ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এমন পিচ আশা করেননি ধোনি

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

এমন পিচ আশা করেননি ধোনি

শাকিল আহমেদ মিরাজ ॥ এশিয়া কাপে নিজেদের প্রত্যাশা মতোই এগোচ্ছে ভারত। টানা দুই ম্যাচে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিয়েছে মহেন্দ্র সিং ধোনির দল। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিদের নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলাই করেছেন বিরাট কোহলি-হারদিক পা-িয়ারা। পাকি শিবিরকে মাত্র ৮৩ রানে গুটিয়ে দিয়ে বহুল আলোচিত ম্যাচে তুলে নিয়েছে ৫ উইকেটে আয়েশী জয়। ব্যতিক্রম কিছু না ঘটলে ফাইনালের দ্বারপ্রান্তে ধোনিবাহিনী। তবু মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামের পিচ নিয়ে সন্তুষ্ট নন ভারত অধিনায়ক। অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের মতো ঘাসে ভরা সবুজ পিচে পেসারদের দাপটের মুখে ব্যাটসম্যানদের নাভিশ্বাস উঠতে দেখে কিছুটা যেন বিস্মিত ‘ক্যাপ্টেন কুল’। আম্পায়ারিং নিয়েও হতাশাটা গোপন করতে পারেননি দু-দুটি বিশ্বকাপ জয়ী সেনাপতি। ‘ভেবেছিলাম টি২০ বিশ্বকাপ সামনে রেখে এশিয়া কাপে ভাল একটা অনুশীলন হয়ে যাবে। মিরপুরের উইকেটে দেখছি উল্টো চিত্র। এখানে বড় শট খেলা যাচ্ছে না। টি২০ ক্রিকেটের প্রধান আকর্ষণ বিগ শটই যদি না থাকে, সেটি আসলে কোন মানেই হয় না!’ পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ শেষে বলেন ধোনি। তিনি আরও যোগ করেন, ‘টি২০তে দর্শক ৮০-১০০ রানের ছোট স্কোরের ম্যাচ দেখতে গ্যালারিতে আসে না। সাড়ে তিন ঘণ্টার বিনোদনে তারা চার-ছক্কাই দেখতে চায়। বাংলাদেশের বিপক্ষে আমরা ১৬৬ করেছিলাম, কিন্তু পাকিস্তানের বিপক্ষে হয়ত ১৪০ করতে পারতাম! টি২০তে লো স্কোর ১৩০-১৪০ এবং হাইস্কোর বলতে ২০০-২৪০ বোঝায়। কিন্তু সেটা কি হচ্ছে? ভেবেছিলাম বিশ্বকাপের প্রস্তুতি সারব, কিন্তু এই পিচে কি সেটি সম্ভব? সমস্যা নেই, আমাদের কেবল আরও আক্রমণাত্মক খেলার চেষ্টা করা উচিত!’ ‘এশিয়ার বিশ্বকাপ’ খ্যাত এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ ঘিরে ছিল দারুণ উন্মাদনা। চিরশত্রু দু-দেশের লড়াই দেখতে বুঁদ হয়ে ছিল অগণিত ক্রিকেটপ্রেমী মানুষ। সেখানে আকর্ষণীয় দ্বৈরথের পরিবর্তে কেবল বোলারদের দাপটই দেখেছেন তারা! ১৭.৩ ওভারে মাত্র ৮৩ রানে অলআউট টসে হেরে ব্যাটিং পাওয়া পাকিস্তান। ছোট্ট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে এক পর্যায়ে দলীয় ৮ রানে ৩ উইকেট হারায় ভারত! হট-ফেবারিটদের বিশ্বসেরা ব্যাটিং লাইন কাঁপিয়ে দেন মোহাম্মদ আমির-মোহাম্মদ সামিরা। যদিও কোহলি-যুবরাজ সিংয়ের দৃঢ়তায় শেষ পর্যন্ত ১৫.৩ ওভারে ৫ উইকেটে বড় জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে ধোনিবাহিনী। ম্যাচে মোট ৩৩ ওভারে ১৫ উইকেটের পতন হয়! তার আগে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচে পতন হওয়া ১৩ উইকেটের ১০টিই নেন দু-দলের পেসাররা। এ নিয়ে মিরপুরে শেষ পাঁচ ম্যাচে আগে ব্যাট করা দল থামে ১৭২, ১৬৬, ১২৯, ১৩৩ ও ৮৩ রানে। শেরেবাংলা যেন ক্রমশ ব্যাটসম্যানদের জন্য বদ্ধভূমি হয়ে উঠছে। পাকিস্তানের বিপক্ষে আলোচিত ম্যাচের আম্পায়ারিং নিয়ে অসন্তোষ ভারত অধিনায়কের। পঞ্চম ওভারে পেসার আশিষ নেহরার একটি বলে রিভার্স সুইপ করতে চেয়েছিলেন পাকিস্তানী ব্যাটসম্যান খুররম মঞ্জুর, বল তার গ্লাভসে লেগে গ্লাভসে আশ্রয় নিলে জোরালো আবেদনে লাফিয়ে ওঠেন উইকেটরক্ষক ধোনি। সঙ্গে ফিল্ডাররাও, উইকেট প্রাপ্তির আনন্দ ছুঁয়ে যায় নেহরাকে! কিন্তু বাংলাদেশী আম্পায়ার সরফুদ্দৌলা সেটি আউট দেননি। টিভিতে বার বার ধোনির ‘অসহিষ্ণু’ আচরণের ছবি দেখানো হয়। ধোনি-কোহলি-অশ্বিনরা ঘোরতর বিস্ময় নিয়ে একে অপরের দিকে তাকাচ্ছিলেন। ওভার শেষে ভারত অধিনায়ককে এ নিয়ে আম্পায়রদের সঙ্গে কথা বলেন। রিপ্লেতেও দেখা যায় বলটি ব্যাটে নয়, খুররমের গ্ল্যাভস ছুঁয়েছে। ১০ রানে প্রাণ পাওয়া পাক ব্যাটসম্যান অবশ্য কিছুক্ষণের মধ্যেই রান আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন। ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনেও সেটি উঠে আসে। বিষয়টা এড়িয়ে যেতে চাইলেও সেটি আউট ছিল বলে মনে করেন ধোনি। কিছুটা মজা করে বলেন, ‘আসলে এ বিষয়ে আমার মন্তব্য করা ঠিক হবে না। টি২০ বিশ্বকাপের আগে এ নিয়ে কথা বলে সাসপেন্ড হতে চাই না! তবে আমি মনে করি, এটা আউট ছিল। আম্পায়ারও একজন মানুষ, সুতরাং তার ভুল হতেই পারে।’ ৬ মার্চ এশিয়া কাপের ফাইনাল, তার একদিন পর ভারতে শুরু টি২০ বিশ্বকাপের ষষ্ঠ আসর।
×