ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

আজ জিতলেই ফাইনালে ভারত

প্রকাশিত: ০৬:৫৯, ১ মার্চ ২০১৬

আজ জিতলেই ফাইনালে ভারত

মিথুন আশরাফ ॥ বাংলাদেশের বিপক্ষে যে দল ছন্নছাড়া হয়ে পড়ে, তারা কী আর শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে কুলিয়ে উঠতে পারবে? এ প্রশ্ন নিয়েই আজ মাঠে নামবে শ্রীলঙ্কা। প্রতিপক্ষ ভারত। ম্যাচটিতে ভারত জিতলেই ফাইনালে উঠে যাবে। এক ম্যাচ হাতে রেখেই শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে খেলা নিশ্চিত করে নেবে। আর হারলেও কোন সমস্যা নেই। ভারত শেষ ম্যাচ খেলবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে। স্বাভাবিকভাবেই জিতবে ভারত। তখনও ফাইনালে খেলা নিশ্চিত হবে ভারতের। তবে ম্যাচটিতে শ্রীলঙ্কার হার মানেই দলটি বিপদে পড়ে যাবে। এশিয়া কাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দলটি এরইমধ্যে বাংলাদেশের কাছে হেরে পেছনে পড়ে গেছে। যদি ভারতের কাছে হারে তাহলে একরকম টুর্নামেন্ট থেকে বিদায়ই বলা চলে। এখন পয়েন্ট তালিকায় যে অবস্থা, তাতে পাকিস্তান-আরব আমিরাত ম্যাচের আগে ভারত সবার শীর্ষে আছে। দুই ম্যাচে ২ জয়ে চার পয়েন্ট পেয়েছে। বাংলাদেশ ৩ খেলায় চার পয়েন্ট নিয়ে আছে দ্বিতীয় স্থানে। পাকিস্তান সোমবার আরব আমিরাতের বিপক্ষে জিতলে ২ ম্যাচে তাদেরও ৪ পয়েন্ট হবে। আরব আমিরাত রেশেই নেই। শ্রীলঙ্কার আছে ২ ম্যাচে ২ পয়েন্ট। টুর্নামেন্টে উন্নীত হওয়ার নিয়ম হচ্ছে, পয়েন্ট সমান হয়ে গেলে আগে রানরেট বিবেচনা হবে। এরপর ‘হেড টু হেড’। আজ যদি শ্রীলঙ্কা হেরে যায় ৩ ম্যাচে ২ পয়েন্ট পাবে। শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে জিতলেও ৪ পয়েন্টের বেশি হবে না। তার মানে ভারত জিতলেই ২ পয়েন্ট বেশিতে চলে যাবে। এরপর ভারতের সামনে হুমকি হতে পারে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। আরব আমিরাতের বিপক্ষে জিতলে ৪ পয়েন্ট পাবে পাকিস্তান। এরপর বাংলাদেশের সঙ্গে আছে খেলা। যে দল জিতবে তাদেরই ৬ পয়েন্ট হবে। যদি বাংলাদেশ হেরে যায়, তাহলে ৪ পয়েন্টই থাকবে বাংলাদেশের। পাকিস্তানের হয়ে যাবে ৬ পয়েন্ট। তখন পাকিস্তান ও ভারতই খেলবে ফাইনালে। একটু সমস্যা আছে। যদি পাকিস্তানের বিপক্ষে জিতে যায় বাংলাদেশ, তাহলে বাংলাদেশেরও ৬ পয়েন্ট হবে। আর যদি লীগ পর্বের শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জিতে যায় তাহলে পাকিস্তানেরও ৬ পয়েন্ট হবে। তখন ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশের হবে ৬ পয়েন্ট করে। তখন রানরেট হিসেবে আসবে আগে। কিন্তু যেহেতু আরব আমিরাতের বিপক্ষে শুধু ভারতেরই খেলা বাকি আছে, তাই আজ জিতলেই বলা চলে ভারত ফাইনালে উঠে যাবে। যদি কোন অঘটন ভারতের বিপক্ষে না ঘটায় আরব আমিরাত। তবে আজ হারলেই কোন হিসেব ছাড়াই এশিয়া কাপ থেকে বিদায় নেবে শ্রীলঙ্কা। কারণ, আর একটি ম্যাচ বাকি থাকবে। যে ম্যাচটি আছে পাকিস্তানের বিপক্ষে। পাকিস্তান আরব আমিরাতের বিপক্ষে জিতলে ৪ পয়েন্ট পেয়ে যাবে। তখন বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মধ্যে ম্যাচে যে দল জিতবে তাদের ৬ পয়েন্ট হয়ে যাবে। শ্রীলঙ্কা তখন চাইলেও ৬ পয়েন্ট বানাতে পারবে না। তাই নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, আজ হারলেই বিদায় ঘটবে শ্রীলঙ্কার। ভারত অলরাউন্ডার রবীচন্দ্রন অশ্বিন অবশ্য জেতার আশাই করছেন। আর জিতলেই যে ফাইনালে উঠে যাবে ভারত। আরব