ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কাউন্সিলের পর বিএনপি মাঠে নামবে ॥ হাফিজ

প্রকাশিত: ০৮:২৮, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

কাউন্সিলের পর বিএনপি মাঠে নামবে ॥ হাফিজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাতীয় কাউন্সিলের পর খালেদা জিয়ার নির্দেশে বিএনপি আন্দোলনে মাঠে নামবে বলে জানিয়েছেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ‘জিয়া নাগরিক ফোরাম’ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। মেজর হাফিজ বলেন, এটিএম কার্ড জালিয়াতিতে ক্ষমতাসীন দলের বড় বড় নেতা জড়িত থাকায় পুলিশ তদন্তকাজ করতে সাহস পাচ্ছে না। তিনি বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত জতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠানের জন্য ভেন্যু পাইনি। সরকার সমর্থকরা আমাদের বিভিন্নভাবে বাধা দিচ্ছে। তিনি বলেন, বিএনপির কাউন্সিলে গঠনতন্ত্রে কিছু কিছু পরিবর্তন আনা হবে। আর কিছু উপ-কমিটি গঠন করা হবে, যার মাধ্যমে জাতীয় ইস্যুর ওপর বিভিন্ন সেমিনার ও আলোচনা সভা করা হবে। তাতে দলের নেতৃত্ব বাড়বে। হাফিজ বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন দিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা পরিবর্তন হয় না। তারপরও ১১৪টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থীকে মনোনয়নপত্র জমা দিতে বাধা দেয়া হয়েছে। আবার অনেক এলাকায় মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে ভোলার তজুমদ্দিনে বিএনপির প্রার্থীকে গোপনে অন্য এলাকায় ভোটার করে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। এতেই বোঝা যায়, নির্বাচনের নামে নাটক ও প্রহসন হচ্ছে। বিচারালয়ে ন্যায়বিচার হচ্ছে না বলে হতাশা ব্যক্ত করে হাফিজ বলেন, বিচার বিভাগের কাছে জনগণের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির মাঝে ফারাক আছে। এর প্রধান কারণ বিচারক পদে যারা নিয়োগপ্রাপ্ত হন তাদের জন্য কোন নীতিমালা নেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে বিচারক নিয়োগপ্রাপ্ত হচ্ছেন। আর বিচারপতিদের জবাবদিহিতার কোন স্থান নেই। তারা নিজেদের বিবেকের কাছে জবাবদিহি করবেন। বাহাত্তরের সংবিধানে ছিল বিচারপতিরা জবাবদিহি করবেন জাতীয় সংসদের কাছে। বাকশাল আমলে রাষ্ট্রপতির কাছে জবাবদিহি করার কথা বলা হয়েছিল। এখন সেটিও নেই। আওয়ামী লীগ সরকার এ রাষ্ট্রকে ধ্বংস করে দিয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, গণতন্ত্রের নামে দেশে লুণ্ঠনতন্ত্র চলছে। তাদের কোন জবাবদিহিতা নেই। বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে হাফিজ বলেন, পদ-পদবির লোভ না করে দেশের স্বার্থে এ সরকারের বিরুদ্ধে মাঠে নামতে হবে। দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের স্বার্থে আসন্ন জাতীয় কাউন্সিলের পর আমরা মাঠে নামতে চাই। বিএনপিকে অনেক তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা হয়েছে। বিভিন্ন সময় বলা হয়েছে দেশে বিএনপি বলে কোন দল নেই, এদের ক্ষমতা নেই। আন্দোলন করার মতো এদের কোমরে জোর নেই। কাউন্সিলের পর আমরা এসব সমালোচনার জবাব দিতে চাই। তিনি বলেন, এ স্বৈরাচারী সরকারকে হটাতে হবে। আওয়ামী লীগ দেশকে মূর্খ জাতিতে পরিণত করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, এ সরকার দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। জিয়া নাগরিক ফোরামের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেনÑ বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, বিএনপির সহ-স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, এনপিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য মঞ্জুর হোসেন ঈসা, কর্মজীবী দলের সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসেন সরদার প্রমুখ। মাইনাস টু ফর্মুলায় আওয়ামী লীগের দুই সিনিয়র নেতা জড়িত ছিলেনÑ শাহ মোয়াজ্জেম ॥ মাইনাস টু ফর্মুলার সঙ্গে আওয়ামী লীগের দুই সিনিয়র নেতা জড়িত ছিলেন অভিযোগ করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেছেন, তাদের কেন বিচারের আওতায় আনা হচ্ছে না? শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে অল কমিউনিটি ফোরাম নামক একটি সংগঠন আয়োজিত আালোচনা সভায় তিনি এ অভিযোগ করেন। শাহ মোয়াজ্জেম বলেন, ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হলেও ক্ষমতাধর ওই দুই নেতাকে মন্ত্রিত্ব দেয়া হয়নি। পরে অবশ্য তারা মন্ত্রিত্ব পান। মাইনাস টু ফর্মুলার সঙ্গে জড়িত দলীয় নেতাদের বাদ দিয়ে কেন পত্রিকা সম্পাদকদের দায়ী করা হচ্ছে- এমন প্রশ্নও করেন তিনি। আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণেরও বিরোধিতা করে শাহ মোয়াজ্জেম বলেন, বিএনপি কেন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে যাচ্ছে? জাতীয় নির্বাচন ও সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কি শিক্ষা হয়নি? তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনে না গিয়ে এ সরকারকে মেনে নেয়া বিএনপির জন্য একটি বড় ব্যর্থতা। পরবর্তীতে আবার সে সরকারের অধীনেই সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভা নির্বাচনে গিয়ে বিএনপি আরও একটি ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কবিরুল হায়দার চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, দলের সহ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব প্রমুখ।
×