ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ভোলায় কর্মসংস্থান প্রকল্প

কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা ॥ ব্যাংক কর্মকর্তাদের হুমকি

প্রকাশিত: ০৪:১২, ১ মার্চ ২০১৬

কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা ॥ ব্যাংক  কর্মকর্তাদের হুমকি

নিজস্ব সংবাদদাতা, ভোলা, ২৯ ফেব্রুয়ারি ॥ ভোলার তিন ইউনিয়নের হতদরিদ্র প্রায় ১২শ’ নারী-পুরুষের কোটি টাকা কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি কৃষি ব্যাংক থেকে জোরপূর্বক উত্তোলন করে নেয়ার চেষ্টা করছে। টাকা না পেয়ে গত কয়েক দিন ধরে ভোলার ইলিশা কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের চাপ সৃষ্টি করে হুমকি-ধামকি দিয়ে তাদের নাজেহাল করেছে। এতে করে কৃষি ব্যাংকে কর্মকর্তারা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, ‘অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচী প্রকল্পে’র আওতায় হতদরিদ্রদের দিয়ে ইউনিয়নের রাস্তাঘাট সংস্কারসহ উন্নয়ন করার কথা থাকলেও অনেকে ক্ষেতেই তা কাগজ কলমে হয়। এমনিক যে সব শ্রমিকের নামে ব্যাংক হিসাব খোলা হয় তারাও সেই টাকা পায় না। তাদের দিয়ে কয়েক দিন কাজ করিয়ে তাদের নামে এ্যাকাউন্ট খুলে পুরো প্রকল্পের টাকা তুলে নেয়া হয়। অথচ তারা জানেও না তাদের নামে কত টাকা বরাদ্দ হচ্ছে। এভাবেই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেম্বারদের একটি চক্র ভাগবাটোয়ারা করে সরকারের কোটি কোটি টাকা লুটপাট করে থাকে বলে অভিযোগ উঠেছে। ভোলা ইলিশা কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপক রাকিবুল হাসান জানান, তার শাখায় অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচী প্রকল্পে’র ৪০ দিনের কর্মসূচীর আওতায় ভোলা সদর উপজেলার পূর্ব ইলিশা, পশ্চিম ইলিশা, রাজাপুর ইউনিয়নের হতদরিদ্র নারী-পুরুষের নামে ১২ শত এ্যাকাউন্ট রয়েছে। চলতি মাসের ১৯ তারিখ ওইসব এ্যাকাউন্টে প্রায় সরকারী প্রায় ১ কোটি টাকা জমা হয়। হতদরিদ্রদের ওই সব এ্যাকাউন্টের অধিকাংশই টিপসই স্বাক্ষতি। একজন হতদরিদ্র শ্রমিক প্রায় ৮ হাজার করে টাকা পাবে। নিয়ম অনুয়ায়ী এসব এ্যাকাউন্ট হোল্ডারগণ ব্যাংকে এসে টিপসহ দিয়ে টাকা উত্তোলনের কথা থাকলেও তারা ব্যাংকে আসেনি টাকা তুলতে। ইলিশা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের লোকমান মেম্বার ও ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী মেম্বারের স্বামী বশিরসহ একটি প্রভাবশালী চক্র গত বৃহস্পতিবার ১২শ’ এ্যাকাউন্টের চেক কয়েকজন টিপসহ স্বাক্ষর করিয়ে ব্যাংকে আসে টাকা উত্তোলনের জন্য। এ সময় ব্যাংক ম্যানেজার তাদের টাকা দিতে রাজি না হলে তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। কয়েক ঘণ্টা ব্যাংকের কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে চাপ সৃষ্টি করে রাখে। পরবর্তীতে ভোলা শাখার অন্যন্য স্টাফ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ওই চক্রের সদস্যরা রবিবারও ইলিশা কৃষি ব্যাংকে গিয়ে জোরপূর্বক টাকা উত্তোলনের জন্য চাপ সৃষ্টি করে। তারা অনবরত বিভিন্ন ভাবে এখনও ব্যাংকে চাপ সৃষ্টি করছে। এ ব্যাপারে ভোলা কৃষি ব্যাংকের আরএমও আতাহার উদ্দিন জানান, ইলিশা শাখার ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। তিনি যার নামে এ্যাকাউন্ট তাকেই নিয়ম অনুয়ায়ী টাকা দেয়ার জন্য শাখা ব্যবস্থাপককে নির্দেশ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে ইলিশা ইউনিয়নের মেম্বার লোকমান তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি অন্যের নামে টাকা তুলতে কৃষি ব্যাংকে যাননি। এদিকে অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচী প্রকল্পের ভোলায় দায়িত্বশীল উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবুল বাশার নয়ন বলেন, ১৫ ফেব্রুয়ারি ওই তিন ইউনিয়নের সব কাজ সম্পন্ন হয়েছে। টাকা তোলার অনুমতিও দেয়া হয়েছে।
×