ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

১৯ মার্চ বিএনপির কাউন্সিল, তফসিল ঘোষণা

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ১ মার্চ ২০১৬

১৯ মার্চ বিএনপির কাউন্সিল,  তফসিল ঘোষণা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির চেয়ারপার্সন নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। একই সঙ্গে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের জন্যও তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। এ দুটি পদে নির্বাচন হবে আগামী ১৯ মার্চ। ওই দিন বিএনপির কাউন্সিলের দিন ধার্য রয়েছে। সোমবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই তফসিল ঘোষণা করা হয়। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার ওই দুটি পদে নির্বাচনের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাচন কমিশনার হিসেবে এ তফসিল ঘোষণা করেন। তফসিল অনুয়ায়ী বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দয়িত্ব পালন করবেন দলের অপর স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। এ দুটি পদে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও তার বড় ছেলে লন্ডন প্রবাসী তারেক রহমান দায়িত্বে রয়েছেন। তফসিল অনুযায়ী এ দুটি পদে নির্বাচনের জন্য আগ্রহী প্রার্থীদের আগামীকাল ২ মার্চ সকাল ১০টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত দলের কেন্দ্রীয় কর্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে হবে। ৪ মার্চ মনোনয়নপত্র জমা নেয়া হবে। ৫ মার্চ যাচাই-বাছাই করা হবে। ৬ মার্চ সকাল ১০টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে। ১৯ মার্চ দলীয় চেয়ারপার্সন ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন হবে। সংবাদ সম্মেলনে জমির উদ্দিন সরকার জানান, এ দুই পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারীদের বয়স হতে হবে ন্যূনতম ৩০ বছর। বিএনপির চাঁদাদাতা সদস্য হতে হবে। প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারীরা নিজে অথবা লিখিতভাবে এজেন্টের মাধ্যমে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবেন। তবে জানা গেছে, এ দুটি পদে নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করা হলেও দলের কোন নেতাকর্মী এ পদের জন্য মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করবেন না। দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও তার বড় ছেলে বর্তমান সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানই এ দুটি পদে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হবেন। তাদের পক্ষে দলের নেতাকর্মীরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করবেন। ১৯৮৪ সাল থেকে বিএনপির চেয়ারপার্সন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও সংসদের সাবেক বিরোধীদলীয নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ছয় বছর আগে সর্বশেষ কাউন্সিলেও তাকেই নেতৃত্বের আসনে রাখা হয়। ওই কাউন্সিলেই বিএনপিতে সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদ তৈরি করে সেখানে খালেদার বড় ছেলে তারেক রহমানকে বসানো হয়। ইসিতে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন শর্ত অনুযায়ী তিন বছর পর পর কাউন্সিল করার কথা থাকলেও বিএনপির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ছয় বছর পর। সর্বশেষ ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে কাউন্সিল হয়েছিল। মধ্যে ২০১৩ সালের মার্চে কাউন্সিলের ঘোষণা দিলেও তা করতে পারেনি বিএনপি। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য গঠনতন্ত্র সংশোধন করে সম্প্রতি সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদেও নির্বাচনের উদ্যোগ নেয়া হয় দলের এক বৈঠকে। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিএনপির সর্বশেষ কাউন্সিল হয় ২০০৯ সালের ৬ ডিসেম্বর। ওই সম্মেলনে গত আট বছর ধরে গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে লন্ডনে অবস্থান করছেন তারেক রহমান। সেখান থেকেই তিনি ওই সম্মেলনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তৃতা করেন। নিয়ম অনুযায়ী ১৯ মার্চের নির্বাচনে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদে তাকে নির্বাচন করতে হলে লিখিতভাবে মনোনীত এজেন্টের মাধ্যমে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বলেন, কাউন্সিল অধিবেশনে সারাদেশ থেকে কাউন্সিলররা আসবেন। বিভিন্ন দলের নেতা ও বিদেশী প্রতিনিধিরা কাউন্সিলে অংশ নেবেন। আশা করি, সরকার কাউন্সিলে বাধা সৃষ্টি করবে না। এ ধরনের কোন আশঙ্কা করি না বলে উল্লেখ করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির নির্বাচন কমিশনের সদস্য হারুন আল রশিদ, সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আমিনুল হক, রিটার্নিং অফিসার নজরুল ইসলাম খান, সহকারী রিটার্নিং অফিসার আবদুল মান্নান উপস্থিত ছিলেন। এদিকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ মন্তব্য করেছেন, বিএনপির চেয়ারপার্সন পদে খালেদা জিয়ার বিপরীতে কোন প্রতিদ্বন্দ্বী পাওয়া যাবে না। দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব খালেদা জিয়াই বিএনপির চেয়ারপার্সন। সুতরাং এই পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বী পাওয়া যাবে বলে হয় না। যদিও সুযোগ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ওয়ান-ইলেভেন আওয়ামী লীগেরই আন্দোলনের ফসল। এখন তারা এই প্রসঙ্গটি তুলে মিডিয়া গরম করছে। প্রকৃতপক্ষে তারা চায় না গণমাধ্যম নিরপেক্ষ থাকুক। এ কারণে গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের তারা আক্রমণ করছে। সোমবার মৎস্যজীবী দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনটির নেতাকর্মীদের নিয়ে রাজধানীর শেরেবাংলানগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এ মন্তব্য করেন তিনি। এদিকে বিএনপির অপর ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান প্রেসক্লাবের এক অনুষ্ঠানে বলেন, আন্দোলনের জোয়ারের অপেক্ষা রয়েছে বিএনপি। সরকার যদি নিজ থেকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া শুরু না করে তাহলে অশনি সঙ্কেত দেখতে পাবেন।
×