার যাত্রী যাতায়াত করেন। সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে ১৯টি রুটে ৭৯০টি বাসে দৈনিক প্রায় ৩৫ হাজার যাত্রী চলাচল করেন। এ ছাড়া ফুলবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ড দিয়ে এক হাজারটি বাসে ৮টি রুটে দৈনিক প্রায় ৩২ হাজার যাত্রী ও মহাখালীতে আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল দিয়ে মূল ৫টি রুটে ৪১০টি বাসে দৈনিক প্রায় ২০ হাজার যাত্রীর যাতায়াত করেন। স্ট্রাকচার প্ল্যানে বলা হয়েছে, দেশের অন্যান্য শহরের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য ঢাকা শহরে মাত্র চারটি সংযোগ সড়ক রয়েছে। তবে এর বাইরে বিকল্প হিসেবে কোন ধরনের প্রবেশ সংরক্ষিত সড়ক, এক্সপ্রেসওয়ে বা বাইপাস সড়ক নেই। ফলে সড়কপথে ঢাকায় প্রবেশ ও প্রস্থানে অনেকটা সময় অপচয় হয়। অনেক সময় ঢাকা থেকে বের হতেই ৩-৪ ঘণ্টা অপচয় হয়। এ জন্য বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে ঢাকার ভেতর ও বাইরে তিনটি বৃত্তাকার সড়ক গড়ে তোলা প্রয়োজন। এ ছাড়া বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটানো অনেকটা অসম্ভব হয়ে পড়বে। ঢাকায় একমাত্র আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হচ্ছে হযরত শাহজালাল। বিমানবন্দরটিকে আন্তর্জাতিক বলা হলেও প্রবেশ বা প্রস্থান নিয়ে আন্তর্জাতিক মান নিয়ে যাত্রীদের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এ বিমানবন্দর থেকে প্রতিদিন ৩৭টি রুট থেকে ১৬০টি ফ্লাইট যাতায়াত করে। এর মাধ্যমে প্রায় ১৫ হাজার যাত্রী প্রতিদিন ঢাকায় প্রবেশ বা প্রস্থান করেন। তবে বিমানবন্দরটিতে নানা ধরনের সমস্যা রয়েছে। এতে কোন ধরনের আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থার সংযোগ নেই। সরকারী বা বেসরকারী কোন এয়ারলাইন্স স্বল্প দূরের যাত্রীদের আনা-নেয়ার জন্য কোন প্রকার পরিবহন ব্যবস্থাই গড়ে তোলেনি। সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী অনেক আগেই বাংলাদেশ বিমান যাত্রী পরিবহনের পাশপাশি যাত্রীকে শহর থেকে গন্তব্যে পৌঁছার জন্য পরিবহন ব্যবস্থা চালু করার কথা বললেও আজও তা করেনি। ফলে ঢাকায় একজন যাত্রী নেমেই রেন্ট-এ কার সার্ভিসের শরণাপন্ন হতে হয়। এসব রেন্ট-এ কার সার্ভিসের চার্জও অনেক বেশি। যা অনেক যাত্রীর পক্ষেই যাতায়াত ব্যয় বহন করা কষ্টকর হয়ে পড়ে। এ ছাড়া বেসরকারী এয়ারলাইন্স বিমানে আসার পর ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে তাদের যাত্রী পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা রাখলেও এর সংখ্যা অতি নগণ্য। তবে বেসরকারী কোন এয়ারলাইন্সই স্বল্প দূরের যাত্রীদের আনা নেয়ার কাজে কোন পরিবহন সেবা প্রদান করেন না। ফলে যাত্রীরা বাধ্য হয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকে গন্তব্যে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হয়। জানা গেছে, এক সময় বিমানবন্দরের ভেতরে দর্শনার্থী ও যাত্রীদের বিমানবন্দরের ভেতরে বসার ও টয়লেটের ব্যবস্থা থাকলেও সম্প্রতি কর্তৃপক্ষ দর্শনার্থীদের ভেতরে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। ফলে অনেক যাত্রী বিদেশ থেকে এসে তাদের অভ্যর্থনা প্রদানকারী দর্শনার্থীদের খুঁজে পেতে নানা বিড়ন্বনায় পড়তে হচ্ছে। অপরদিকে গত এক দশকে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল বা কমলাপুর রেলস্টেশনে যাত্রীদের সেবার মানোন্নয়নে নতুন তেমন কোন উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি। প্লাটফর্ম উন্নয়ন বা নতুন আধুনিক যাত্রী ছাউনি স্থাপন কিংবা বর্তমান ছাউনিগুলোর সংস্কারও পর্যন্ত করা হয়নি। আজ পর্যন্ত সদরঘাটে যাত্রীদের অপেক্ষার জন্য কোন ওয়েটিং রুম তৈরি করা হয়নি। ঝড়-বৃষ্টির সময় কিংবা শীতকালে কোন যাত্রী বসার পর্যন্ত সুবিধা নেই। যাত্রী রাজধানীর কোন স্থানে যেতে চাইলে কারও কাছ থেকে তথ্য জানার পর্যন্ত ব্যবস্থা নেই। ফলে চরমভাবে যাত্রীদের অবহেলার শিকার হতে হচ্ছে। বাসস্ট্যান্ডগুলো থেকে উন্নত বিশ্বের ন্যায় শহরের ভেতরে প্রবেশের জন্য সরকারী কোন পরিবহন ব্যবস্থা না থাকায় যাত্রীরা রাজধানীতে এসেই বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। বৃহত্তম ৪টি বাসস্ট্যান্ডে তৈরি করা হয়নি কোন যাত্রী ছাউনি। আন্তঃবাস টার্মিনালগুলো থেকে শহরের ভেতরে চলাচলকারী বাসস্ট্যান্ডের সংযোগ না থাকায় সমস্যার সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া রেলস্টেশন ও বিমানবন্দরে যাত্রীর সুবিধায় বিবেচনায় বর্তমান সরকার কিছু আধুনিক সুবিধা গ্রহণ করলেও যাত্রী সচেতনতা না থাকা ও প্রচার না থাকায় এর ফলাফল যাত্রীরা তেমন একটা পাচ্ছেন না। দেশের সর্ববৃহৎ রেলস্টেশন কমলাপুরে প্রায় লক্ষাধিক যাত্রীর জন্য কমপক্ষে ১০টি ওয়েটিং রুম প্রয়োজন হলেও মাত্র দুটি ওয়েটিং রুম তৈরি করা হয়েছে। যার মধ্যে একটি ভিআইপি যাত্রীদের জন্য। যা চাহিদার তুলনায় অতি নগণ্য। ফলে বাধ্য হয়ে যাত্রীরা স্টেশনের বারান্দায় অবস্থান করেন। এ ছাড়া নির্ধারিত স্থান না থাকায় ঝড়-বৃষ্টির সময় সমস্যা ব্যাপক আকার ধারণ করে। কমলাপুর রেলস্টেশন ও সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ভিক্ষুক সমস্যা অনেক পুরনো। এ ছাড়া যাত্রীরা টার্মিনালে পৌঁছলে যাত্রীদের ব্যাগ নিয়ে টানাটানি করতে দেখা যায়। ফলে যাত্রীদের অনেক সময় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। রাজধানীর প্রধান এ দুই টার্মিনালের পরিবেশও অত্যন্ত নোংরা। স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট বা সুপেয় পানির ব্যবস্থা না থাকা, হকারদের দৌরাত্ব, যাত্রী সংগ্রহের ও টিকেটের কালোবাজারি তথা দালালদের উৎপাত, বিশেষ করে বিভিন্ন উৎসবে উচ্চমূল্যে টিকেট বিক্রিসহ যাত্রীদের নানা সমস্যার মুখে পড়তে হয়। কোন টার্মিনালেও স্বাস্থ্যকর খাবারের কোন সুব্যবস্থা নেই। নির্দিষ্ট কোন পরিবহন ব্যবস্থা না থাকার ফলে টার্মিনাল বা স্টেশনে যেতে যাত্রীদের রিক্সা কিংবা অটোরিক্সাই মূল ভরসা। এ ছাড়া যাত্রীদের জন্য কোন ধরনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা না থাকায় যাত্রীদের অজ্ঞান পার্টি