ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জয়টাই দরকার ছিল ভারতের

প্রকাশিত: ০৬:২০, ২ মার্চ ২০১৬

জয়টাই দরকার ছিল ভারতের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দারুণ উজ্জীবিত ভারতের বিরুদ্ধে কোণঠাসা শ্রীলঙ্কা। মঙ্গলবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে এশিয়া কাপের এ ম্যাচে এমনই পরিস্থিতিতে মুখোমুখি হয় দু’দল। ফাইনালে ওঠার আশা জিইয়ে রাখতে হলে শ্রীলঙ্কার জয় অবশ্যই প্রয়োজন আর ভারত জিতে গেলেই সবার আগে ফাইনালে। এমন ম্যাচেও পেসস্তম্ভ লাসিথ মালিঙ্গাকে ছাড়াই নামতে হয়েছে লঙ্কানদের। আর ভারতীয় দল সব ইনজুরি সমস্যা কাটিয়ে এদিন পূর্ণ শক্তি নিয়েই মাঠে নামে। টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই ভারতীয় পেসারদের দাপটে বিপর্যয়ে পড়ে তারা। শেষ পর্যন্ত অবশ্য নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৩৮ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ পেয়েছে শ্রীলঙ্কা। ফাইনালে ওঠার জন্য ভারতের জিততে হলে এই রানটিকেই টপকাতে হবে। মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ শ্রীলঙ্কার জন্য। ভারতের বিরুদ্ধে হারলেই বিদায় প্রায় নিশ্চিত হয়ে যাবে। কারণ রানরেট কম থাকায় এমনিতেই কোণঠাসা লঙ্কানরা। এর মধ্যে আবার ভারতের কাছে হেরে গেলে সেটা আরও নিচে নেমে যাবে। সেক্ষেত্রে শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জিতে কোনভাবে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সঙ্গে পয়েন্ট সমান ৪ করে ফেললেও তা বাড়িয়ে নেয়া অসম্ভব। এমন একটি জরুরী ম্যাচেও নিয়মিত অধিনায়ক ও পেসস্তম্ভ লাসিথ মালিঙ্গাকে ছাড়াই বুধবার নামতে হয়েছে গত এশিয়া কাপের চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কাকে। অবশ্য ভারতীয় দল শেষ পর্যন্ত পুরোপুরি শক্তি নিয়েই নামতে পেরেছে। নির্ভরযোগ্য আক্রমণাত্মক ওপেনার রোহিত শর্মার ইনজুরি সমস্যা থাকলেও তিনি তা কাটিয়ে একাদশে ফেরেন। আরেক ওপেনার শিখর ধাওয়ানও ছোটখাটো যে ইনজুরির কারণে আগের ম্যাচ খেলতে পারেননিÑ তিনিও ফিরেছেন। একাদশের বাইরে চলে গেছেন আজিঙ্কা রাহানে। টস জিতে আগে লঙ্কানদের ব্যাটিংয়ে পাঠায় ভারত। এদিন আবারও উইকেটে কিছুটা ঘাস ফিরে এসেছে বলেই মহেন্দ্র সিং ধোনি পেসারদের কথা ভেবে সুযোগটা নিয়েছেন। তাঁর সেই চিন্তাটা বেশ কার্যকর হয়েছে প্রথম থেকেই। চলতি এশিয়া কাপে কোন দলেরই ওপেনিং জুটি দীর্ঘস্থায়ী হতে পারেনি আগের ম্যাচগুলোয়। এবারও ব্যতিক্রম হলো না। অতি সাবধানী ভঙ্গিতে শুরু করেছিল লঙ্কান ওপেনাররা। সেই মনোসংযোগে চিড় ধরান অভিজ্ঞ পেসার আশিষ নেহরা। ইনিংসের তৃতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলেই ফিরিয়ে দেন দিনেশ চান্দিমালকে (৪)। প্রথম সাফল্য আসার পর ভারতীয় পেসাররা আরও উজ্জীবিত হয়ে চেপে ধরে লঙ্কান ব্যাটসম্যানদের। সুফলও আসে দ্রুত। দলীয় ৫৭ রানের মধ্যে সাজঘরে ফিরে যান শিহান জয়সুরিয়া (৩), তিলকারতেœ দিলশান (১৮) ও অধিনায়ক এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস (১৮)। যদিও পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভার একেবারে খারাপ যায়নি লঙ্কানদের। ২ উইকেটে ৩১ রান করে উইকেটে শুরুর যে বিপদ লুকিয়ে থাকে সেটা উতরে গেছে তারা। কিন্তু পেসার জাসপ্রিত বুমরাহ এদিনও ঝড় তুলেছেন, তাকে সঙ্গ দিয়েছেন পেস অলরাউন্ডার হার্দিক পান্ডে। বিপদে পড়া শ্রীলঙ্কাকে বাঁচানোর চেষ্টা করতে থাকেন ৫ নম্বরে নামা অভিজ্ঞ চামারা কাপুগেদেরা। তিনি একাই লড়ছিলেন। পঞ্চম উইকেটে ৪৩ রান করে একটি সম্মানজনক সংগ্রহে দলকে নিয়ে যাওয়ার ভিত দেন কাপুগেদেরা-মিলিন্ডা শ্রীবর্ধেনে জুটি। এরপর ভারতীয় স্পিন আক্রমণ জেঁকে বসে লঙ্কান ব্যাটিং লাইনআপে। শ্রীবর্ধনে ১৭ বলে ১ চার ও ১ ছক্কায় ২২ রান করে বিদায় নেন রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে। এরপর বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি কাপুগেদেরাও। তিনি ৩২ বলে ৩ চারে ৩০ রান করে বিদায় নেন বুমরাহর বলে। কিন্তু শেষদিকে ঝড় তোলেন থিসারা পেরেরা। ৬ বলে ২ চার ও ১ ছয়ে ১৭ রান করে তিনি দলের সংগ্রহটাকে চ্যালেঞ্জিং অবস্থানে নিয়ে যান। তাঁকে ভালই সঙ্গ দিয়েছেন নুয়ান কুলাসেকারা। তিনি ৯ বলে ২ চারে ১৩ রান করেন। ফলে ৯ উইকেটে ১৩৮ রানের লড়াকু পুঁজি পায় শ্রীলঙ্কা। দুটি করে উইকেট নেন অশ্বিন, হার্দিক ও বুমরাহ। এবার শক্তিশালী ভারতীয় ব্যাটিং লাইনআপের দায়িত্ব এ রান টপকে দলকে ফাইনালে পৌঁছে দেয়ার। অবশ্য লঙ্কান দলের ত্রাস মালিঙ্গাই নেই।
×