ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

‘তিনি মনোনয়ন পেলে ট্রাম্পকে বিপুল ব্যবধানে হারাবেন’

হিলারির প্রতি সমর্থন বাড়ছে

প্রকাশিত: ০৩:৩৫, ২ মার্চ ২০১৬

হিলারির প্রতি সমর্থন বাড়ছে

পর পর তিনটি অঙ্গরাজ্যে তার রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বীদের পরাজিত করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাটিক পার্টির অনেকে মনে করেন হিলারি ক্লিনটনই পারবেন চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় ট্রাম্পকে হারাতে। তারা এখন হিলারির সাহায্যে এগিয়ে আসছেন। নিউইয়র্ক টাইমস। ডেমোক্র্যাটদের কথা হলো অভিবাসী, নারী ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে রিপাবলিকান দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী ট্রাম্প যেভাবে আক্রমণ করছেন বেশিরভাগ আমেরিকানের কাছে তা গ্রহণযোগ্য নয়। তারা মনে করেন, কৃষ্ণাঙ্গ, হিসপানিক ও নারী ভোটাররা পার্থক্য গড়ে দিতেন পারেন নির্বাচন যুদ্ধে। তাই হিলারিকে প্রার্থী করা হলে তিনি নবেম্বরের নির্বাচনে ট্রাম্পকে বিপুল ব্যবধানে পরাজিত করতে পারবেন। হিলারি ক্লিনটনের সঙ্গে তারা ইতোমধ্যে দফায় দফায় বৈঠকও করেছেন। নির্বাচনী প্রচারে ট্রাম্পকে হিলারি কিভাবে তুলে ধরবেন সে বিষয়ে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির এই অংশটি এখন পরামর্শ দিচ্ছেন। ট্রাম্পকে একজন নারী বিরোধী ও শ্রমজীবী শ্রেণীর শত্রু দেখিয়ে হিলারির পক্ষে জনসমর্থন তৈরির চেষ্টা করছেন। তারা মনে করেন, ট্রাম্পকে গুরুত্বের সঙ্গে না নিলে নির্বাচনে হেরে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। রিপালিকানদের বেশির ভাগই তাদের প্রাইমারি প্রচার অভিযানে ট্রাম্পকে হিলারির বিরুদ্ধে জোর সমর্থন দিয়েছেন। কানেক্টিকাট অঙ্গরাজ্যের গবর্নর ড্যানিয়েল ম্যালোই বলছেন, ‘ট্রাম্প একজন শক্তিশালী প্রতিপক্ষ, ভোটারদের উদ্বেগের বিষয়গুলা তিনি বোঝেন, হিলারির বিরুদ্ধে তিনি নির্দয় হবেন।’ গত বছর জুন থেকে যখন ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন তখন থেকেই তিনি হিলারির বিরুদ্ধে খড়গহস্ত রয়েছেন। হিলারির ক্যাম্পেন ম্যানেজার রুবি মুক মনে করেন, ট্রাম্প কোন রকম ক্লান্তি ছাড়াই একটানা প্রচারযুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার সামর্থ্য রাখেন। তিনি অর্থনীতি নিয়ে আমেরিকানদের দুশ্চিন্তার বড় জায়গাগুলোতে হাত দিতে চান। ট্রাম্প মনে করেন প্রথাগত রাজনীতিকদের দিয়ে এই কাজ হবে না। বিষয়টি তিনি ভালভাবেই উপলব্ধি করতে পেরেছেন। এ কারণে বাগাড়ম্বর সত্ত্বেও ভোটারদের একটি অংশের কাছে তিনি জনপ্রিয়। হিলারির পরামর্শকরা আরেকটি বিষয়ের ওপর জোর দিচ্ছেন প্রেসিডেন্ট হিসাবে কতটা মানানসই হবেন ট্রাম্প। তাকে কমান্ডার ইন চীফ হিসেবে কেমন দেখাবে ইত্যাদি। এমনকি বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও মনে করেন না ট্রাম্প ওভাল অফিসে দায়িত্ব পালনের উপযুক্ত। ট্রাম্পের হিলারির মতো বিশাল রাজনৈতিক ক্যারিয়ার নেই। তিনি অর্থ ও চটকদার কথা বলে বিতর্ক সৃষ্টি করে মিডিয়ার মনোযোগ নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিতে পেরেছেন। বিপরীতে হিলারি চলছেন সতর্কতার সঙ্গে পা ফেলে। সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের ২০০৪ সালের প্রধান কৌশলবিদ ম্যাথিউ ডাউড এখন একজন স্বতন্ত্র গবেষক। হিলারি সম্পর্কে তিনি মন্তব্য করেছেন, ‘হিলারি একটি বিশাল তেল ট্যাঙ্কার তৈরি করেছেন। এখন তিনি সোমালি জলদস্যুদের মোকাবেলা করার মতো অবস্থায় এসে গেছেন। বৃহস্পতিবার রিপাবলিকান বিতর্কে ট্রাম্প বলেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে মেক্সিকো থেকে আসা অবৈধ অভিবাসীর ঢল আটকাতে তিনি অনেক উঁচু প্রাচীর তৈরি করবেন। অন্যদিকে সাউথ ক্যারোলাইনা ও টেনেসিতে প্রচারাভিযানকালে ভালবাসা ও সৌহার্দ্যরে বার্তা দিয়ে হিলারি বলেন, তিনি দেয়াল নির্মাণের পরিবর্তে সকল প্রতিবন্ধকতা ভেঙ্গে দিতে চান। বর্ণবাদ, লিঙ্গ বৈষম্য, উগ্রতা ও ভেদাভেদ সৃষ্টি এগুলো মার্কিন মূল্যবোধের প্রতি সঙ্গতিপূর্ণ নয় বলেও বৃহস্পতিবার ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা এক বার্তায় হিলারি উল্লেখ করেছেন। ইতিবাচক ও সহনশীল দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে হিলারি এগোলেও তার দলীয় পরামর্শকরা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আক্রমণ আরও বাড়নোর দিকেই ইঙ্গিত দিয়েছেন। তাদের লক্ষ্য ট্রাম্পকে একজন নির্দয় ব্যবসায়ী হিসেবে তুলে ধরা। তাকে নারী, অভিবাসী ও শ্রমজীবী মানুষ বিরোধী দেখিয়ে এদের সমর্থন হিলারির দিকে নিয়ে আসা। -নিউইয়র্ক টাইমস
×