বিশেষ প্রতিনিধি ॥ দু’তিন সপ্তাহ পিছিয়ে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল। ২৮ মার্চের পরিবর্তে এপ্রিলে হবে ক্ষমতাসীন দলটির এই ২০তম জাতীয় সম্মেলন। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের মধ্যেই জাতীয় সম্মেলনের পূর্ণ প্রস্তুতির কর্মকা-ে কিছুটা বিঘœ ঘটায় জাতীয় সম্মেলন অন্তত দু’তিন সপ্তাহ পিছিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দ্রুতই দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক ডেকে পরিবর্তিত জাতীয় সম্মেলনের নতুন তারিখ ঘোষণা করা হবে বলে দলটির একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে।
আগামী ২২ মার্চ ও ৩১ মার্চ প্রথম দুই ধাপে দেড় শতাধিক ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। স্থানীয় সরকারের সর্ববৃহৎ এই নির্বাচনে দলের একক প্রার্থী বাছাই করতে গিয়েই গলদঘর্ম অবস্থা দলটির নীতিনির্ধারক নেতাদের। প্রায় প্রতিদিনই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বৈঠক করে একক প্রার্থিতা বাছাই করতে হচ্ছে দলটির সংসদীয় বোর্ডের নেতাদের। এসব কারণে আওয়ামী লীগের মতো উপমহাদেশের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দলের জাতীয় কাউন্সিলের পূর্ণ প্রস্তুতি নিতে পারছেন না তারা। আর এই বাস্তবতা থেকেই শুক্রবার দলের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভায় জাতীয় সম্মেলনের সময় কিছুটা পিছিয়ে দেয়ার ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে বলে ওই বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা নিশ্চিত করেছেন।
আওয়ামী লীগের একাধিক নীতিনির্ধারক নেতাও সম্মেলনের সময় কিছুটা পিছিয়ে যেতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। তাদের মতে, স্থানীয় নির্বাচন আর কেন্দ্রীয় কাউন্সিল একসঙ্গে সম্পন্ন করা অনেকটাই দূরহ হয়ে পড়েছে। আর এ কারণেই দু’তিন সপ্তাহ পিছিয়ে যেতে পারে কাউন্সিলের দিনক্ষণ। জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাও দলের জাতীয় সম্মেলন আয়োজনের জন্য সুবিধাজনক দিনক্ষণ নির্ধারণ করতে সংশ্লিষ্ট নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ শনিবার জনকণ্ঠকে বলেন, খুব শীঘ্রই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠকে ২৮ মার্চেই জাতীয় সম্মেলন হবে, নাকি কিছুটা সময় পিছিয়ে নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হবে- সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
দিনক্ষণ নিয়ে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক মহলে আলোচনা চললেও জাতীয় সম্মেলনের প্রস্তুতিও চলছে সমানতালে। তবে জাতীয় সম্মেলনকে ঘিরে দলটির কোটি-সমর্থকের একই প্রশ্ন- কে হচ্ছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক? বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম স্বপদে পুনর্নির্বাচিত হয়ে হ্যাট্রিক করছেন, নাকি চমক দেয়ার মতো ওই পদে নতুন মুখ আসছে?
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জাতীয় কাউন্সিলে কে হবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার প্রধান সহযোদ্ধা- এ নিয়ে ধোঁয়াশা এখনও কাটেনি। কাউন্সিলকে ঘিরে ওই পদে হাতেগোনা কয়েকজনের নাম দলটির নেতাকর্মীদের মুখে মুখে উচ্চারিত হলেও প্রতিবারের মতো আগামী কাউন্সিলেও সাধারণ সম্পাদক বেছে নেয়ার পূর্ণ দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপরই দলের কাউন্সিলর ও ডেলিগেটররা যে ছেড়ে দেবেন- এটি প্রায় নিশ্চিত।