অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ নানা জল্পনা-কল্পনা শেষে ট্যানারি স্থানান্তরের বিষয়ে একমত হয়েছে মালিক ও সরকার পক্ষ। আসছে মার্চেই রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে সাভারে যেতে শুরু করবে ট্যানারি শিল্প। এর আগে ৩০ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগার (সিইটিপি) পরীক্ষামূলকভাবে চালু করে বিসিক। তবে কোন ট্যানারি সেখানে উৎপাদন শুরু করতে না পারায় নদীর পানি দিয়েই সচল রাখতে হয় সিইটিপি। এতে প্রায় কয়েক কোটি টাকা প্রতিদিন ক্ষতিপূরণ দিতে হচ্ছে সরকারকে।
হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি শিল্প সাভারে স্থানান্তরে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু গত ১০ জানুয়ারি ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছিলেন। মন্ত্রীর আলটিমেটামের মধ্য ট্যানারি স্থানান্তর না হলে প্লট বাতিল করার কথা ছিল। যদিও একটি প্লটও বাতিল করা হয়নি। তবে ট্যানারি স্থানান্তরে কয়েক দফা সময়সীমা বেঁধে দেয়ার পর বর্তমানে চলছে চিঠি চালাচালি। ১৫৫টি শিল্প ইউনিটের মধ্যে ১৪২টিতে পাঠানো হয়েছে লিগ্যাল নোটিস।
মন্ত্রীর আলটিমেটামে সজাগ হয়েছে ট্যানারি মালিকরা। তাইতো অবশেষে মার্চের মধ্যে ট্যানারি সাভারে নেয়ার ব্যাপারে একমত হয়েছেন ট্যানারি মালিকরা। এরপর হেমায়েতপুরে চামড়া শিল্পনগরীতে বেড়েছে অবকাঠামো নির্মাণে কাজের গতি। শীঘ্রই কয়েকটি কারখানা সেখানে চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের কাজ শুরু করবে বলে আশা করছেন ব্যবসায়ীরা। আর পাঁচ দফা সময় বাড়ানোর পর, এই প্রকল্পের কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার-সিইটিপির চারটি মডিউলের মধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়েছে দুটি। ট্যানারি মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদারগুডস এ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টারস এ্যাসোসিয়েশন (বিএফএলএলএফইএ) সভাপতি মহিউদ্দিন মাহমুদ মাহিন জানান, আগামী মাসে অর্থাৎ মার্চে কমপক্ষে ২৫টি ট্যানারি সাভারে উৎপাদন শুরু করবে। সেই সক্ষমতা ইতোমধ্যে তাদের তৈরি হয়েছে। এটা হতে পারে স্বাধীনতা দিবসের উপহার। আশা করি মার্চের শেষ সপ্তাহে মন্ত্রীকে দিয়ে আমরা উদ্বোধন করাতে পারব।
যেসব ট্যানারি সাভারে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম এ্যাপেক্স, ঢাকা হাইড ট্যানারি, রিলায়েন্স ট্যানারি, আরএমজি ট্যানারি, ভূইয়া ট্যানারিসহ প্রায় ২৫টি ট্যানারি। আগামী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে এসব ট্যানারি ‘হোয়াইট ব্লু’ যে মিশন দিয়ে মূল বর্জ্য অপসারণ করা হয়, সেটি সাভারে স্থানান্তরিত হবে। এই মেশিন সেখানে স্থানান্তর হলে ৭০ শতাংশ দূষণ কমে যাবে বলে জানান আরএমজি ট্যানারির মালিক মহিউদ্দিন মাহমুদ মাহিন।
ট্যানারি স্থানান্তরের বিষয়ে সিইটিপি প্রকল্প পরিচালক যুগ্ম সচিব আব্দুল কাইয়ুম বলেন, আমরা তো সিইটিপি চালু করেছি ৩০ জানুয়ারি, কোন ট্যানারি না থাকায় নদীর পানি দিয়েই সচল রাখা হয়েছে। তবে আশার কথা ৭৮টি ট্যানারি মালিক বিদ্যুত সংযোগসহ অন্যান্য সুবিধার জন্য আবেদন করেছেন। এর মধ্যে ৪২টি তাদের চাহিদাপত্র (ডিমান্ড নোট) দিয়েছে। তার মানে আগামী মাসেই বেশকিছু ট্যানারি চলে আসবে। তিনি বলেন, আমাদের দুইটা মডিউলের মধ্যে পশ্চিম পাশ দিয়ে অর্ধেক ট্যানারি বর্জ্য পরিশোধন করতে পারব।