আমিরাতের বিপক্ষে ভারত হারবে, তা কোনভাবেই ভাবছে না কেউ। তখন অপরাজিত থেকেই ফাইনালে খেলবে ভারত। শুরুতেই উইকেট নিয়ে কথা বলেছেন অশ্বিন। জানিয়েছেন, ‘এখানে বিস্ময়ের কিছু নেই। যেহেতু তাদের পছন্দসই উইকেট দিয়েছে। যেকোন কন্ডিশনই দেয়া হোক না কেন আন্তর্জাতিক একটি দল হিসেবে আমাদের মানিয়ে নেয়ার সামর্থ্য থাকতে হবে। আমরা খুশি যেভাবে আমরা ভাল অবস্থান নিয়ে আছি। এটা আসন্ন টি২০ বিশ্বকাপের আগে আমাদের ব্যাটসম্যানদের, পেস বোলারদের এবং সবার জন্য একটি ড্রেস রিহার্সেল।’ যে কন্ডিশনই হোক ভারত মানিয়ে নেয় বলেই ধারণা অশ্বিনের, ‘যে কন্ডিশনের মধ্যে আপনাকে ছুড়ে ফেলা হয়েছে সেটা জানা জরুরী এবং সেখানে চেষ্টা করে মানিয়ে উঠে কন্ডিশনকেই হারাতে হবে। এটা বোঝা জরুরী যে এখানে তেমন স্পিন করবে না। এ কারণে উইকেট নেয়ার চেয়ে সঠিক জায়গায় বল রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ টি২০ ক্রিকেটে বোলিং দক্ষতার চেয়ে বরং ব্যাটিংয়ের বিষয়টি নিয়েই চাপ থাকে। এ ধরনের কন্ডিশনে আমি এটাই করতে চাই। যখনই আক্রমণের কোন সুযোগ উন্মুক্ত হবে, তা অবশ্যই করব।’ ব্যক্তিগত অর্জনের চেয়ে দলীয় অর্জনের দিকেই মনোযোগী অশ্বিন, ‘আমি এটাকে আসলে কোন বিষয় মনে করি না। আগামী ৩-৪ মাসে আমরা দীর্ঘ টি২০ মৌসুমের দিকে মনোযোগী। এ কারণে দল হিসেবে আমরা কতটা অর্জন করতে পারি সেটাই মুখ্য এবং সেজন্য প্রতিপক্ষ আসলে কোন বিষয় নয়। গত দুই মাসে আমরা কিছু ভাল টি২০ ক্রিকেট খেলেছি এবং সেটা আমাদের দল হিসেবে আরও ভাল করে তুলেছে।’ পাক-ভারত ম্যাচকে কোহলির মতো অশ্বিনই শুধুই একটি ম্যাচ হিসেবে দেখছেন, ‘এটা শুধুই একটা ম্যাচ ছিল। আমি শুধু একটা ম্যাচকেই ওপরে রাখব সেটা হচ্ছে ২০১১ সালের বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে তাদের বিপক্ষে যে ম্যাচ খেলেছি সেটা। এছাড়া আমরা আসলে কোন বাড়তি চাপ নিচ্ছি না। কারণ আমি জানি যে মানুষ এবং মিডিয়া এটা নিয়ে এত কড়া নজর দেয় বলেই ম্যাচটা নিয়ে মাতামাতি বেশি। কিন্তু আমরা এটাকে অন্য ম্যাচগুলোর মতোই দেখি।’ বুমরাহ ও নেহরা দুর্দান্ত বোলিং করে চলেছেন। তাদের পারফর্মেন্স নিয়ে খুশি অশ্বিন, ‘তাদের দুর্দান্ত পারফর্মেন্স স্পিনার হিসেবে আমার জন্য সহায়ক হয়েছে। আমরা যদি গ্রুপবদ্ধ হয়ে জ্বলে উঠতে পারি সেক্ষেত্রে তা অনেক ভাল হবে। আমরা জানি আশিষ বেশ অভিজ্ঞ একজন। তিনি ডেথ ওভারে দারুণ কিছু করার সামর্থ্য রাখেন এবং বুমরাহ ইয়র্কার বল করতে পারেন। আর এটাই সম্ভবত গত কয়েক বছর আমরা মিস করেছি। এখন এটা আমাদের বোলিং লাইনআপের জন্য বাড়তি শক্তি যোগ করেছে। আমাদের ডেথওভারের বোলিং অতীতের চেয়ে অনেক ভাল।’ বাংলাদেশের বিপক্ষে মালিঙ্গা খেলেননি। ভারতের বিপক্ষে খেলতেও পারেন। ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচে যে পরিণতি হয়েছে। মালিঙ্গা নিয়ে তাই সতর্ক ভারতও। অশ্বিন বলেছেন, ‘মালিঙ্গা একজন চ্যাম্পিয়ন বোলার। তাকে ছাড়া শ্রীলঙ্কা খেললে যেকোন দলের জন্যই ভাল খেলার সহায়ক হবে। যেহেতু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০ দল সবসময়ই খেলে তাই সবার বিষয়েই ধারণা আছে। শ্রীলঙ্কার একটা বিষয় দেখা যায় যে তারা সবসময়ই বড় খেলাগুলোয় সামর্থ্যরে চেয়ে বেশি উজাড় করে দেয়। নিজেদের যোগ্যতার বাড়তি দেখাতে পারে এবং তারা অনেক ভাল দল তারা।’ এখন দেখা যাক, আজ জিতে ভারত ফাইনালে খেলা নিশ্চিত করে নিতে পারে কি না। আর শ্রীলঙ্কার বিদায় ঘণ্টা বাজে কি না।
×