বা দুষ্কৃতকারীদের খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব খোয়াতে দেখা যায়। কোন প্রকার দুর্ঘটনা ঘটলে কিংবা কোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতির তৈরি হলে এসব স্থানের নিরাপত্তায় নির্ধারিত কোন পুলিশ না থাকায় সহজেই অপরাধীরা পার পেয়ে যায়। মূলত রাজধানীতে প্রবেশ ও প্রস্থানের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত যাত্রীরা পুরোপুরি অরক্ষিত থাকছে। যাত্রীসেবার মানোন্নয়নে সরকার প্রতিবছর শত শত কোটি টাকা ব্যয় করলেও এর প্রভাব কোনক্রমেই যাত্রীর কল্যাণে ব্যয় হতে দেখা যায় না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জানতে চাইলে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ ও ঢাকা স্ট্রাকচার প্ল্যান প্রণয়ন প্রকল্পের পরিচালক মোঃ সিরাজুল ইসলাম জনকণ্ঠকে বলেন, চীন, জাপন, আমেরিকাসহ উন্নত বিশ্বের ন্যায় ঢাকা শহরের বাইরে থেকে কোন আগন্তুক প্রবেশ করলে ও দ্রুত বাধাহীন শহর থেকে বের হওয়ার জন্য সড়ক, নৌ ও রেলের সমন্বয় হওয়া জরুরী। যাত্রী আসা যাওয়ার জন্য ঢাকার মূল চার প্রবেশপথ আজও অবহেলিত রয়েছে। যেসব পথে দৈনিক ৫ লক্ষাধিক লোক প্রবেশ করে। অথচ আজ পর্যন্ত রেল, নৌ, বিমান বা বাসস্ট্যান্ডগুলোতে যাত্রীকল্যাণে তেমন সুব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি কিংবা আজ পর্যন্ত এসব স্থান থেকে যাত্রী চলাচলে কোন আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলেনি। এগুলোর পরিবেশও নোংরা। ঢাকার মতো একটি মেগা সিটির জন্য এ বিষয়ে দ্রুত মনোযোগ দেয়া অতি গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে বিশ্বের উন্নত শহরগুলো তা-ই করেছে। বাংলাদেশে রাজধানী হওয়া সত্ত্বেও ঢাকার আশপাশে বৃত্তাকার রাস্তা কিংবা বাইপাস সড়ক আজও গড়ে তোলা হয়নি। তা ছাড়া যাত্রীর নিরাপত্তা ব্যবস্থাও গড়ে তুলতে হবে। উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপনের জন্য বিমানবন্দর, রেলস্টেশন বা আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালের সঙ্গে মেট্রোরেল, সরকার ঘোষিত বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) বা হাল্কা রেল ব্যবস্থার (এলআরটি) সংযোগ থাকতে হবে। যা বর্তমানে ঢাকাতে দেখা যায় না। স্টেশন বা টার্মিনালের বহুমাত্রিক ব্যবহার করতে হবে। যাতায়াতের সুবিধার্থে ঢাকা মহানগর স্ট্রাকচার প্ল্যান ২০১৬-৩৫ সাল পর্যন্ত ২০ বছর মেয়াদি তৈরি করা সার্কুলার রোড তৈরি বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে। এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন করা গেলে প্রবেশপথগুলো অনেকটা সুরক্ষা পাবে। পাশাপাশি রাজধানীতে দ্রুতগামী পরিবহন ব্যবস্থা চালু করতে হবে। ভূমি ব্যবস্থাকে গুরুত্ব দিয়ে সকল প্রবেশমুখে যাত্রীর সুবিধার্থে আধুনিক ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। যাত্রী সুবিধার কথা বিবেচনায় এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন করা গেলে যোগাযোগ খাতে ঢাকার বর্তমান চেহারা পাল্টে যাবে।
×