ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শতাধিক ঘর নির্মাণ ॥ তালতলীতে নদী দখল

প্রকাশিত: ০৩:৪৭, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

শতাধিক ঘর নির্মাণ ॥ তালতলীতে নদী দখল

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী (বরগুনা), ২৮ ফেব্রুয়ারি ॥ তালতলী উপজেলার শারিখালী ইউনিয়নের কচুপাত্রা বাজারসংলগ্ন কচুপাত্রা নদী দখল করে অবৈধ ঘর নির্মাণের মহোৎসব চলছে। শারিখালী ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসে বাবুল টাকার বিনিময়ে এ কাজ করছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আমতলী-তালতলী মহাসড়কের মধ্যবর্তী স্থানে কচুপাত্রা বাজার। বাজারটি অতিপুরাতন। এ বাজারে খাস খতিয়ানভুক্ত এক একর ও জেগে ওঠা চরসহ প্রায় ২০ একর জমি রয়েছে। দখলদাররা টাকার বিনিময়ে গত এক সপ্তাহ ধরে এ জমিতে শতাধিক ঘর নির্মাণ করেছে। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বাবুল, পচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি আবুল কালাম আজাদ ও শারিকখালী ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি আল আমিন শিকদার দখল ব্যাণিজ্যে মুখ্য ভূমিকা পালন করছে। তারা (দখলবাজরা) প্রস্থ হিসাবে হাতপ্রতি তিন হাজার টাকা নিয়ে দখল বুঝিয়ে দিচ্ছে। দখলদারদের কাছ থেকে ওই এলাকার শাহ আলম হাওলাদার, মিজানুর হাওলাদার, মাসুম মুন্সী, আলো জোমাদ্দার, কামাল জোমাদ্দার, ছালাম জোমাদ্দার, জয়নাল হাওলাদার, সুমন চন্দ্র, রশিদ শিকদার, মজিবুর রহমান, সাইদুল ইসলাম তপু, আবদুর রহিম, আইউব আলী শেখ, আবু সালেহ, সিদ্দিক গাজী, সাইদুল বয়াতী, নুরুল হক, দুলাল মোল্লা, সোনা মিয়া, মাহাবুব ফকির, আজিজ মিয়া, জামাল, মামুন হাওলাদার ও খবির শিকদারসহ শতাধিক লোক টাকার বিনিময়ে জমি নিয়ে ঘর নির্মাণ করেছে। এভাবে (তারা) দখলদাররা সরকারী জমি বিক্রি করে প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ওই বাজারের ব্যবসায়ী আশরাফুল ইসলাম জানান, বাজারে আমার একটি পুরাতন ঘর ছিল। ওই ঘর নতুন করে তুলতে গেলে চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বাবুল ও তার লোকজন ৪০ হাজার টাকা দাবি করেন। আমি টাকা দিতে অস্বীকার করলে তারা আমাকে ঘর তুলতে দেয়নি। তিনি আরও জানান, কচুপাত্রা বাজারের সরকারী জমি চেয়ারম্যান ও তার লোকজন হাতপ্রতি দুই-তিন হাজার টাকা নিয়ে দখল বুঝিয়ে দিচ্ছে এবং ঘর তুলতে সহযোগিতা করছে। জমির দখল বুঝে নেয়া খবির শিকদার জানান, নদীর পাড়ের জায়গাতে সবাই ঘর তুলেছে, আমিও তুলেছি। তবে কিসের বিনিময়ে সরকারী জমি দখল নিয়েছেনÑ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন উত্তর না দিয়ে ফোন কেটে দেন। কড়াইবাড়িয়া ভূমি অফিসের তহসিলদার খেখেনু জানান, কচুপাত্রা বাজারের সরকারী খাস জমি দখল করে অবৈধ ঘর তুলছে। এলাকাবাসী অভিযোগ করেছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও তার লোকজন টাকার বিনিময়ে জমি দখল করে ঘর নির্মাণ করতে সহযোগিতা করছে। তিনি আরও জানান, নির্মাণকৃত ঘর উচ্ছেদের জন্য তালিকা করা হচ্ছে। তালিকা হলে ঘর উচ্ছেদ করা হবে। অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বাবুলের মুঠোফোনে বার বার তার বক্তব্য নেয়ার জন্য ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন ধরেনি। তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসরাইল হোসেন বলেন, অবৈধ ঘর তোলা হচ্ছে এ খবর পেয়ে তহসিলদারকে ঘর উচ্ছেদের জন্য নোটিস দিতে নির্দেশ দিয়েছি। কলাপাড়ায় খাল দখল নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া থেকে জানান, উপজেলার বালিয়াতলী ইউনিয়নের আমতলী খাল দখল করে তোলা হচ্ছে স্থাপনা। ইতোমধ্যে ৭/৮টি স্থাপনা তোলা হয়েছে। বর্তমানে স্থাপনা তোলার কাজ অব্যাহত রয়েছে। কলাপাড়া-কুয়াকাটা বিকল্প সড়কের আমতলী খালের গার্ডার ব্রিজ পার হয়ে গেলেই চোখে পড়বে এসব স্থাপনা। খালটি দখলের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। পুরনো দোকানিরা স্থাপনার মালিকের নাম পর্যন্ত জানাতে পারেন নি। যেভাবে স্থাপনা তোলা হচ্ছে তাতে একদিকে সড়কের পাশের মনোরম পরিবেশ নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি খালটি বেদখল হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় ভূমি প্রশাসনের সহকারী কমিশনার দীপক কুমার রায় জানান, খাল দখলমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বালিয়াতলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবিএম হুমায়ূন কবির জানান, তাদের না জানিয়ে এসব স্থাপনা তোলা হচ্ছে।
×