ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মামুনুল ও জাহিদ এক বছর নিষিদ্ধ

প্রকাশিত: ০৭:২১, ৩ মার্চ ২০১৬

মামুনুল ও জাহিদ এক বছর নিষিদ্ধ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বুধবার বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) ন্যাশনাল টিমস্ কমিটির এক সভা বাফুফে ভবনের বোর্ড রুমে কমিটির চেয়ারম্যান ও বাফুফে সহসভাপতি কাজী নাবিল আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে চারটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল থেকে এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন সাবেক অধিনায়ক-মিডফিল্ডার মামুনুল ইসলাম এবং উইঙ্গার জাহিদ হোসেন। ছয় মাসের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন ডিফেন্ডার ইয়াসিন খান ও ফরোয়ার্ড সোহেল রানা। এছাড়া সতর্ক করা হয়েছে গোলরক্ষক শহীদুল আলম সোহেল, ডিফেন্ডার ইয়ামিন মুন্না এবং আতিকুর রহমান মিশুকে। এ প্রসঙ্গে কাজী নাবিল বলেন, ‘এই তিনজনকে তাদের খেলায় আরও মনোযোগী এবং তাদের প্রফেশনাল কন্ডাক্টে আরও বেশি যতœবান হওয়ার জন্য। কোচ যদি মনে করেন তবে তাদের ক্যাম্পে ডাকতে পারেন। তাদের পারফর্মেন্স এবং ফর্মের ওপর নির্ভর করবে সেটি।’ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ এবং বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে খারাপ পারফর্মেন্সের কারণ অনুসন্ধান করে দেয়া ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির রিপোর্টের সত্যতা পাওয়ায় তাদের এ শাস্তি দেয় বাফুফের ন্যাশনাল টিমস্ কমিটি (ইসি কমিটির অনুমোদনক্রমে)। খেলোয়াড়দের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ, খারাপ খেলা এবং শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্যই শাস্তি দেয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে টিমস্ কমিটি। শাস্তি পাওয়া চার ফুটবলার প্রসঙ্গে নাবিল বলেন, ‘ইয়াসিন খান এবং সোহেল রানার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ ছিল তার সত্যতা পেয়েছি। মামুনুল ইসলাম এবং জাহিদের বিরুদ্ধে অত্যন্ত গুরুতর অভিযোগ পেয়েছি। এই দুইজনের কারণ ব্যাখ্যা সন্তেুাষজনক মনে হয়নি। শাস্তি পেলেও তারা ক্লাব পর্যায়ে খেলতে পারবে। তাদের শাস্তি আজ থেকেই (বুধবার) কার্যকর হচ্ছে।’ জাহিদ এবং মামুনুল বাফুফের কোড অব কন্ডাক্টের ২ এবং ৬ নম্বর ধারা ভঙ্গ করেছে বলে জানান নাবিল। ফুটবলারদের জাতীয় দল থেকে নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে আর্থিক দ- দেয়ার পক্ষে ছিলেন কমিটির একাধিক সদস্য। তবে তাতে একমত হতে পারেননি নাবিল আহমেদ। এ শাস্তির জন্য আপীলের কোন সুযোগ নেই সাজাপ্রাপ্ত ফুটবলারদের। পরে অবশ্য তিনি জানান অভিযুক্তরা ইচ্ছে করলে বাফুফে সভাপতি বা বাফুফের ইসি কমিটির কাছে সাজা কমানোর জন্য আবেদন করতে পারবেন। জানা গেছে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের সেমিফাইনালের আগের দিন মদ্যপ অবস্থায় হোটেলে ঢুকতে গিয়েছিলেন জাহিদ হোসেন। সে রাতেই তাকে ক্যাম্প থেকে বের করে দেয়া হয়। তবে মামুনুল তাকে দু’দিন নিজের রুমে লুকিয়ে রেখেছিলেন বলে অভিযোগ টিমস্ কমিটির। তবে জাহিদের বিরুদ্ধে মদ্যপানের অভিযোগ নিজে স্বীকার করলেও মামুনুলের বিরুদ্ধে এ ধরনের কোন অভিযোগ আছে কিনা, তা পরিষ্কার করে বলেননি নাবিল। তবে এটা পরিষ্কার যে মামুনুলের বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগটা ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের। এ প্রসঙ্গে নাবিল বলেন, ‘মামুনুল জাহিদকে লুকিয়ে রাখার বিষয়টি অস্বীকার করলেও জাহিদ স্বীকার করেছে সে মামুনুলের রুমে লুকিয়ে ছিল, এটি গুরুতর অপরাধ।’ কিন্তু আসলে কতটা সঠিক শাস্তির রায় দিতে পারল বাফুফের ন্যাশনাল টিমস্ কমিটি? অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন, জাতীয় দলে খেলে ফুটবলাররা যেহেতু কোন অর্থ পান না, সেহেতু তাদের মোটা অংকের অর্থদ- দেয়া উচিত ছিল। তেমনটা করলে তবেই শাস্তির যৌক্তিকতা থাকত। তাছাড়া ধরা যাক, আগামী এক বছরে জাতীয় দলের কোন ম্যাচ যদি না থাকে (যদিও আছে), তাহলে এ শাস্তির মানেটা কি! শুধু তাই নয়, খেলোয়াড়রা অপরাধ করেছে জাতীয় দলের ক্যাম্পে থেকে। তাদের ওপর নজরদারি করার জন্য টিম ম্যানেজমেন্ট বলে যে কিছু আছে, অভিভাবক হিসেবে তারা খেলোয়াড়দের নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থই হয়েছে। তাহলে কি খেলোয়াড়দের অধপতনের এ দায়ভার তাদের ওপরও বর্তায় না? সাংবাদিকদের এসব প্রশ্নে নাবিল কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। বরং বিরক্ত হয়ে পাল্টা প্রশ্ন করেছেন- ‘এগুলো আনাড়ি প্রশ্ন... তোমার নাম কী, কোন মিডিয়াতে কাজ কর?’ খেলোয়াড়দের অধপতনের পেছনে দেশের ক্লাবগুলোই দায়ীÑ এমনটা বলেই শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে চেয়েছেন নাবিল! আর এজন্যই সচেতন ফুটবলপ্রেমীরা বলছেন, মামুনুলদের এ শাস্তি হচ্ছে হাস্যকর শাস্তি, এটা কোন শাস্তিই নয়!
×