স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা ॥ ‘ফিরিয়ে দাও আমার তেরোটি বছর’ জনপ্রিয় সিনেমার ডায়ালগ নয় এটা। বাস্তবেই ঘটেছে বিনা বিচারে ১৩ বছর কারাভোগ করার এমন ঘটনা। উচ্চ আদালত থেকে খালাসের রায় দেয়া হয়েছিল ২০০৩ সালে। নিম্ন আদালতে আদেশের কপি পৌঁছালেও এই আদেশ কারাগারে পৌঁছেনি। এ কারণে দীর্ঘ ১৩ বছর বিনা কারণে জেল খাটতে হয়েছে কৃষক জোবেদ আলীকে। অবশেষে বুধবার দুপুরে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা জজ আশরাফুল হক শুনানি শেষে মুক্তির নির্দেশ দেয়ার পর মুক্ত হলেন কলারোয়ার কয়লা গ্রামের কৃষক জোবেদ আলী।
এদিকে বিনা কারণে এক ব্যক্তি ১৩ বছর কারাভোগের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন সাতক্ষীরা আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এ্যাডভোকেট ওসমান গনি। তিনি বলেন, খালাস পাওয়ার পরও ১৩ বছর কারাভোগের ঘটনা দুঃখজনক।
১৯৯৪ সালের ৫ সেপ্টেম্বর তালা উপজেলার মানিকহার গ্রামে শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে গিয়ে মেয়ে লিলিকে (৮) বিষ খাইয়ে হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার হন বাবা জোবেদ আলী পুলিশ এই মামলায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত (দ্বিতীয়) ২০০১ সালের ১ মার্চ জোবেদ আলীকে ৩০২ ধারায় যাবজ্জীবন কারাদ- এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই বছরের কারাদ- দেন। জোবেদ আলী এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপীল করেন। আপীলে ২০০৩ সালের ১৯ মার্চ তিনি খালাস পান। আদেশের কাগজপত্র নি¤œ আদালতে পৌঁছলেও দীর্ঘ ১৩ বছরে তা যথাযথভাবে কার্যকর না হওয়ায় এবং কারাগারে না পৌঁছানোয় মুক্তি পাননি তিনি। অবশেষে বুধবার দুপুরে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতে শুনানি শেষে জোবেদ আলীকে মুক্তির নির্দেশ দেন আদালত।
আদালতের আদেশ সম্পর্কে সরকার পক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পিপি এ্যাডভোকেট ফাহিমুল হক কিসলু জানান, শুনানি শেষে আদালত তাকে খালাসের মুক্তির নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, ‘যার ভুল অথবা অবহেলার কারণে তাকে এতদিন কারাভোগ করতে হলো তাদেরও বিচার হওয়া দরকার। এদিকে, সাতক্ষীরা কারাগারের জেলার আবু তালেব জানান, আদেশের কপি হাতে পেয়ে জোবেদ আলীকে মুক্তি দেয়া হয়েছে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: