ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রিপাবলিকান শিবিরে বিশৃঙ্খলা

প্রকাশিত: ০৪:২৩, ৪ মার্চ ২০১৬

রিপাবলিকান শিবিরে বিশৃঙ্খলা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের বড় পরীক্ষা সুপার টুয়েসডেতে স্পষ্ট ব্যবধানে জয় পেয়েছেন ডেমোক্র্যাট দলের হিলারি ক্লিনটন ও রিপাবলিকান দলের ডোনাল্ড ট্রাম্প। হিলারির জয়ে তার দল উজ্জীবিত ও ঐক্যবদ্ধ। সমস্যা বেধেছে রিপাবলিকান দলে। ট্রাম্প ব্যক্তিগতভাবে উৎফুল্ল হলেও তাকে নিয়ে দলে অস্বস্তি বাড়ছে। তাকে সমর্থন দিয়ে বিপাকে পড়েছেন নিউজার্সির গবর্নর ক্রিস ক্রিস্টি। ছয়টি পত্রিকা একযোগে তার পদত্যাগ দাবি করেছে। সব মিলিয়ে রিপাবলিকান শিবিরে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। খবর এএফপি, বিবিসি ও সিএনএনের। রিপাবলিকান দলে এগিয়ে থাকা ট্রাম্প ১১টির মধ্যে ৭টি অঙ্গরাজ্যে জয় পাওয়ার পর দলের সিনিয়র নেতারা বুধবার তাকে নিয়ে নিজেদের অসন্তুষ্টির কথা বলতে শুরু করেছেন। ট্রাম্প নিজেকে ঐক্য স্থাপনকারী হিসেবে ঘোষণা দিলেও প্রবীণ রিপাবলিকান রাজনীতিকরা তার তীব্র সমালোচনা করেছেন। ট্রাম্প বলেন, তিনি দলকে আরও সম্প্রসারিত করেছেন। ফ্লোরিডায় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, এসব ঝামেলা যাক, তারপর আমি একজনের পেছনে লাগব। তিনি হলেন হিলারি ক্লিনটন। নির্বাচনী বিতর্ক চলাকালে তিনি যেমন যুদ্ধংদেহী ছিলেন এদিন ট্রাম্পকে ততটা আক্রমণাত্মক মনে হয়নি। দলীয় অন্য নেতাদের প্রতি তার মনোভাব ছিল অনেকটা শুভেচ্ছামূলক। ট্রাম্পের জয়ের ধারাটি লক্ষ্য করার মতো। কারণ নির্দিষ্ট এলাকা জুড়ে জয় পাননি। বরং পুরো দেশের বিভিন্ন জায়গায় তিনি জয় লাভ করেছেন। ট্রাম্পকে সমর্থন দিয়ে বিপাকে পড়েছেন নিউজার্সি অঙ্গরাজ্যের গবর্নর ক্রিস ক্রিস্টি। অঙ্গরাজ্যের ছয়টি পত্রিকা একযোগে তার পদত্যাগ দাবি করেছে। তিনি পদত্যাগ না করলে গবর্নরকে অপসারণ করতে উদ্যোগ নেয়ার জন্য নাগরিকদের প্রতিও আহ্বান জানানো হয়েছে সম্পাদকীয়গুলোতে। তিনিই মূলধারার প্রথম রিপাবলিকান, যিনি ট্রাম্পকে প্রকাশ্যে সমর্থন জানান। ক্রিস্টি রিপাবলিকান গবর্নর এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি। জাতীয়ভাবে মূলধারার রিপাবলিকানদের মধ্যে তাকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হতো। ট্রাম্পকে সমর্থন জানানোর পর নিউজার্সিতে ক্রিস্টির জনপ্রিয়তা পড়ে গেছে। ৬৪ শতাংশ নাগরিক এখন ক্রিস্টিকে আর পছন্দ করেন না। নিউজার্সিতে তুমুল জনপ্রিয়তা নিয়ে ২০০৯ সালে প্রথম গবর্নর নির্বাচিত হয়েছিলেন ক্রিস্টি। ২০১৩ সালে তিনি গবর্নর হিসেবে পুনরায় নির্বাচিত হন। তবে সবাই যে একযোগে ট্রাম্পের বিরোধিতা করেছেন তা নয়। সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা মিচ ম্যাককোনেল বলেছেন, দলের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা ট্রাম্পকে সমর্থন করছেন না। তাদের প্রতি আমার আহ্বান আপনারা এগিয়ে আসুন। পারলে দলীয় নমিনেশনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুন। দল আপনাকে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী করতেও পারে। এদিকে দলের অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী অবসরপ্রাপ্ত নিউরো সার্জন বেন কারসন তার হতাশাজনক ফলাফলে নির্বাচনী লড়াই থেকে সরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন। কারসন বুধবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, তিনি তার নির্বাচনী প্রচারে সামনে এগিয়ে যাওয়ার কোন পথ দেখছেন না এবং বৃহস্পতিবারের টিভি বিতর্কেও অংশ নেবেন না। রিপাবলিকান পার্টির সাউথ ক্যারোলাইনার সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম বুধবার সতর্ক করে বলেছেন, নবেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প হেরেও যেতে পারেন। দলের সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী মিট রমনি বৃহস্পতিবার ট্রাম্পকে চ্যালেঞ্জ করে ভাষণ দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। রমনি এই ধনকুবের ব্যবসায়ীর তীব্র সমালোচনা করেছেন। শরণার্থীর মতো কিছু ইস্যুতে ট্রাম্পের কঠোর অবস্থান রিপাবলিকান ধ্যানধারণার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। মঙ্গলবার ভারমন্ট, ম্যাসাচুসেটসসহ মোট সাতটি রাজ্যে নাটকীয় বিজয়ের মধ্য দিয়ে ট্রাম্প দলে নিজের অবস্থান জোরদার করেছেন। তবে টেক্সাস, আলাস্কা ও ওকলাহোমাতে জয় পেয়েছেন টেড ক্রুজ। আরও ৩৫অঙ্গরাজ্যে এখনও প্রাইমারি বাকি। এরপর ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের প্রার্থী চূড়ান্ত হবে। ৮ নবেম্বর দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে। এখন সবার নজর আগামী ১৫ মার্চ ফ্লোরিডায় পরবর্তী প্রাইমারির দিকে।
×