ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা লড়াই আজ

প্রকাশিত: ০৫:০৯, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা  লড়াই  আজ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ‘কষ্ট নেবে কষ্ট, হরেক রকম কষ্ট আছে, কষ্ট নেবে কষ্ট।’ দুই বছর আগে দুই ম্যাচের টি২০ সিরিজে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটাররা যেন বাংলাদেশ শিবিরে ঢুকে শুধু কবিতার এ লাইনগুলোই বলেছেন। ফেব্রুয়ারিতে চট্টগ্রামে হওয়া সিরিজে যে শুধু বাংলাদেশকে কষ্টই দিয়েছে শ্রীলঙ্কা। দুটি ম্যাচের নিষ্পত্তিই হয়েছে শেষ বলে গিয়ে। যেখানে বাংলাদেশের জেতার সম্ভাবনাই ছিল অনেক বেশি। কিন্তু জিততে পারেনি বাংলাদেশ। আজ যখন মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে রাত সাড়ে সাতটায় বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা মুখোমুখি হবে তখন সেই কষ্টগুলোই সামনে চলে আসছে। আর সবার মনেই একটি কথাই উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে, এবার কষ্ট না আনন্দ মিলবে! দুই বছর আগের স্মৃতি এখনও ধপধপ করে জ্বলছে। শুধুই যে কষ্ট মিলেছিল তখন। জয়ের এত কাছে গিয়েও পরপর দুই টি২০তেই জেতা যায়নি। প্রথম টি২০তে শেষ বলে মাত্র ৩ রান করতে পারলেই জয় মিলত। ২ রান করলে হত টাই। তখন সুপার ওভার হত। কিন্তু বাংলাদেশ আর কোন রানই করতে পারল না। দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ২ রান না নিতে দিলেও হয়ে যেত। ১ রান নিলে হত টাই। সুপার ওভার হত। কে জানে সুপার ওভারে বাংলাদেশ হয়ত জিতেও যেতে পারত। কিন্তু বাউন্ডারিই মেরে দিল লঙ্কানরা। দুই ম্যাচেই শেষ বলে জয় নিহিত ছিল। কিন্তু আক্ষেপ, কষ্ট, জ্বালা ছাড়া আর কিছুই মিলেনি তখন। এ দুটি হার বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের মনোবল এতটাই দুর্বল করে দিয়েছিল যে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শুধুই হার হয়েছিল। বছরটিতে দেশের মাটিতে হওয়া টি২০ বিশ্বকাপে হংকংয়ের বিপক্ষেও হার হয়েছিল। এমনই অবস্থা হয়েছিল, বিশ্বকাপের বাছাইপর্বই উতরানো কষ্ট হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের। রানরেটে শেষ পর্যন্ত রক্ষা হয়। তবে বাছাইপর্বে দুটি ম্যাচ জেতার আগে ওয়ানডে ও টি২০ ম্যাচ মিলিয়ে টানা ৯ ম্যাচে হারে বাংলাদেশ। বাছাইপর্বে আফগানিস্তান ও নেপালকে হারানোর পর টি২০, ওয়ানডে ও টেস্ট মিলিয়ে টানা ১২ ম্যাচে হেরেছে বাংলাদেশ। এতটাই করুণ অবস্থা হয়েছিল বাংলাদেশের। শেষে অক্টোবর থেকে জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে যে জেতা শুরু হয়, ২০১৫ সালটিতো রাঙ্গিয়েই তোলে বাংলাদেশ। কিন্তু শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টানা দুই টি২০ ম্যাচে হারের ক্ষত দীর্ঘদিন থাকে। তাইতো টানা ২৩ ম্যাচের মধ্যে মাঝখানে দুটি জয় বাদ দিলে ২১টি ম্যাচেই হারে বাংলাদেশ। সেই ক্ষত এবার দূর করার সুযোগ এসেছে। আবার টি২০তে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি আজ বাংলাদেশ। যে দলটির বিপক্ষে এর আগে চার ম্যাচে খেলে একটিতেও জিততে পারেনি বাংলাদেশ। ২০০৭ সালে টি২০ বিশ্বকাপে ৬৪ রানে, ২০১২ সালের টি২০ বিশ্বকাপে ১৭ রানে, ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে চট্টগ্রামে সিরিজের প্রথম টি২০তে ২ রানে ও দ্বিতীয় ম্যাচে ৩ উইকেটে হারে বাংলাদেশ। এবার দুই দলের মধ্যকার যখন পঞ্চম টি২০ ম্যাচ হবে, সেটি আবার এশিয়া কাপের ম্যাচ। যে টুর্নামেন্টে শ্রীলঙ্কাকে হারানোর স্মৃতি আছে বাংলাদেশের। সেটি খুব বেশি দূরের স্মৃতি নয়। ২০১২ সালেই মিরপুরে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে প্রথমবারের মত এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলে বাংলাদেশ। এশিয়া কাপে ১২বার মুখোমুখি হয়ে সেই একবারই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জিতেছিল বাংলাদেশ। সেই জয়টিই এখন বাংলাদেশের প্রেরণা হয়ে উঠতে পারে। টি২০ ম্যাচে বাংলাদেশ এমনিতেই দুর্বল দল। আবার ভারতের কাছে হারের পর সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষেও ব্যাটিংয়ে যে দুর্বলতা দেখিয়েছে, তাতে শ্রীলঙ্কা সুযোগ নিয়ে নিতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা যদি আরব আমিরাতের বিপক্ষে ম্যাচের মতোই ব্যর্থতা দেখায়, তাহলে বিপদ আসাটা সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে। তবে আশার বিষয় হচ্ছে শ্রীলঙ্কাও আরব আমিরাতের বিপক্ষে ভাল খেলেনি। আরব আমিরাতের বিপক্ষে বাংলাদেশ যদি ব্যাটিংয়ে খারাপ করে (১৩৩ রান করেছে), তাহলে শ্রীলঙ্কা (১২৯ রান করেছে) ব্যাটিং ব্যর্থতায় আরও একধাপ এগিয়েই ছিল। দুই দলের ব্যাটিংই যেহেতু খারাপ হয়েছে, আজ যে দল ব্যাটিং ভাল করতে পারবে, বোঝাই যাচ্ছে, তাদেরই জয় মিলবে। আর জয় যেন বাংলাদেশের হয়, সেটিই সবার চাওয়া। বাংলাদেশ জিতলেই যে দুইবছর আগের কষ্ট পরিণত হয়ে যাবে আনন্দে!
×