ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চার ফুটবলারের শাস্তির পক্ষে সালাউদ্দিন

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ৪ মার্চ ২০১৬

চার ফুটবলারের শাস্তির পক্ষে সালাউদ্দিন

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ‘যদি এ ধরনের সিদ্ধান্ত না হতো তাহলে আমি বোকা বনেই যেতাম। যদিও তাদের নিষিদ্ধ করায় আমার চেয়ে বেশি দুঃখিত বোধহয় আর কেউ হয়নি। আমি নিজেও একজন খেলোয়াড় ছিলাম। আমার হাতে যদি সব ক্ষমতা থাকত আমি তাদের শাস্তি দিতাম না। কেউ যদি আন্তরিকভাবে ক্ষমা চায়, তখন আমি তাকে শাস্তি দেয়ার পক্ষপাতী নই। কিন্তু তারা যে ধরনের অন্যায় করেছে শাস্তিটা তাদের প্রাপ্যই ছিল। টিমস কমিটি যে সিদ্ধান্তটা নিয়েছে একদম সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদের এ সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাচ্ছি।’ কথাগুলো বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী মোঃ সালাউদ্দিনের। বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের চার ফুটবলারের শাস্তির সিদ্ধান্তটি খুব সুন্দর একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে অভিমত দিয়েছেন তিনি। ন্যাশনাল টিমস কমিটির এ সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়েছেন বাফুফে সভাপতি। বৃহস্পতিবার বাফুফে ভবনে সালাউদ্দিন ফুটবলারদের নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে বলেন, অনেকেই তাকে পরামর্শ দিয়েছিলেন অভিযুক্ত খেলোয়াড়দের যাতে শুধু জাতীয় দল নয়, ক্লাব থেকেও নিষিদ্ধ করা হয়। তবে সালাউদ্দিন এর পক্ষে ছিলেন না। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি ভয় পাচ্ছিলাম যে তাদের আবার লীগ থেকে না নিষিদ্ধ করা হয়। তবে কমিটি সেটি করেনি। এটি খুব সুন্দর একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। কেননা সব ধরনের ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ হলে ফুটবলারদের পেটে লাথি মারা হতো। তাদের আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে যেত। এটা মোটেও ঠিক হতো না।’ লীগ থেকে নিষিদ্ধ করা হলে অবধারিতভাবে ক্ষতির শিকার হতো ক্লাবগুলো। কেননা শুধু এ্যাটাকিং মিডফিল্ডার মামুনুল ইসলাম পারিশ্রমিক হিসেবে পাবেন ৬০ লাখ টাকা (চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেডের হয়ে)। একই ক্লাবে বড় অংকেই চুক্তিবদ্ধ জাতীয় দল থেকে নিষিদ্ধ হওয়া উইঙ্গার জাহিদ হোসেন। ক্লাবের এ বিষয়গুলো ন্যাশনাল টিমস কমিটি মাথায় রেখেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে তাদের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়েছেন সালাউদ্দিন। যদিও এসব বিষয়ে সরাসরি টিমস কমিটির সিদ্ধান্তে কোন হস্তক্ষেপ করেননি বাফুফে বস। এ প্রসঙ্গে সালাউদ্দিন বলেছেন, ‘আমাকে তো সবদিক দেখতে হয়। পুরো চিত্রটা দেখতে হয়। আমি একটা ক্লাব নিয়ে চলি না। আমার সব ক্লাবকেই প্রটেক্ট করতে হয়। মামুনুলের কথাই ধরা যাক। একটি ক্লাব ৬০ লাখ টাকা দিয়ে নিয়েছে। যদি ক্লাব থেকে তাকে নিষিদ্ধ করা হতো ওই ক্লাবের কী হতো? ক্লাব তো কোন অপরাধ করেনি। টিমস কমিটি খুব সুন্দরভাবেই সিদ্ধান্তটা নিয়েছে।’ আগামী ২৪ মার্চ জর্দানের বিপক্ষে বাংলাদেশ জাতীয় দল এ্যাওয়ে খেলবে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচ। অভিযুক্ত চার ফুটবলারকে হারিয়ে এবারের জাতীয় দল অনেকটাই দুর্বল। তার ওপর জাতীয় দলের দায়িত্বে ইয়ুথ কোচ গঞ্জালো। এমন শক্তির জাতীয় দল দিয়ে ফলটা কেমন হবে? ‘কোন সন্দেহ নেই, এবারের জর্দান ম্যাচের রেজাল্ট খুব খারাপ হবে’Ñ সালাউদ্দিনের ভাষ্য। তিন বছর জাতীয় দলের অধিনায়কের দায়িত্বে থাকা যে মামুনুল শাস্তি পেয়ে এক বছরের জন্য দলের বাইরে। তার প্রসঙ্গে সালাউদ্দিনের প্রতিক্রিয়াÑ ‘মামুনুল দলের বাইরে চলে যাওয়াতে দল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেÑ এটা মানতে রাজি নই। কেননা সে যতদিন ছিল, ততদিন তো জাতীয় দল কোন আসরের শিরোপা জিততে পারেনি। সে তো মেসি না যে সে না থাকলে খুব বড় একটা পার্থক্য হবে দলে। এখন দলে শৃঙ্খলা ফিরে আসাটাই জরুরী। যে ফলাফল হয়েছে এর থেকে খারাপ ফলও হতে পারত। হয়ত পরের বছর মামুনুল আরও ভাল করবে। কারণ সে হয়ত নিজের ভুলগুলো উপলব্ধি করতে পারবে।’
×