আবুল হোসেন, বেনাপোল থেকে ॥ চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি কমলেও গত বছরের তুলনায় রফতানি বাণিজ্য বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে এই বন্দর দিয়ে রফতানি হয়েছে ২ লাখ ৪৭ হাজার ২৭৬ মেট্রিক টন পণ্য। গত বছরের একই সময়ে রফতানি হয়েছিল এক লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৩ মেট্রিক টন পণ্য।
ব্যবসায়ী ও কাস্টম কর্মকর্তারা বলছেন, আগে ব্যবসায়ীরা বেশিরভাগ পণ্য আমদানি করতেন। কিন্তু এখন অনেক পণ্য দেশেই উৎপাদন হচ্ছে। যে কারণে আমদানি কমলেও রফতানি দিনকে দিন বাড়ছে।
বেনাপোল কাস্টম সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে ভারতে রফতানি হয় ২৪২ কোটি ৬৬ লাখ টাকা মূল্যের ৩৫ হাজার ৪৫১ মেট্রিক টন পণ্য। আগস্ট মাসে ভারতে রফতানি হয়েছে ৩৬৪ কোটি ২৩ লাখ টাকা মূল্যের ৩৩ হাজার ৮৮০ মেট্রিক টন পণ্য। সেপ্টেম্বর মাসে রফতানি হয়েছে ২৮২ কোটি ৫৩ লাখ টাকা মূল্যের ৩৭ হাজার ৫৫৬ মেট্রিক টন পণ্য। অক্টোবর মাসে ভারতে রফতানি হয় ২৫২ কোটি ৫৭ লাখ টাকা মূল্যের ৩৯ হাজার ৩৪৭ মেট্রিক টন পণ্য। নবেম্বর মাসে ভারতে রফতানি হয়েছে ২৪১ কোটি ৭০ লাখ টাকা মূল্যের ৩৩ হাজার ৩১২ মেট্রিক টন পণ্য। ডিসেম্বর মাসে রফতানি করা হয় ২৮১ কোটি ১৩ লাখ টাকা মূল্যের ৩৫ হাজার ৬৩০ মেট্রিক টন পণ্য এবং গত জানুয়ারি মাসে ভারতে রফতানি হয়েছে ৩২৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকা মূল্যের ৩২ হাজার ১১০ দশমিক মেট্রিক টন পণ্য।
২০১৪-১৫ অর্থবছরের জুলাই মাসে ভারতে রফতানি করা হয় ২০৮ কোটি ৩৬ লাখ টাকা মূল্যের ২৪ হাজার ৮৫৯ মেট্রিক টন পণ্য। আগস্ট মাসে ভারতে রফতানি হয় ১৭৩ কোটি ২৪ লাখ টাকা মূল্যের ২১ হাজার ৫৭৩ মেট্রিক টন পণ্য। সেপ্টেম্বর মাসে ভারতে রফতানি হয় ৩৭৩ কোটি ১৯ লাখ টাকা মূল্যের ৩৬ হাজার ৮৩৩ মেট্রিক টন পণ্য। অক্টোবর মাসে রফতানি করা হয় মাত্র ৯৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা মূল্যের ১৫ হাজার ৭৯৮ মেট্রিক টন পণ্য। নবেম্বর মাসে রফতানি হয় ১৬০ কোটি ৯২ লাখ টাকা মূল্যের ২৪ হাজার ৪৮১ মেট্রিক টন পণ্য। ডিসেম্বর মাসে রফতানি হয়েছিল ১৯৬ কোটি ৪৭ লাখ টাকা মূল্যের ২২ হাজার ৬০ মেট্রিক টন পণ্য এবং জানুয়ারি মাসে ভারতে রফতানি হয়েছিল ১৮১ কোটি ২৯ লাখ টাকা মূল্যের ২০ হাজার ১৭৯ মেট্রিক টন পণ্য।
যশোর চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান খান জানান, আমাদের দেশ রফতানিতে ভাল করছে। আগে সব ধরনের পণ্যর কাঁচামাল আমদানি করা লাগত, কিন্তু এখন দেশেই অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। যে কারণে রফতানি বাণিজ্য বাড়ছে।
দেশের শতভাগ রফতানিমুখী প্রতিষ্ঠান প্যাসিফিক এ-ওয়ান গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাসানুজ্জামান টিটো বলেন, ৮ থেকে ১০ বছর আগেও আমরা বাইরের দেশ থেকে পণ্য আমদানি করতাম। কিন্তু এখন সেই চিত্র পাল্টে গেছে। আমদানির বদলে দেশেই গড়ে উঠেছে শিল্প প্রতিষ্ঠান। যেখানে দেশের চাহিদা মিটিয়ে রফতানি করা হচ্ছে।
বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার এএফএম আবদুল্লাহ জানান, রফতানি বাড়ার কারণ হলো দেশেই শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। যারা আগে আমদানি করত, এখন নিজেরাই পণ্য উৎপাদন করছে। বেনাপোল দিয়ে পাটজাত পণ্য, গার্মেন্টস, প্ল্যাস্টিক পণ্যসহ অন্যান্য পণ্যের চাহিদা থাকায় ভারতে এর রফতানি বাড়ছে।
বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিশেনের সিনিয়র সহসভাপতি নূরুজ্জামান জানান, বেনাপোল দিয়ে পাটজাত পণ্য ও গার্মেন্টস পণ্য বেশি রফতানি হয়ে থাকে।
