ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

তামাবিল দিয়ে পাথর আমদানি শুরু

প্রকাশিত: ০৪:৩১, ৩ মার্চ ২০১৬

তামাবিল দিয়ে পাথর আমদানি শুরু

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে পাথর ও চুনাপাথর আমদানি শুরু হয়েছে। সিলেট চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ-সভাপতি মামুন কিবরিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ভারতের সঙ্গে আইনী জটিলতার অবসান ও মেঘালয় রাজ্যের বনমন্ত্রী প্রেস্টন টাইনসংয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের বৈঠকের পর পুনরায় পাথর আমদানির দরজা খুলেছে। এদিকে তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে পাথর আমদানি শুরু হওয়াতে বেকার হাজারো শ্রমিকদের মুখে ফুটেছে হাসি। আমদানি চালু হওয়াতে থেমে থাকা সংসারের চাকায় আবারও গতি আসবে বলে আশায় বুক বেঁধেছেন তারা। আমদানিকারক সূত্রে জানা যায়, ভারতের মেঘালয় রাজ্য থেকে পাথর ও চুনাপাথর উত্তোলন নিয়ে সে দেশের উচ্চ আদালতে একটি মামলা হয়। ওই মামলার প্রেক্ষিতে গত বছরের ১২ আগস্ট থেকে আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। আমদানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পাথর ও চুনাপাথর লোড, আনলোড, ভাঙ্গা ও পরিবহনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রায় ৫ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েন। আর্থিক অনটনে পড়ে অনেকে ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখা পর্যন্ত বন্ধ করে দেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে সিলেট চেম্বার অব কর্মাসের উদ্যোগে একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল ভারতের শিলংয়ের পাইনউড হোটেলে মেঘালয় রাজ্যের বনমন্ত্রী প্রেস্টন টাইনসং এর সঙ্গে বেঠক করেন। পুনরায় আমদানি চালুর লক্ষ্যে ওই বৈঠকে মন্ত্রী মঙ্গলবার থেকে আমদানি শুরুর আশ্বাস দেন। মন্ত্রীর এমন আশ্বাসের পর মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় ভারত থেকে পাথরবাহী ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করে। বুধবার থেকে পুরোদমে পাথর-চুনাপাথর আমদানি শুরু হয়। ব্যবসায়ীরা জানান, পুরোদমে আমদানি শুরু হলে বাংলাদেশে পাথর ও চুনাপাথরে মূল্য কমার সম্ভাবনা রয়েছে। তামাবিল দিয়ে আমদানিকৃত পাথর দেশের বড় বড় সব উন্নয়ন প্রকল্পে এবং চুনাপাথর সিমেন্ট উৎপাদনে ব্যবহার হয়ে থাকে। দীর্ঘদিন আমদানি বন্ধ থাকায় দেশে পাথর ও চুনাপাথর সঙ্কট দেখা দেয়। ফলে দিন দিন দাম বৃদ্ধি পেতে থাকে। আমদানি চালু হলে পাথর ও চুনাপাথরের দাম স্বাভাবিক হয়ে আসবে। প্রসঙ্গত, গত ফেব্রুয়ারি মাসে সিলেট সফরে এসে মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী ড. মুকুল সাংমাও পুনরায় পাথর ও চুনাপাথর আমদানির আশ্বাস দিয়ে গিয়েছিলেন। তামাবিল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, পরিবেশ বিপর্যয়, ভারতের মেঘালয় রাজ্যের অভ্যন্তরীণ প্রশাসনিক, আইন ও বিচার বিভাগীয় জটিলতায় গত বছরের শুরু থেকেই বারবার বন্ধ হয়ে পড়ে পাথর ও চুনাপাথর আমদানি। তবে গত বছরের ১২ আগস্ট থেকে সম্পূর্ণভাবে তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে পাথর আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। তাই এ স্টেশনের প্রায় ৫ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েন। লোড-আনলোডের কাজ না থাকায় তারা অলস সময় পার করেন তারা। বন্ধ হয়ে যায় তাদের আয়ের পথ। অনেকেই অনাহারে দিনাপাতও করেছেন। পাথর আমদানি বন্ধ হওয়াতে শুধু শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হয়নি। সরকারও হারিয়েছে বড় অংকের রাজস্ব। তামাবিল স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা মোস্তাক আহমদ জানান, প্রতি এক মাসে পাথর-চুনাপাথর আমদানি বন্ধ থাকায় তামাবিল স্থলবন্দর থেকে সরকার প্রায় ৩ কোটি টাকা রাজস্ব হারিয়েছে। সে হিসাবে বছরখানেক সময়ে সরকার ৩০ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব হারিয়েছে।
×