ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল টার্গেট

প্রকাশিত: ০৪:০৭, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল টার্গেট

মোয়াজ্জেমুল হক ॥ কমপক্ষে ১শ’টির টার্গেট নিয়ে সরকারী ও বেসরকারী পর্যায়ে ১০ অনৈতিক অঞ্চলের একযোগে উদ্বোধন করা হচ্ছে আজ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ রবিবার সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলের কার্যক্রম শুরু করার কাজের উদ্বোধন করবেন। এর মধ্যে সরকারী উদ্যোগে ৪টি এবং বেসরকারী উদ্যোগে ৬টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করার কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। সরকারী উদ্যোগে যেসব অর্থনৈতিক অঞ্চল হচ্ছে- সেগুলো হচ্ছে চট্টগ্রামের মীরসরাইতে ‘মীরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল’, মৌলভীবাজারের শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল, বাগেরহাটের মংলা অর্থনৈতিক অঞ্চল ও কক্সবাজারের টেকনাফে সাবরাং পর্যটন অঞ্চল। আর বেসরকারী উদ্যোগে যে ৬টি অর্থনৈতিক অঞ্চল বাস্তবায়িত হবে সেগুলো হচ্ছেÑ নরসিংদীর পলাশে একে খান গ্রুপের ‘একে খান অর্থনৈতিক অঞ্চল’, মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার চর বাউশিয়াতে আবদুল মোনেম লিমিটেডের ‘আবদুল মোনেম অর্থনৈতিক অঞ্চল’, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও মেঘনা গ্রুপের ‘মেঘনা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অর্থনৈতিক অঞ্চল’ ও ‘মেঘনা অর্থনৈতিক অঞ্চল’, গাজীপুরে বে গ্রুপের ‘বে অর্থনৈতিক অঞ্চল’ এবং নারায়ণগঞ্জে আমান গ্রুপের ‘আমান অর্থনৈতিক অঞ্চল।’ এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে বৃহত্তম হচ্ছে ‘মীরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল’, যা বাস্তবায়িত হচ্ছে সরকারী উদ্যোগে। বাংলাদেশ স্পেশাল ইকোনমিক জোন অথরিটি (বেজা) সূত্রে ইতোমধ্যে জানানো হয়েছে, সরকার অন্তত ১শ’টি ইকোনমিক জোন প্রতিষ্ঠা করার পরিকল্পনা করেছে। যার প্রথম পদক্ষেপের মধ্যে এ ১০টির উদ্বোধন করা হচ্ছে। সূত্রে জানানো হয়, মীরসরাই ইছাখালি চরের ৭ হাজার ৭১৬ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত হবে মীরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল। এতে ১ হাজার ২২২টি শিল্প স্থাপনের প্লট প্রতিষ্ঠা করা হবে। এরই মধ্যে চরে জেগে উঠা ১৫ হাজার একর জমিতে প্রথম অবস্থায় চার মৌজায় ৬ হাজার ৩৯০ দশমিক ৯ হাজার ৬৭০ একর জমির উন্নয়ন কাজ চলছে। এগুলোর মধ্যে তীরের চর এলাকায় ১ হাজার ৩৯০ দশমিক ৪ হাজার ৩১৬ একর, সাধুর চর এলাকায় ১ হাজার ৬৬৪ দশমিক ১ হাজার ৩৯ একর, শিল্প চর এলাকায় ১ হাজার ৮৫২ দশমিক ৫ হাজার ৩৮৫ একর ও মোশাররফ চর এলাকায় ১৫০৪ দশমিক ২৯৩০ একর জমি রয়েছে। এ শিল্প অঞ্চলে কমপক্ষে ১০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বেজা সূত্র জানায়, ইতোপূর্বে সম্পাদিত জাপানী সমীক্ষায় রিপোর্ট হয়েছে মীরসরাই’র অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা হলে তা হবে পোশাক কারখানা, টেক্সটাইল শিল্প, অটোমোবাইল শিল্প, শিপবিল্ডিংসহ বিভিন্ন কারখানা প্রতিষ্ঠার জন্য উপযোগী। প্রসঙ্গত, সরকার পক্ষে ইতোমধ্যে বিভিন্নভাবে জানানো হয়েছে, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী চট্টগ্রামে এক লাখ কোটি টাকারও বেশি উন্নয়ন মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বর্তমান সরকার। এ চট্টগ্রামকে সাংহাই’র আদলে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। আর এ কারণে কর্ণফুলী তলদেশ দিয়ে টার্নেল নির্মাণের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যা ভিত্তিপ্রস্তর আগামী মাসে শুরু করা হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। গত ৩০ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প উদ্বোধনও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে গেছেন। আরও আগে তিনি কয়েক শ’ কোটি টাকার প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। চট্টগ্রামের উন্নয়নের মাধ্যমে সারাদেশের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করার পরিকল্পনা রয়েছে এ সরকারের। এর পাশাপাশি পর্যটক নগরী কক্সবাজারের উন্নয়নকে আইনী ভিত্তিতে দাঁড় করানোর জন্য ইতোমধ্যেই কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন-২০১৬ পাস করা হয়েছে। একটি পরিকল্পিত পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলায় এ আইন পাসের লক্ষ্য বলে সরকারী সূত্রে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। পৃথিবীর বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত নিয়ে গড়ে উঠার কক্সবাজারের সার্বিক উন্নয়ন কর্মকা-কে নিয়মনীতির আওতায় না আনায় যত্রতত্র উন্নয়ন কর্মকা-ের নান্দনিক সৌন্দর্যকে ব্যাহত করেছে। যা উপলব্ধি করায় বর্তমান সরকার কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন প্রস্তাব করে তা পাস করেছে। ভবিষ্যতে যা এ নগরীর জন্য বড় ধরনের ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে বলে বোদ্ধামহল মনে করে।
×