গ্রীনপিস বলেছে, ফুকুশিমায় পাঁচ বছর আগে ঘটে যাওয়া পরমাণু দুর্ঘটনার প্রতিক্রিয়া আশপাশের বনজঙ্গলের মধ্যে দেখা দিতে শুরু করেছে। গাছপালার ডিএনএ বদলে যাওয়ায় এর জের অনেক বছর ধরে চলবে বলে পরিবেশবাদী গ্রুপ শুক্রবার সতর্ক করে দিয়েছে। খবর এএফপির।
২০১১ সালের ১১ মার্চ জাপানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় উপকূলে সাগরের নিচে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। ভূমিকম্পের পরপরই সংঘটিত সুনামি ফুকুশিমা দাইচি পরমাণু কেন্দ্রের রিএ্যাক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং চারদিকে তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ে। সুনামির পানি ঢুকে পড়ায় অকেজো হয়ে যায় রিএ্যাক্টরের কুলিং সিস্টেম। ব্যাপক এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছিল তেজস্ক্রিয়তা। তেজস্ক্রিয়তার ক্ষতি থেকে বাঁচতে হাজার হাজার লোক বাড়িঘর ছেড়ে চলে যায়। সরকারী উদ্যোগে আবাসিক এলাকাগুলোতে তেজস্ক্রিয়তা বিমুক্তকরণ প্রচেষ্টা চালানো হলেও পল্লী ও বনাঞ্চলগুলো বাদ পড়ে যায়। সরকার ঘোষিত পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ এগোলেও আগামী বছর মার্চের মধ্যে তেজস্ক্রিয়তা বিমুক্তকরণ কর্মসূচী শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু গ্রীনপিস বলছে, বন এলাকায় যে পরিমাণে তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়েছে তার জের সহজে শেষ হবে না। তেজস্ক্রিয়তার ফলে প্রজাপতিসহ অনেক পোকামাকড় মরে গেছে। ওগুলোর আর জন্মানোর সম্ভাবনা নেই। বেছে বেছে তেজস্ক্রিয়তা মুক্ত করার কাজটি সম্পন্ন হওয়ায় এর পুরোপুরি সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। গ্রিনপিস হুঁশিয়ার করে বলেছে, জলাভূমি ও বনাঞ্চলগুলো তেজস্ক্রিয়তার আধার হিসেবে কাজ করতে পারে। বৃষ্টির পানির সঙ্গে তেজস্ক্রিয়তা বহুদূর ছড়িয়ে যেতে পারে। বছরের পর বছর ধরে এগুলোর প্রভাব থেকে যেতে পারে। গ্রীনপিসের ওই প্রতিবেদন প্রণয়নকারী কেন্ড্রা উলরিচ বলেছেন, প্রতিবেদনটি তৈরির সময় তারা অনেক আন্তর্জাতিক গবেষণা জার্নালের তথ্য নিয়েছেন। তিনি বলেন, দুর্যোগে বিপর্যস্ত এলাকাগুলো থেকে চলে যাওয়া লোকজন পুনর্বাসন এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরমাণু স্থাপনাটি যেমন দ্রুততার সঙ্গে পুনরায় চালুর উদ্যোগ জাপান সরকার নিয়েছে সেটি বিপজ্জনক। এছাড়া আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তিসংস্থা আইএইএ প্রতিবছর দুর্যোগের বার্ষিকীতে তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা কমিয়ে দেখানোর যে চেষ্টা করে সেটি জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি হুমকি বলেই গ্রীনপিস মনে করে।