ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

তবুও দমে যাননি

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ১ মার্চ ২০১৬

তবুও দমে  যাননি

৩৩ বছর বয়সী জেসিকা কক্স। জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের এ্যারিজোনায়। তবে সমাজের অন্য দশজনের মতো নয় এই নারী। জন্মের সময় থেকেই তার দুটো হাত নেই। কিন্তু শারীরিক প্রতিবন্ধিতা দমিয়ে রাখতে পারেনি তাকে। বরং অন্যদের কাছে সফল মানুষের এক বিরাট উদাহরণ এখন জেসিকা। স্রেফ পা দিয়ে বিমান চালিয়ে পেয়েছেন বৈমানিকের সনদ। আর বিশ্বের প্রথম হাতবিহীন পাইলট হিসেবে কক্স জায়গা করে নিয়েছেন গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডেও। মার্শাল আর্টে পেয়েছেন ব্লাক বেল্ট। বিশ্বে তিনিই প্রথম হাতবিহীন নারী যিনি এই সনদ পেয়েছেন। শুধু তাই নয়, পা দিয়ে তিনি গাড়ি চালান। ভাল নাচেন। পিয়ানো বাজান। সার্ফিং করেন। ছবি আঁকেন। নিজের মেকাপ করেন। জিম করেন। স্কুবা ডাইভ দেন। জেসিকা এখন তার স্বামী প্যাট্রিক ক্যাম্বারলিয়নকে সঙ্গে নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঘুরে ঘুরে শারীরিক প্রতিবন্ধীদের অনুপ্রাণিত করছেন। তবে তার এই চলার রাস্তা কিন্তু মোটেও মসৃণ ছিল না। এই পর্যায়ে পৌঁছাতে অনেক চড়াই-উৎরাই পার হতে হয়েছে তাকে। খবরে বলা হয়েছে, ছোটবেলা থেকেই দুই হাত না নিয়ে জন্মানোর কারণ খুঁজতেন কক্স। কিন্তু তার এ জন্মগত ত্রুটির ব্যাখ্যা কেউ দিতে পারেনি। এরপর টানা ১১ বছর কৃত্রিম হাত নিয়ে চলেন কক্স। তবে এই কৃত্রিম হাত তার কাছে ছিল অভিশাপের মতো। এরপর ১৪ বছর বয়সে কৃত্রিম হাত বাদ দেন এই নারী। সাধারণ সব কাজ পায়ের সাহায্যে করার চর্চা শুরু করেন। পিয়ানো বাজানো থেকে শুরু করে মার্শাল আর্ট, সার্ফিং সবই তিনি শিখেছেন পা দিয়ে। এর মধ্যে পড়াশোনাও শেষ করেছেন। গ্রাজুয়েশনের পর আগ্রহ জাগে জঙ্গী বিমানের পাইলট হওয়ার। শুরু করেন কাজ। অবশেষে পা দিয়ে বিমান চালিয়ে অর্জন করেন সনদ। নাম ওঠে গিনেস বুকে। তিনি বলেন, কোন কিছুই অসাধ্য নয়। আমার মনে হয় ইচ্ছা থাকলে পা দিয়েও অনেক কিছু করা যায়। লোকজন সাধারণত আমাকে দেখলে অক্ষম মনে করত। কিন্তু আমি তাদের ভুল প্রমাণ দিয়েছি। ৩ বছর বয়স থেকে আমি নিয়মিত জিমে যাই। ছয় বছর বয়স থেকে নাচ শেখা শুরু করি। মডেলিং করেছি। সাঁতার কেটেছি। জেসিকাকে নিয়ে স্বামী প্যাট্রিকেরও উচ্ছ্বাসের শেষ নেই। প্যাট্রিক বলেন, আমি তার প্রশিক্ষক ছিলাম। অনেক দিন ডেটিংয়ের পর আমরা বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেই। আমার মনে হয়, আমি জেসিকার মতো একজন সফল নারীকে বিয়ে করার জন্যই পৃথিবীতে এসেছি। সত্যি জেসিকার ক্লান্তিহীন চেষ্টা, ইতিবাচক মনোভাব এবং সফল হওয়ার জন্য ওর অদম্য মনোভাব আমাকে বদলে দেয়। এরপর ২০১২ সালে আমরা বিয়ে করি। বর্তমানে এ্যারিজোনার টাকসনে বাস করছেন এই দম্পতি। -ডেইলি মেইল অবলম্বনে।
×