ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কোকা-কোলা থেকে মাইক্রোসফট ফোর্ড থেকে মেটলাইফ সবাই আছে

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ৪ মার্চ ২০১৬

কোকা-কোলা থেকে মাইক্রোসফট ফোর্ড থেকে মেটলাইফ সবাই আছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বিশ্বখ্যাত কোমল পানীয় কোকা-কোলা থেকে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক কোম্পানি মাইক্রোসফট অংশগ্রহণ করেছে ইউএস ট্রেড শো’তে। স্টল নিয়ে পণ্য ও কি ধরনের সেবা পাওয়া যায় তা নিশ্চিত করতে স্টল নিয়েছে বিশ্বখ্যাত গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফোর্ড। আছে পেপসি, শেভরন, এইচপি থ্রিএম, ডেল, মেটলাইফসহ আমেরিকার আরও বিভিন্ন কোম্পানির স্টল। বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের বাজার যে বেশ বড় তা ইউএস ট্রেড শো’ত আসলেই বুঝতে পারবেন যেকোন দর্শক ও ক্রেতা। পাশাপাশি বাংলাদেশী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এই শো’তে পণ্য প্রদর্শন ও সেবা সম্পর্কে দর্শনার্থীদের অবহিত করছে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রেও দিন দিন শক্তিশালী হচ্ছে বাংলাদেশী পণ্যের বাজার। তৈরি পোশাকের পাশাপাশি দেশটিতে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রফতানি হচ্ছে। এ কারণে শক্তিশালী হচ্ছে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য। বৃহস্পতিবার রাজধানী ঢাকার সোনারগাঁও হোটেলের বলরুমে ২৪তম ইউএস ট্রেড শো’র উদ্বোধন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। ওই অনুষ্ঠানে অংশনেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট। বাংলাদেশের এ্যামেরিকান চেম্বার অব কমার্স (এ্যামচেম) ও যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস যৌথভাবে এই ট্রেড শো’র আয়োজন করেছে যা তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হবে। এতে ৫৭ প্রতিষ্ঠান এতে অংশ নিয়েছে, যার মধ্যে ৪০ প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রের। অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে প্রধান অথিতির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ আবারও আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রফতানিতে অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা (জিএসপি) পুনর্বহালের বিষয়ে দেশটি তাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন এনে ইতিবাচক মনোভাব দেখাবে। বাংলাদেশের সংস্কার কাজের অগ্রগতি থাকায় জিএসপি স্থগিতাদেশ দ্রুত তুলে নেবে দেশটি। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির কার্যালয়ের দেয়া সব শর্ত পূরণ হয়েছে। আন্তর্জাতিক শ্রম আইনের মতো করে ইপিজেডে শ্রমিক সংগঠন ‘ওয়ার্কার ওয়েলফেয়ার এ্যাসোসিয়েশন’ করা হয়েছে। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি পুনর্বহালে চিন্তার পরিবর্তন আনবে বলে আশাবাদী তিনি। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে টিকফা করেছি। টিকফার মূল উদ্দেশ্য ব্যবসা-বাণিজ্যে সহযোগিতা করা। কিন্তু যদি সেটা না করা হয়, তাহলে টিকফা হবে অর্থহীন। তিনি আশা করেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার বাংলাদেশের অর্জন ও টিকফার শর্ত মনে করে হলেও জিএসপি বিষয়ে ইতিবাচক দৃষ্টিতে ভাববে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জিএসপি সুবিধা না পেলেও দেশটির সঙ্গে এ দেশের বাণিজ্য সম্পর্ক অত্যন্ত ভাল রয়েছে। এ কারণে চলতি অর্থবছরে রফতানিতে ৮ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি রয়েছে। এ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার রফতানি হয়েছে। অর্থবছর শেষে এটি ৭ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। ভবিষ্যতে এ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আরও বাড়বে বলে আশা করেন তিনি। মার্কিন রাষ্টদূত বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিশালী বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে। এটা দিনদিন আরও বাড়ছে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাওয়ার ফলে আমেরিকান অনেক প্রতিষ্ঠানই এখানে বাণিজ্য ও বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করছে। তিনি বলেন, অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যনীতিও অনেক উদার। বৈশ্বিক বিনিয়োগ ও বাণিজ্যকে সবসময় উৎসাহিত করে। বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ছে। এতে উভয় দেশের বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়াছে। উদ্বোধনীতে এ্যামচেম সভাপতি নূরল ইসলাম, এ্যামচেমের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের চেয়ারম্যান জ্যাকসন কক্স বক্তব্য রাখেন। ২০ টাকা প্রবেশ ফির বিনিময়ে দর্শনার্থীরা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এই প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ ও কেনাকাটা করতে পারবেন। তবে স্কুলের শিক্ষার্থীরা প্রবেশপত্র দেখিয়ে বা ইউনিফর্ম পরা অবস্থায় বিনামূল্যে প্রবেশ করতে পারবে।
×