ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কাপ্তাই হ্রদে ভেসে ওঠা জমিতে বোরো আবাদ হয়নি

প্রকাশিত: ০৩:৪৮, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

কাপ্তাই হ্রদে ভেসে ওঠা জমিতে বোরো আবাদ হয়নি

নিজস্ব সংবাদদাতা, রাঙ্গামাটি, ২৮ ফেব্রুয়ারি ॥ সময় মত কাপ্তাই হ্রদের পানি না কমায় হ্রদের বুকে ভেসে ওঠা সাড়ে ১৩ হাজার হেক্টর জলে ভাসা জমিতে এবার বোরো আবাদ ভেস্তে গেছে। কাপ্তাই হ্রদবেষ্টিত রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলার ১০টি উপজেলায় চাষাবাদ ব্যাহত হয়েছে। প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে জলে ভাসা জমিতে চাষাবাদ করার জন্য জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে হ্রদের পানি কমানো হয়ে থাকে । এবার জলবিদ্যুত উৎপাদন ব্যাহত না হওয়ার জন্য কাপ্তাই হ্রদের পানি ধীর গতিতে কমানো হয়েছে । ফলে সময় মত হ্রদের পানি না কমায় অধিকাংশ জলে ভাসা জমিতে কৃষকরা বোরো ধানের আবাদ করতে পারেনি। দেশের এমমাত্র জলবিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনের লক্ষ্যে ষাটের দশকে কাপ্তাই বাঁধ নির্মাণের ফলে এ অঞ্চলে ৫৮ হাজার হেক্টর ফসলী জমি হ্রদের পানিতে তলিয়ে যায়। সেই থেকে শুষ্ক মৌসুমে হ্রদের পানি কমে গেলে সাড়ে ১৩ হাজার হেক্টর ফসলী জমি ভেসে ওঠে। সেখানে বোরো আবাদ করে হ্রদবেষ্টিত ১০টি উপজেলার দরিদ্র কৃষক। চলতি মৌসুমে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার বাঘাইছড়ি, লংগদু,বরকল , জুরাছড়ি,নানিয়াচর ,সদর, কাপ্তাই, বিলাইছড়ি এবং খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা ও মহালছড়ি উপজেলায় ফসলী জমি থেকে কাপ্তাই হ্রদের পানি না কমাতে হ্রদের গর্ভে ভেসে ওঠা ছোট বড়চর ও বিভিন্ন স্থানে জেগে ওঠা ক্ষেতের মাঠে কৃষকরা বোরো আবাদ শুরু করতে পারেনি। এবার ১০টি উপজেলার মধ্যে বাঘাইছড়ি , দীঘিনালা ও মহালছড়ি উপজেলায় কিছু জমি আবাদ হয়েছে। অন্য উপজেলাগুলোয় বোরো জমিতে বেশী পানি থাকায় কৃষক এবার বোরো আবাদ করতে পারেনি। হ্রদে ভাসা এই সব জমির পানি না শুকানোর ফলে সময় মত বীজ তলা তৈরি হয়নি। ফলে বোরো আবাদ ব্যাহত হয়েছে। । হ্রদে ভাসা ১৩ হাজার ৫শত ৫২ হেক্টর জমিতে কৃষকরা শুধু ধানের আবাদ নয় একই সঙ্গে তরমুজসহ নানা মৌসুমী ফসলের আবাদও করে থাকে। এবার পানি না শুকানোর ফলে তাও ব্যাহত হয়েছে। চাষাবাদের এই কর্মকা-ে ২ জেলার পাহাড়ি বাঙ্গালী প্রায় ২লাখ লোক নিয়োজিত হয়। এরা সকলই দরিদ্র কৃষক । হ্রদবেষ্টিত ১০ উপজেলার বিপুলসংখ্যক কৃষকের একমাত্র সম্বল হলো এই জলে ভাসা জমির ফসল। কাপ্তাই হ্রদের পানি ছাড়ার জন্য সম্প্রতি নানিয়াচর উপজেলাবাসী মিছিলও করেছে। বাঘাইছড়ির কৃষক সফি বলেন, আমাদের সমস্ত জমিই সারাবছর এ কাপ্তাই হ্রদের পানিতে নিমজ্জিত থাকে। এই অবস্থায় আমাদেরকে স্বল্পসময়ের মধ্যে কৃষি কাজ সম্পন্ন করতে হয় দেরী হলে বর্ষার পানিতে ফসল তলিয়ে যায়। যার কারণে আবাদ করতে কৃষকদের প্রচুর খরচ পড়ে।এবার একদিকে হ্রদের পানি যেমন শুকায়নি তেমনি আগাম বর্ষা শুরু হওয়ায় চাষাবাদের বিশাল কর্মযজ্ঞ ব্যাহত হয়েছে।
×