ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সাহেববাজার বড় মসজিদ কমপ্লেক্সের সৌন্দর্য দোকানপাটে ম্লান

প্রকাশিত: ০৩:২৮, ৫ মার্চ ২০১৬

সাহেববাজার বড় মসজিদ কমপ্লেক্সের সৌন্দর্য দোকানপাটে ম্লান

মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী ॥ রাজশাহী নগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্ট থেকে একটু দক্ষিণে দৃষ্টি দিলেই দেখা মিলবে অত্যাধুনিক নির্মাণশৈলীতে গড়া মসজিদ। রাজশাহী নগরীর বড় মসজিদ বলে পরিচিত এটি। এখন এটি বড় মসজিদ কমপ্লেক্স। পুরো নির্মাণকাজ এখন শেষ না হলেও ওপরের দিকের সৌন্দর্য যে কেউ বিমোহিত হবেন। তবে নিচের দিকে দৃষ্টি দিলেই সহজেই অনুমান করা যাবে এর হাল। মসজিদ চত্বর ঘিরে অসংখ্য দোকানপাট এ মসজিদের সৌন্দর্য ম্লান করে ফেলেছে। মসজিদের সামনের চত্বর এখন দখলদারদের অভায়ারণ্য। কেউ খুলে বসেছেন চায়ের স্টল, কেউ পান সিগারেটের দোকান। এছাড়া ডাব, বিভিন্ন ফলমূল ও ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের যত্রতত্র অবস্থানে মসজিদের সৌন্দর্য ম্লান হয়ে পড়েছে। মসজিদ কমিটি ও সিটি করপোরেশন এ দখলদারদের কাছ থেকে নিয়মিত চাদা আদায় করে থাকেন। এখন মসজিদটির বাউন্ডারি ওয়াল নেই। নির্মাণের সময় উপকরণ রাখার জন্য ইটের প্রাচীরের মধ্যে এখন দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে ছোটখাটো অসংখ্য দোকান পাট। যত্রতত্র গড়ে ওঠা এসব দোকানপাটের জন্য পুরো মসজিদের চত্বর ঢাকা থাকে সারাক্ষণ। সেখানে গড়ে ওঠা কয়েকটি চায়ের দোকানদার মুখ না খুললেও ডাব ও ফলের দোকানদাররা জানালেন, প্রতিদিন সিটি করপোরেশনের লোকজন স্লিপের মাধ্যমে ৫ থেকে ১০ টাকা করে আদায় করেন। মসজিদ ঘেঁষে গড়ে ওঠা চা স্টলের একজন মালিক বলেন, আমরা কাউকে টাকা-পয়সা দিই না। তবে মাঝে মাঝে মসজিদের নামে সাহায্য দিতে হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মসজিদ কমপ্লেক্সের নিচের মার্কেটে সব ওষুধের দোকান। এগুলো শৃঙ্খলার মধ্য থাকলেও মসজিদ চত্ব¡র ঘিরে গড়ে উঠেছে অসংখ্য দোকানপাট। এসব দোকানপাটের জন্য নগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানটির সৌন্দর্য বিনিষ্ট হচ্ছে। অথচ সিটি করপোরেশন কিংবা মসজিদ কমিটির এ বিষয়ে কোন ভ্রƒক্ষেপ নেই। নগরীর প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এ মসজিদ কমপ্লেক্সে প্রায় তিন হাজার মুসল্লি এক সঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন। এ মসজিদটি নির্মাণে মোট ব্যয় হয়েছে ৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। এছাড়া সৌন্দর্য, নির্মাণশৈলী ও মুসল্লিদের সুবিধার দিক থেকে এটি হচ্ছে রাজশাহী মহানগরীর সর্বাধুনিক মসজিদ। যদিও এখন লিফট ও গম্বুজের কাজ বাকিই রয়ে গেছে। তারপরেও দূর থেকে মসজিদটির রূপ দেখে বিমোহিত হয়ে কেউ কাছে থেকে দেখতে চাইলেও মসজিদের চত্ব¡রে গড়ে ওঠা দোকানপাটের কারণে হতাশ হতে হবে। ১৫ দশমিক ৬০ শতক জমির উপর নির্মিত ৪তলা বিশিষ্ট এ মসজিদ কমপ্লেক্স। পরিকল্পনা অনুযায়ী ভবনের সঙ্গে রয়েছে ২টি সিঁড়ি, ৪টি অজুখানা, ১টি গ্রন্থাগারসহ ইমাম ও মুয়াজ্জিনের থাকার ব্যবস্থা। মসজিদের ছাদের উপর নির্মাণ করা হয়েছে সুদৃশ্য ৪টি গম্বুজ ও একটি মিনার। মসজিদের প্রতি ফ্লোরের আয়তন ৪ হাজার ৫শ’ বর্গফুট। নাম প্রকাশ না করার শর্তে মসজিদের মুসল্লিরা জানান, পরিপাটি সুন্দর মসজিদের প্রবেশের শুরুতেই যত্রতত্র দোকানপাটের জন্য বাধার সম্মুখীন হতে হয়। মুসল্লিরা বলেন, মসজিদের চত্বর ঘেষে ভ্রাম্যমাণ দোকানদারদের কারণে মসজিদটির সৌন্দয নষ্ট হচ্ছে। তারা মসজিদের সুদৃশ্য সীমানা প্রাচীর নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।
×