ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

লাখ লাখ মানুষের প্রাণহানির আশঙ্কা ॥ সতর্কবাণী যুক্তরাষ্ট্রের

মসুল বাঁধ ধসে ইরাকে সুনামি হতে পারে

প্রকাশিত: ০৩:৩৫, ২ মার্চ ২০১৬

মসুল বাঁধ ধসে  ইরাকে সুনামি  হতে পারে

ইরাকের মসুল বাঁধ আকস্মিকভাবে ধসে পড়ার নজিরবিহীন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এর ফলে সুনামির মতো বিশাল ঢেউয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির শহরগুলো কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পানিতে ডুবে লাখ লাখ মানুষের প্রাণহানি হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র এমন হুঁশিয়ারি জারি করেছে। এদিকে ইরাকের সবচেয়ে বড় জলবিদ্যুত বাঁধের আশপাশের বেশিরভাগ এলাকা ইসলামিক স্টেটের (আইএস) দখলে থাকায় ইরাকী সরকার সরাসরি লোকজন সরিয়ে নিতে পারবে না। তাই ওই এলাকার লোকজনকে নিজেদের ব্যবস্থাতেই সরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বাঁধ ভেঙে গেলে ইরাক যে ভয়াবহ অবস্থার সম্মুখীন হবে, তা নিয়ে লক্ষণীয়ভাবে গুরুতর হুঁশিয়ারি জারি করে মার্কিন সরকার বলেছে, এর ফলে সুনামির মতো ঢেউয়ের সৃষ্টি হবে। যা ইরাকের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ এলাকা ভাসিয়ে নিয়ে যেতে পারে। ইরাকের বিদ্যুত সরবরাহ ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়তে পারে এবং বড় শহরগুলোর অনেক এলাকা কয়েক সপ্তাহ ধরে পানির নিচে থাকতে পারে। যেমনটি হয়েছিল হারিকেনের আঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ অর্লিয়েন্সের অনেক এলাকার অবস্থা। তবে ইরাকী কর্মকর্তারা এই ঝুঁকিকে খাটো করে দেখছেন। বাঁধটি ১৯৮৪ সালে নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু ইরাকে কয়েক দশকের স্বৈরতন্ত্র, যুদ্ধ ও অস্থিতিশীলতার কারণে বাঁধটি চরম ভগ্নদশায় পতিত হয়েছে। রাজধানী বাগদাদ অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস জানিয়েছে, দীর্ঘদিনের এই ভগ্নদশার অর্থ হলো, বিপদ এখন সর্বোচ্চ মাত্রায়। তবে বাঁধটি কখন ভেঙে পড়তে পারে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য নেই। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, বন্যার সম্মুখীন হতে পারে এমন ১৫ লাখ মানুষকে সতর্ক করতে ইরাকী সরকার এখনই জরুরী ব্যবস্থা নিতে পারে। মসুল বাঁধের এমন শোচনীয় পরিস্থিতি নিয়ে দেশটি সামান্যই সচেতন। মসুল বাঁধের আকস্মিক ধসের ফলে ব্যাপক প্রাণহানি, বহুসংখ্যক মানুষ বাস্তুচ্যুত এবং প্লাবনের অনুমিত পথের বেশিরভাগ অবকাঠামো বিধ্বস্ত হতে পারে। দজলা নদীর তীরে অবস্থিত মসুল শহর থেকে বাঁধটি উজানে অবস্থিত। মসুল ইরাকে দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর এবং ২০১৪ সালের জুন থেকে শহরটি এবং আগস্ট থেকে বাঁধটি আইএসের নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্তু এর দুই মাস পরই মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনীর বিমান হামলার সহায়তায় বাঁধটি দখল করে ইরাকের সরকারী বাহিনী। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, বাঁধ ভাঙার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মসুল শহরের কিছু অংশ ৪৫ ফুট পানির নিচে চলে যেতে পারে এবং সেখানকার বাসিন্দারা পালিয়ে যাওয়ারও সময় পাবে না। দজলা নদীর ভাটির দিকের শহরগুলো যেমন, তিরকিত ও আরও দক্ষিণের শহর সামারাতেও প্লাবন হবে। এতে লোকজনের প্রাণহানি, ভবন বিধ্বস্ত, কৃষি জমিতে আবর্জনার স্তূপ এবং বিদ্যুত সরবরাহ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। বন্যার পানি বাগদাদের পৌঁছাতে পারে। তবে সে ক্ষেত্রে সময় লাগতে পারে তিন দিন। Ñটেলিগ্রাফ
×